কোষ্ঠকাঠিন্যে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছে খুদে? করিনার পুষ্টিবিদ বলছেন, কোন খাবার খেলে সমাধান হতে পারে। ছবি: আনন্দবাজার ডট কম
ছোট থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে সন্তানের। কষ্ট এতটাই যে সন্তান স্নানঘরে ঢুকতেই চায় না। কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা যেমন বড়দের ভোগায়, তেমনই বাদ যায় না ছোটরাও। কিন্তু এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় কী?
এমতাবস্থায় ছোটদের চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খাওয়াতে হয়। কখনও সেই ওষুধেও দেখা যায় তেমন লাভ হচ্ছে না। তখন নিতে হয় অন্য পন্থা। এমন শিশুদের কষ্ট কমাতে কী করণীয়, সে ব্যাপারেই পরামর্শ দিচ্ছেন অভিনেত্রী করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর। সমাজমাধ্যমেও যথেষ্ট সক্রিয় তিনি। মাঝেমধ্যেই ডায়েট, স্বাস্থ্য, খাওয়া-দাওয়া নিয়ে জরুরি পরামর্শ দেন রুজুতা। তা ছাড়া রুজুতার কথায় গুরুত্ব দেন খোদ বি-টাউনের তারকারাও।
কোন ভুল এড়ানো প্রয়োজন?
অনেক সময় মায়েরা ছোটদের উপর এ বিষয়ে জোর করেন। বকাঝকাও করেন। রুজুতার কথায়, মলত্যাগের বিষয়টি যে শিশুদের কাছে কষ্টকর, তাদের যদি এ নিয়ে বকাবকি করা হয়, বলা হয়, যত ক্ষণ না পেট পরিষ্কার হবে না স্নানঘর থেকে বেরেনো যাবে না, সেটা তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করবেই। পরিস্থিতি এমন হবে, যে কষ্টকর অভিজ্ঞতার কথা মনে করে সে মলত্যাগের জন্য শৌচালয়ে যেতেই চাইবে না।
এই সমস্যার সমাধানে সঠিক খাদ্যাভ্যাসে জোর দেন পুষ্টিবিদেরা। শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকটাই তাদের খাদ্যতালিকার সঙ্গে সম্পর্কিত। পাতে ফাইবারযুক্ত খাবারের অভাব থাকলে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।
রুজুতার পরামর্শ, ঘরে তৈরি ঘি বা খাঁটি ঘি পাতে রাখার। ছোটদের খাবারে সকাল, দুপুর এবং রাতে তা এক চামচ করে দিতে বলছেন তিনি। কারণ হিসাবে পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, এতে পেটের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। যা মলত্যাগের পদ্ধতি সহজ করে দিতে পারে।
নিয়মিত ফল খায় খুদে?
ফলে শুধু অত্যাবশ্যকীয় ভিটামিন বা খনিজ থাকে না, মেলে প্রচুর ফাইবার। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে মরসুমি ফল ছোটদের খাওয়ানো খুব জরুরি। রুজুতা জানাচ্ছেন, জলখাবারে, স্কুল থেকে ফেরার পরে বা বিকেলে খেলে ফেরার পর পছন্দের ফল তাকে দেওয়া যেতে পারে।
কলা: পেট পরিষ্কারের জন্য কলা খুবই ভাল। প্রতিদিন দুপুরে খাবার খাওয়ার পরে কলা খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন করিনার পুষ্টিবিদ। তিনি বলছেন, ‘‘আধখানা হলেও কলা খাওয়াতে হবে সন্তানকে।’’
কোন খাবারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি?
চকোলেট, কুকিজ়, চিপ্স— বেশির ভাগ শিশুরই পছন্দের খাবার। এগুলির জন্য তারা বায়নাও করে। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে হলে এই তিন খাবারে নিয়ন্ত্রণ জরুরি, মনে করেন রুজুতা। তিনি জানাচ্ছেন, এক সপ্তাহে কুকিজ় খেলে চিপ্স দিন পরের সপ্তাহে, চকোলেট আর সেই সপ্তাহে দেওয়া যাবে না। এক সপ্তাহে একটি খাবার পরিমিত খেতে পারবে তারা। স্বাস্থ্যের খেয়াল এ ভাবেই রাখতে হবে।
তবে এর পরেও যেটা ভীষণ জরুরি তা হল, পর্যাপ্ত পরিমাণ জল খাওয়া। শিশুর বয়স অনুযায়ী যতটা জল খাওয়া দরকার, ততটা সে খাচ্ছে কি না, বিষয়টা দেখা জরুরি। জল কম খেলেও কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে।