ম্যালেরিায়ার নতুন টিকা তৈরি করছে আইসিএমআর। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ম্যালেরিয়ার টিকা তৈরির পথে দেশের অন্যতম বড় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র অনুমোদন পেয়ে টিকা বেশ কিছু দেশে এলেও, এ দেশের বাজারে আসেনি। এ বার দেশের জন্য প্রতিষেধক তৈরি করছে আইসিএমআর। সে কাজে সহযোগিতা করছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ম্যালেরিয়া রিসার্চ (এনআইএমআর)।
এর আগেও ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক তৈরি হয়েছিল, তবে তেমন লাভ হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ফলাও করে জানিয়েছিল, ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক এসে গিয়েছে। এ বার মারণ অসুখের প্রকোপ কমে যাবে। আদতে তা হয়নি। প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামকে যেন কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না কোনও প্রতিষেধক। কিন্তু এ বার আরও এক আবিষ্কারের পথে ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। আইসিএমআরের গবেষকেরা দাবি কেরছেন, এমন এক ‘ভ্যাকসিন ক্যানডিডেট’-এর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যা ম্যালেরিয়ার জীবাণুকে সমূলে নাশ করবে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাডফ্যালসিভ্যাক্স’। এ নিয়ে গবেষণা চলছে।
ম্যালেরিয়ার কোপে প্রতি বছর বিশ্বে চার লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। বিশেষ করে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়া এক প্রকার মহামারির চেহারা নিয়েছে। শয়ে শয়ে শিশুমৃত্যু নাড়া দিয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসক ও বিজ্ঞানী মহলকে। ভারতেও এর প্রকোপ কম কিছু নয়। বাংলার জেলায় জেলায় ম্যালেরিয়ার উপদ্রব বাড়ে বর্ষার সময়ে।
কী থেকে হয় ম্যালেরিয়া?
স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশা কামড়ালে তার লালার সঙ্গেই আমাদের শরীরে ঢোকে ম্যালেরিয়ার জীবাণু। ম্যালেরিয়ার বাহক পরজীবী চার রকম— প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স, প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, প্লাসমোডিয়াম ওভিলি এবং প্লাসমোডিয়াম ম্যালেরি। তাদের মধ্যে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরামের আক্রমণেই হয় প্রাণঘাতী ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া। বর্ষাকাল বলে শুধু নয়, ম্যালেরিয়া হানা দিতে পারে যে কোনও সময়েই।
সাধারণত, ম্যালেরিয়ার পরজীবী মশার লালার মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে রক্তস্রোতে বয়ে গিয়ে সোজা পৌঁছয় যকৃতে। সেখানে বংশবিস্তার করে এবং সরাসরি ধাক্কা দেয় লোহিত রক্তকণিকাকে। সেখানেও একটা জীবনচক্র শুরু হয় ম্যালেরিয়ার জীবাণুর। তারা দ্রুত সংখ্যায় বাড়তে থাকে। একটা সময় লোহিত রক্তকণিকার দেওয়াল ফাটিয়ে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকদের দাবি, নতুন টিকা জীবাণুর জীবনচক্রের এই গোটা প্রক্রিয়াটাই ধ্বংস করতে পারবে। ফলে রোগের প্রকোপ অনেক কমে যাবে।