খুব চেনা খাবারেই মেলে ভরপুর আয়রন! ছবি : সংগৃহীত।
শ্বাস নিলে শরীরে অক্সিজেন যায়। কিন্তু সেই অক্সিজেন শরীরের প্রতিটি কোষে কোষে পৌঁছে যায় কী করে। সেই কাজটি করে লোহিত রক্ত কণিকায় থাকা একটি প্রোটিন। যার নাম হিমোগ্লোবিন। এই হিমোগ্লোবিনই ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে শরীরের প্রতিটি কোষে পৌঁছে দেয়। আর হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে আয়রন।
আয়রন তাই শরীরকে সচল রাখার জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টি উপাদান। যা পেশিকে অক্সিজেন পৌঁছে দিয়ে ভাল রাখে। ়ডিএনএ তৈরিতে কাজে লাগে আবার কিছু কিছু হরমোন তৈরি করতেও কাজে লাগে। যা শরীরে কোষের পাশাপাশি ত্বক, চুল, নখের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্যও জরুরি। তেমনই বলছেন পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর। তিনি বলছেন, ‘‘আমাদের খুব চেনা কিছু খাবারেই আয়রন পাওয়া যায় যথেষ্ট পরিমাণে।’’ সেই সব খাবারের একটি তালিকাও দিয়েছেন তিনি।
কোন কোন খাবারে আয়রন পাওয়া যায়?
চেনা আর ঘরোয়া খাবারেই আয়রন থাকে প্রচুর পরিমাণে। সেই সব খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যথেষ্ট পরিমাণে রাখার চেষ্টা করলে শরীর ভাল থাকবে।
১। ডাল: ডাল হল আয়রনের সবচেয়ে ভাল উৎস। ভারতীয়দের কাছে ডালভাত নিত্যদিনের খাবার। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের ডাল রাখতে পারলে শরীর আয়রনের জোগান পাবে। রাজমা, কাবলি ছোলাতেও ওই পুষ্টি পাওয়া যায়।
২। সয়বিন: সয়বিন বা সয়বিনের বড়ি, সয়বিনের দুধ বা সয়বিনের দুধ থেকে তৈরি টোফু সবই আয়রন সমৃদ্ধ।
৩। কুমড়োর বীজ: এই খাবারটি স্বাস্থ্য সচেতনতার দৌলতে এখন আর অচেনা নয়। অনেকেই নিয়মিত কুমড়োর বীজ খেয়ে থাকেন। এক কাপ কুমড়োর বীজে রয়েছে ১১. ৪ মিলিগ্রাম আয়রন।
৪। তিল: তিল প্রায় সব রান্নাঘরেই অল্পবিস্তর পাওয়া যায়। অনেকে দৈনন্দিন রান্নায় স্বাদ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহারও করেন তিল। এক কাপ তিলে ২১ মিলিগ্রাম আয়রন থাকে।
৫। শাকপাতা: পালং শাক তো বটেই বাংলার রান্নাঘরে আরও অনেকরকম শাকপাতা রান্না করে খাওয়ার চল রয়েছে। পুঁই, নটে, কলমি, লাউ, কুমড়োর শাকও খাওয়া হয়। এই সমস্ত শাকপাতাতেই রয়েছে ভরপুর আয়রন।
৬। চিঁড়ে: চিঁড়ে আয়রনে ভরপুর একটি খাবার। চিঁড়ে নানা ভাবে খাওয়া হয়। কেউ চিঁড়ে দই খান তো কেউ খান চিঁড়ের পোলাও। হিসাব বলছে প্রতি ১০০ গ্রাম চিঁড়েতে রয়েছে ২০ মিলিগ্রাম আয়রন। যা দৈনন্দিন প্রয়োজনের প্রায় ২০ শতাংশ।
৭। থোড়-মোচা: থোড় এবং মোচা দুই একই গাছের কান্ড এবং ফুল। দু’টিই বাঙালি রান্নাঘরে বহুল ব্যবহৃত। আর সুস্বাদু এই দু’টি খাবারেই রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন।
৮। ডুমুুর: ডুমুর খাওয়া বড় একটা হয় না শহরাঞ্চলে। তবে গ্রামের দিকে এখনও বাজারে টাটকা ডুমুর মেলে। এই ডুমুরও শরীরে আয়রন বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য কাজে লাগতে পারে।
৯। কুলেখাড়া: কুলেখাড়া পাতাতেও আয়রন থাকে অনেকটাই প্রতি ১০০ গ্রাম কুলেখাড়া পাতায় ৭ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায়। রক্তাল্পতার রোগীকে তাই অনেক সময় কুলেখাড়ার রস খাওয়ার নিদান দেওয়া হয়।