ওষুধের গুণমানের যথাযথ পরীক্ষা হবে, আসছে ট্র্যাকার। ফাইল চিত্র।
কাশির সিরাপ বাজারে ছাড়ার আগে সেটির গুণমান পরীক্ষা করা হচ্ছে কি না, তার উপর নজর রাখতে হবে। বিতর্কের মাঝে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ামক সংস্থা। ‘ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া’ (ডিসিজিআই) রাজীব সিংহ রঘুবংশী জানিয়েছেন, কাশির সিরাপে কী কী উপকরণ রয়েছে, অতিরিক্ত কী মেশানো হচ্ছে, তা ধরা পড়বে ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেমে। তার জন্য আসছে ‘ডিজিটাল ট্র্যাকার’। ওষুধের গুণমান পুঙ্খানুপুঙ্খ যাচাইয়ের পরেই সেটি বাজারে ছাড়া হবে।
কাশির সিরাপে থাকা ‘বিষাক্ত’ রাসায়নিকের জেরেই মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে শিশুমৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় যে কাশির ওষুধ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়, তার নমুনা পরীক্ষা করে কেন্দ্র জানিয়েছে এতে কোনও বিষাক্ত পদার্থ নেই। তবে দেখা গিয়েছে, কিছু ব্র্যান্ডের কাশির ওষুধে ডাইইথিলিন গ্লাইকল (ডিইজি) ও ইথিলিন গ্লাইকল (ইজি) নামে দু’ধরনের রাসায়নিক রয়েছে। এই দুই রাসায়নিক শরীরে ঢুকলে ভয়ানক ক্ষতি করতে পারে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা। দেখা গিয়েছে, কাশির ওষুধে এমন কিছু ‘সলভেন্ট’ মেশানো হয়, যা শরীরের জন্য বিষ। এই সলভেন্টগুলির মধ্যে রয়েছে— গ্লিসারিন, পলিপ্রপিলিন গ্লাইকল, সরবিটল, মাল্টিটল, ইথাইল অ্যালকোহল, পলিইথিলিন গ্লাইকল, হাইড্রোজেনেটেড স্টার্চ হাইড্রোলাইসেট, পলিসরবেট ইত্যাদি। এই ধরনের উপাদান সিরাপে রয়েছে কি না, তা খুঁটিয়ে যাচাই করা হবে ট্র্যাকারে।
অনলাইন ন্যাশনাল ড্রাগ লাইসেন্সিং সিস্টেম পোর্টালের মাধ্যমে এই ডিজিটাল নজরদারি চলবে। সেখানে আরও অনেকগুলি বিষয় দেখা হবে, যেমন—১) ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার ম্যানুফ্যাকচারিং লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন পরীক্ষা করে দেখা হবে।
২) প্রত্যেক প্রস্তুতকারককে ওষুধ তৈরির কাঁচামাল এবং তৈরি হওয়া ওষুধের প্রত্যেক ব্যাচ পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট দিতে হবে।
৩) ওষুধে কী ধরনের ‘সলভেন্ট’ মেশানো হচ্ছে, তার নাম ও বৈশিষ্ট্যের খুঁটিনাটি দেখা হবে।
৪) রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ড্রাগ কন্ট্রোলারদের দেখতে হবে প্রতিটি ব্যাচের ওষুধে কী কী উপকরণ রয়েছে, ভেজাল মেশানো আছে কি না। গুণমানের যথাযথ যাচাই হচ্ছে কি না, তা নিরীক্ষা করে তবেই ওষুধ বাজারে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে।