একই তেলে বার বার ব্যবহার করে রান্না করলে বিপদ, নির্দেশিকা এফএসএসএআইয়ের। ছবি: ফ্রিপিক।
মাছ ভেজে অবশিষ্ট তেলটা তুলে রাখেন। পর দিন আবার সেই তেলেই মাছ ভাজেন। এমন করেই বেঁচে যাওয়া তেল রোজই ব্যবহার করেন অনেকে। ভাজাভুজির পরে যে তেলটুকু বেঁচে যায়, তাই দিয়েই বারংবার রান্না করার অভ্যাস কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, সে নিয়ে সতর্ক করেছে খাদ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)। রাস্তার দোকানগুলিতে খরচ বাঁচাতে পোড়া তেলেই দিনের পর দিন রান্না চলে। যে দোকানগুলি থেকে তেলেভাজা, চপ বা শিঙাড়া কিনে খাচ্ছেন, সেখানেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছে কি না, সে নিয়ে এফএসএসএআইকে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে ‘ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন’ (এনএইচআরসি)।
খাদ্যে ক্ষতিকর বস্তু বা ভেজাল আটকাতে কড়া আইন থাকলেও তা বলবৎ করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে অসংখ্য ছিদ্র। কেন্দ্রীয় ‘ফুড সেফটি স্ট্যান্ডার্ডস অ্যাক্ট ২০০৬’ এবং ‘ফুড সেফটি রুল্স অ্যান্ড রেগুলেশন্স ২০১১’ অনুযায়ী খাবারে নিম্নমানের উপাদান বা ভেজাল দ্রব্য রয়েছে কি না, পোড়া তেলে রান্না হচ্ছে কি না, কিংবা ক্ষতিকর রং, ধাতু, ইত্যাদি মেশানো রয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব স্বাস্থ্য দফতরের আওতাধীন খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের। এনএইচআরসি জানিয়েছে, রাস্তার অনেক ছোটখাটো দোকানে পোড়া তেলেই দিনের পর দিন রান্না হচ্ছে। সেই সব খাবার কিনে তারিয়ে তারিয়ে খাচ্ছেনও লোকজন। সুরক্ষিবিধিও মানা হচ্ছে না সে ভাবে। এই বিষয়ে কঠোর ভাবে নির্দেশিকা জারি করার কথাও বলা হয়েছে।
রাস্তার দোকান বলে শুধু নয়, তেল পুনর্ব্যবহার করে রান্নার অভ্যাস বাড়িতেও রয়েছে। পাঁপড় ভেজে যে তেলটা বেঁচে গেল তাই দিয়েই আবার পরদিন ভাজাভুজি করা হয়। মাছ ভাজার পোড়া, কালো তেল তো ব্যবহার হয়ই। খাদ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানাচ্ছে, একই তেল উচ্চতাপে বার বার ফোটালে তার উপাদানগুলি ভেঙে গিয়ে ট্রান্স ফ্যাট তৈরি করে। এই ট্রান্স ফ্যাট শরীরে ঢুকে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি করে যা উচ্চ রক্তচাপ ও ধমনীতে চর্বি জমার মতো (এথেরোস্ক্লেরোসিস) সমস্যা তৈরি করে। এর থেকে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে। ত ছাড়া তেল বেশি পুড়লে তাতে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক তৈরি হয়। এই রাসায়নিক দীর্ঘ দিন ধরে রক্তে জমলে তা ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজন ঘটাতে শুরু করবে। তাই কোন তেলে রান্না করছেন ও কী পরিমাণে এবং কী ভাবে ব্যবহার করছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।