Cancer Risk

পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে আপনারও কি হতে পারে? কাদের ঝুঁকি বেশি, কাদের নয়?

পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেরও তা হতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হয়। মা-বাবা বা খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয় যাঁর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁদের কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক ভাবে ভয় থেকে যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৫ ১৪:৫০
Share:

বংশগত ভাবে ক্যানসারের ঝুঁকি কাদের বেশি? ফাইল চিত্র।

পরিবারের তিন জনকে ক্যানসারে হারিয়েছিলেন। তাই ঝুঁকি নিতে চাননি। জিন পরীক্ষা করতেই জেনেছিলেন, তাঁরও স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর পরেই ম্যাস্টেকটমি করে দু’টি স্তন ও পরে ডিম্বাশয় ও ফ্যালোপিয়ান টিউব বাদ দিয়েছিলেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী অ্যাঞ্জেলিনা জোলি।

Advertisement

পরিবারে ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে পরবর্তী প্রজন্মেরও তা হতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হয়। মা-বাবা বা খুব ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, যাঁর সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, তাঁদের কেউ ক্যানসারে আক্রান্ত হলে স্বাভাবিক ভাবে ভয় থেকে যায়। অনেকে ভাবেন, যে তাঁরাও কোনও না কোনও সময়ে মারণরোগের কবলে পড়তে পারে। তবে এই বিষয়ে বিজ্ঞানের কিছু গবেষণা রয়েছে।

দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ক্যানসার আক্রান্তদের অন্তত ৯-১০ শতাংশের ক্ষেত্রে এই রোগ বংশগত। এই বংশগত ক্যানসারের ক্ষেত্রে জিনের রাসায়নিক বদল (মিউটেশন) প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়ে। আর যাঁদের জিনে সেই ‘পজ়িটিভ ফ্যাক্টর’ থাকে, তাঁদের ঝুঁকি আরও বেশি। তবে সব ক্যানসার বংশগত নয়। কিন্তু কয়েক ধরনের ক্যানসার রয়েছে, যা জিনগত ভাবে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও ছড়াতে পারে।

Advertisement

কোন কোন ক্যানসার জিনগত ভাবে ছড়াতে পারে?

স্তন, জরায়ু, কোলন, অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার, রেটিনোব্লাসটোমা ও মেলানোমা (ত্বকের বিশেষ ধরনের ক্যানসার)-সহ আরও কয়েকটি ক্যানসার বংশগত, এমনটাই জানিয়েছেন ক্যানসারের চিকিৎসক শুভদীপ চক্রবর্তী। ‘ক্যানসার রিসার্চ ইউকে’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, শরীরে ‘বিআরসিএ১’ ও ‘বিআরসিএ২’ জিন সক্রিয় থাকলে, স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আবার পরিবারের খুব কাছের কারও কোলন বা রেক্টাম ক্যানসার হলে, তা-ও জিনগত মিউটেশনের কারণে পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়াতে পারে।

পাকস্থলীর ক্যানসারের ক্ষেত্রেও জিনগত ভাবে তা ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়। বিশেষ করে সিডিএইচ১ জিন সক্রিয় হলে, বিপদ অনেক বেশি।

কোন কোন পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি?

পরিবারের কারও ক্যানসার থাকলেই যে অন্যের হবে, তেমন কিন্তু নয়। আবার আশঙ্কা একেবারে নেই, তেমনও বলা যায় না। একমাত্র জিনগত বিশ্লেষণের মাধ্যমেই তা বোঝা সম্ভব। কিন্তু জিনের বিশ্লেষণ করে ক্যানসারের ঝুঁকি আগাম ধরার মতো তেমন ব্যবস্থা এখনও নেই। জিন টেস্টিং-এর খরচও বেশি। তবে যদি পরিবারে দু’জন বা তিন জনের বেশি কারও ক্যানসারের ইতিহাস থাকে, তা হলে করিয়ে রাখাই শ্রেয়। সেই সঙ্গে জীবনযাপনেও বদল আনা জরুরি।

কিছু রক্ত পরীক্ষাও করিয়ে রাখা জরুরি। যেমন সার্কুলেটিং টিউমার সেল টেস্ট (সিটিসি)করলে বোঝা যাবে টিউমার কোষের বিভাজন শুরু হয়েছে কি না। ব্লাড কেমিস্ট্রি টেস্টে ধরা পড়বে কিডনি, লিভার ও শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ক্যানসার কোষের বিভাজন হচ্ছে কি না। ক্যানসারের প্রোটিন তৈরি হচ্ছে কি না, তা ধরা যাবে ইমিউনোফেনোটাইপিং পরীক্ষায়। লিক্যুইড বায়োপসিও কার্যকর। রক্তের নমুনা নিয়ে এই বায়োপসি করা হয়। বিশেষ রকম মার্কার ব্যবহার করে দেখা হয় ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না। টিউমার মার্কার ব্লাড টেস্টও এই ক্ষেত্রে কার্যকর একটি পরীক্ষা। তবে এই পরীক্ষাগুলি সর্বদাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই করানো উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement