ছবি : সংগৃহীত।
শীত হোক বা গ্রীষ্ম কিংবা বর্যা— মরসুম যেমনই হোক, নিরামিষ খাওয়ার কথা উঠলে চোখ বন্ধ করে প্রথম যে সব্জির নাম মাথায় আসে তা হল ফুলকপি। তার কারণ, প্রথমত এটি মোটামুটি সর্বজনগ্রাহ্য। আলুর পরে এই একটি সব্জি খেতে খুব বেশি মানুষ আপত্তি করেন না। আর দ্বিতীয়ত এটি সারাবছর বাজারে পাওয়াও যায়। তাই সবকালেই নিরামিষের নিরাপদ বিকল্প হিসাবে এটি বাজারের ঝুরিতে কিংবা রেফ্রিজারেটরের ঠান্ডা বাক্সে রাখা থাকে। আর এই ফুলকপিই শরীরকে ক্যানসার রোধেও সাহায্য করতে পারে।
জীবনযাত্রার বদল এবং আরও নানা জানা-অজানা কারণে যখন ক্যানসারের নাম প্রত্যহ আশপাশের মানুষের কাছ থেকে কিংবা নিজের বাড়িতেও শুনতে পাচ্ছেন, তখন এই সমস্ত খাবারের গুরুত্ব প্রতি নিয়ত বাড়ছে। গবেষণা বলছে ক্যানসার প্রতিরোধে ক্রুসিফেরাস ভেজিটেবলস সহায়ক। আর সেই ক্রুসিফেরাস সব্জির তালিকায় ব্রোকোলি, ব্রাসেল স্প্রাউট, টার্নিপ, বাঁধাকপির মতো আছে ফুলকপিও।
গবেষণা বলছে, এই সমস্ত ক্রুসিফেরাস সব্জিতে রয়েছে গ্লুকোসিনোলেট। যা শরীরকে ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। আর প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপিতে এই গ্লুকোসিনোলেট মিলতে পারে ৯৪.৫ মিলিগ্রাম পর্যন্ত। যা ব্রোকোলির থেকে মাত্রায় কম হলেও খুব কম নয়। তা ছাড়া পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ফুলকপিতে রয়েছে এমন কিছু পুষ্টিগুণ, যা শরীরে ক্যানসারের কোষকে বাড়তে দেয় না।
কী ভাবে ফুলকপি ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে?
১। ক্যানসারের কোষ নষ্ট করে
শ্রেয়া বলছেন, ‘‘ফুলকপিতে রয়েছে, ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ়ের মতো উপকারী উপাদান। এগুলি ক্যানসারের কোষকে নষ্ট করতে সাহায্য করে। ’’ আমেরিকার ফ্লোরিডার অ্যাকারম্যান ক্যানসার সেন্টারের গবেষণাও বলছে, ফুলকপির ক্যানসারের কোষকে নষ্ট করার ক্ষমতা আছে।
২। অন্ত্রের ক্যানসার রোধে
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে, বিশ্বে যতরকম ক্যানসারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তার মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ কারণ হল অন্ত্রের ক্যানসার। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, ফুলকপি অন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। কারণ এতে রয়েছে ফাইবার। যা অন্ত্রকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। তবে বিভিন্ন গবেষণায় এ-ও বলা হয়েছে যে ফুলকপির মতো ক্রুসিফেরাস সব্জি পাকস্থলি, লিভার, কিডনি এবং ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়ক।
৩। কোষের বৃদ্ধি রোধ করে
ক্যানসারের কোষ দ্রুত ছড়াতে পারে শরীরে। ফুলকপিতে থাকা বিভিন্ন ধরনের সালফার ক্যানসারের কোষের ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে পারে বলে জানাচ্ছেন শ্রেয়া। বিশেষ করে আইসোথিওসায়ানেট নামের সালফোরাফেন এ ব্যাপারে কার্যকরী।
৪। প্রদাহ কমাতে সহায়ক
ক্যানসারের একটি বড় কারণ হল শরীরে বাড়তি প্রদাহ। ফুলকপিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরে প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। এ ছাড়া এই সব্জিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালসের হাত থেকেও মুক্ত রাখতে সাহায্য করে। যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক।