Work Life Balance

‘৮-৮-৮ রুল’ কী? পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবনে সমতা বজায় রাখতে তা কী ভাবে কাজ করে?

গোটা দিন হাতে থাকলেও তার মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেন না। দিনের শেষে বিছানায় শুতে গেলে মনে পড়ে, কিছুই করা হচ্ছে না। ধারবাকির মতো ‘কাজ বাকি’ রেখেই পরের দিনটা শুরু হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৩
Share:

জীবনে ‘৮-৮-৮ রুল’-এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি? ছবি: সংগৃহীত।

গোটা একটি দিন, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টা!

Advertisement

সময়টা কম নয়। কিন্তু সকলে তা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারেন না। তার নেপথ্যে নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। যেমন অনেকে দিনটাই শুরু করেন অনেকটা দেরিতে। ফলে যে সময়ে যে কাজ করার, এক এক করে সেগুলিও পিছোতে থাকে। আবার, এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কাজের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ। তাঁদের জীবনে খাওয়া-ঘুম আর কাজ ছাড়া কিছুর অস্তিত্ব নেই। বিশ্রাম নেওয়ার সময়টুকুও তাঁরা কাজকেই উৎসর্গ করে বসেন। ফলে পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবনে সমতার অভাব দেখা দেয়।

গোটা দিন হাতে থাকলেও তার মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেন না। দিনের শেষে বিছানায় শুতে গেলে মনে পড়ে, কিছুই করা হচ্ছে না। ধারবাকির মতো ‘কাজ বাকি’ রেখেই পরের দিনটা শুরু হয়। ছোটদের ‘ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স’ নিয়ে জ্ঞান দিলেও নিজে তা কোনও ভাবেই কাজে লাগাতে পারেন না। তাই বহু সংস্থাই কর্মীদের ৮-৮-৮ রুল মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।

Advertisement

৮-৮-৮ রুল কী?

নতুন করে এই নিয়ম নিয়ে সমাজমাধ্যমে চর্চা শুরু হলেও ‘৮-৮-৮’ রুলের উৎপত্তি হয়েছিল উনিশ শতকে। পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবনে সমতা বজায় রাখতে ইংল্যান্ডের ওয়েল্‌সের শিল্পপতি এবং সমাজ সংস্কারক রবার্ট ওয়েন প্রথম এই ধারণাটি প্রচলন করেন। পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবনকে সুষ্ঠু ভাবে চালনা করেত গেলে পর্যাপ্ত ঘুম এবং শখ-শৌখিনতা মেটানোরও প্রয়োজন রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই মূলত গোটা দিন, অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টাকে সমান তিন ভাগে করে নিয়েছিলেন রবার্ট। ৮ ঘণ্টা রেখেছিলেন কাজের জন্য, ৮ ঘণ্টা ঘুমের জন্য এবং বাকি ৮ ঘণ্টা নিজের শখ, পছন্দের কাজে নিয়োজিত করার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। আবার, কাজের সময়টাকে যদি পরবর্তী ৮ ঘণ্টায় বেঁধে ফেলা যায়, তা হলে হাতে আরও ৮ ঘণ্টা বাকি থাকে। সেই সময়ে নিজের পছন্দমতো বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা-সিরিজ় দেখার মতো অনেক কাজই করে ফেলা যেতে পারে। আবার, কাজ সামলে পুরনো অভ্যাসগুলোও ঝালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো, শরীরচর্চা করাও কিন্তু এই শেষের ৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রবেশ করবে।

এই নিয়ম মানলে কী লাভ হবে?

১) শারীরিক এবং মানসিক উন্নতি সাধন:

মস্তিষ্ককে সঠিক ভাবে চালনা করতে গেলে ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোলজিকাল ডিসঅর্ডার অ্যান্ড স্ট্রোক’-এর দেওয়া তথ্য বলছে, প্রাপ্তবয়স্কের অন্ততপক্ষে ৭-৯ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ‘৮-৮-৮ রুল’ মেনে চললে শরীর এবং মনের উপর ততটা চাপ পড়ে না।

২) উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি:

কাজ সকলেই করেন। কিন্তু সকলের উৎপাদনশীলতা সমান নয়। কাজের চাপ সামাল দিতে না পারলে একাগ্রতা নষ্ট হয়। ক্লান্তির পরিমাণ বাড়তে থাকে। তার প্রভাব গিয়ে পড়ে কাজে। তাই উৎপাদশীলতা বৃদ্ধি করতে হলে ‘৮-৮-৮ রুল’ মেনে চলা ভাল।

কোন কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন?

সব প্রতিষ্ঠান এই নিয়ম মেনে কাজ করে না। সকলের জীবন একই রকম ছন্দে বাঁধা পড়ে না। অনেকেই আপৎকালীন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। ফলে তাঁদের পক্ষে কখনওই ঘড়ি ধরে ‘৮-৮-৮ রুল’ মেনে চলা সম্ভব নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement