Eye Care at Home

২০-২০-২০, চোখকে বড় ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে সহজ কৌশল! ৭টি নিয়মেই দৃষ্টিশক্তি উন্নত হবে

দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো ভুল থেকেই চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সেগুলিকে এড়িয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যকর কোন কোন অভ্যাসে ভরসা রাখলে চোখ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫ ১৬:২০
Share:

চোখের যত্ন নেওয়ার সহজ কৌশল। ছবি: সংগৃহীত।

চোখকে অবহেলা করার ভুল করে বসেন অনেকেই। কম বয়সে চোখের দিকে নজর দিলেন না, অথচ বয়স বাড়তেই নানাবিধ রোগ ভিড় করে এল। পরে আফসোস করার চেয়ে কি আগে থেকেই সতর্ক হওয়া ভাল নয়? দৈনন্দিন জীবনের ছোটখাটো ভুল থেকেই চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সেগুলিকে এড়িয়ে গিয়ে স্বাস্থ্যকর কোন কোন অভ্যাসে ভরসা রাখলে চোখ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না?

Advertisement

১. নিয়মিত চোখ পরীক্ষা

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য যেটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা হল নিয়ম করে চোখের পরীক্ষা করানো এবং চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা। যদি আপনার মনে হয়, আপনার চশমার প্রয়োজন, তা হলে একজন চক্ষু চিকিৎসকের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে নেবেন। তিনি এমন কিছু সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণও খুঁজে বার করতে পারেন, যার সম্পর্কে আপনি অবগতই নন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গেলে চোখের চাপ পরীক্ষা করা থেকে শুরু করে নানা রকমের খুঁটিনাটি পরীক্ষা করতে হবে। ফলে চোখের ভিতরে কোনও সমস্যা দানা বাঁধছে কি না, তা বাইরে থেকে আপনি বুঝতে পারবেন না। কেবল চিকিৎসকই বুঝতে পারবেন। তাই চোখ দেখাতে যাওয়াকে অবহেলা করবেন না।

Advertisement

২. অন্যান্য রোগের চিকিৎসা

৪০ অথবা ৫০-এর কোঠায় বয়স? সে ক্ষেত্রে ডায়াবিটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সময় চলে এসেছে। এই দুই রোগই চোখের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন এই দুই রোগের প্রাক্‌-লক্ষণ হিসাবে দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত তৎক্ষণাৎ। ডায়াবিটিস এবং রক্তচাপের উপর নজর রাখলে জানবেন, আপনি আপনার চোখেরও যত্ন নিচ্ছেন। আপনার যে কোনও রোগ, বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগের কথা চোখের চিকিৎসককে জানান। মনে রাখবেন, কী কী ওষুধ রোজ খেতে হয়, সে বিষয়ে চিকিৎসককে বলতে ভুলবেন না।

৩. শুষ্ক চোখের যত্ন

চোখের সুস্থতার জন্য আর্দ্রতার প্রয়োজন। কিন্তু ভারতের মতো দেশে গ্রীষ্ম কালে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে থাকে। শুষ্ক চোখের চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন আই ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন, যা চোখ আর্দ্র করে তুলবে। অনেক সময় বার বার চোখের পলক ফেলে ফেলে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন অনেকে। কিন্তু সে পদ্ধতিতেও যখন লাভ হয় না, আই ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। চোখের ড্রপেও যথেষ্ট আরাম মেলে না অনেকের। যদি দেখেন, চোখ একটানা কড়কড় করছে, চোখে কিছু ঢুকে যাওয়ার মতো অস্বস্তি হচ্ছে, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।

ভারতের মতো দেশে গ্রীষ্ম কালে এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চোখ শুষ্ক হয়ে যেতে থাকে। ছবি: সংগৃহীত।

৪. স্বাস্থ্যকর খাবার

চোখে পর্যাপ্ত পুষ্টি জোগাতে হলে খাদ্যাভ্যাসে বদল আনতে হবে। ফলমূল, শাকসব্জি ইত্যাদি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। এগুলি কোষের ক্ষতি রোধ করতে সাহায্য করতে পারে, দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের ঝুঁকি কমাতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হলে চোখ ভাল থাকে। খাবার পাতে যদি মাছ, চর্বিহীন মাংস, তিসির বীজ, বাদাম, ফল, শাকসবজি, গোটা দানাশস্য, বিন বা মটরশুঁটি,জলপাই তেলের মতো স্বাস্থ্যকর স্নেহপদার্থ ইত্যাদি থাকে, তা হলে চোখের স্বাস্থ্য উন্নত হতে পারে।

৫. ভাল ঘুম

ঘুমের সময়ে চোখের যত্ন নেওয়া সম্ভব। আপনার পক্ষেও। আপনার দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করার জন্য নিরবচ্ছিন্ন ঘুম চোখের আর্দ্রতার চাহিদা মেটায়। চোখে জমে থাকে ধুলো এবং অ্যালার্জেন দূর হয় ঘুমের সময়ই। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমোন, তা হলে চোখ পরিষ্কারের কাজ ঠিক ভাবে না-ও হতে পারে।

স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং টেলিভিশন থেকে নিজের চোখকে একটু বিশ্রাম দিন। ছবি: সংগৃহীত।

৬. সক্রিয় থাকা

সারা দিন শুয়ে বা বসে থাকলে রক্ত সঞ্চালন হয় না। এর ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। আর এ কারণেই চোখ পর্যন্ত ভাল রক্ত সঞ্চালন হয় না এবং চোখে অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। তাই চোখ ভাল রাখতে হলে শরীরকে সক্রিয় রাখা খুব জরুরি। তা ছাড়া নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ডায়াবিটিস এবং উচ্চ-রক্তচাপের সমস্যা দূর হতে পারে। নয়তো এ রোগগুলি চোখে কুপ্রভাব ফেলতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন, বাড়ির বাইরে ব্যায়াম করার সময়ে রোদচশমা পরে থাকলে ক্ষতিকর সূর্যালোক থেকে রক্ষা পাবে চোখ।

৭. স্ক্রিন টাইম কমানো

সম্ভব হলে স্ক্রিন টাইম কমিয়ে দিন, অর্থাৎ স্মার্টফোন, ল্যাপটপ এবং টেলিভিশন থেকে নিজের চোখকে একটু বিশ্রাম দিন। চোখের চারপাশে এমন অনেক পেশি রয়েছে, যা মনোযোগে, নড়াচড়া করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আমরা যখন দূরে কোনও জিনিসের দিকে তাকাই, কেবল তখনই এই পেশিগুলি বিশ্রাম পায়। নয়তো সারা দিন সেই পেশিগুলিকে স্ক্রিনে আবদ্ধ করে রাখলে লেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ২০-২০-২০ নিয়মটি মেনে চলতে পারেন। ধরে নিন, ফোন বা টিভির দিকে একটানা ২০ মিনিট তাকিয়ে রয়েছেন। তার পর ২০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় ধরে ২০ ফুট দূরে তাকিয়ে থাকুন। সব বয়সের মানুষের জন্য এই ব্যায়াম কার্যকরী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement