প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
সম্প্রতি টেক্সাসের একজন মহিলা জলে মুখ ধুয়েছিলেন। তার পর সেই জলে তিনি নাসারন্ধ্র পরিষ্কার করেন। কয়েক দিন পরে হঠাৎ করেই তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। মাথাব্যথা এবং মাথাঘোরা শুরু হয়। সাত দিনের মধ্যে হাসপাতালে ওই মহিলা প্রয়াত হন। বিষয়টা নিয়ে শুরু হয় চর্চা।
চিকিৎসকেরা জানান, তিনি ‘প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনকেফেলাইটিস’ নামক এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। নেপথ্যে রয়েছে ‘নিগ্লেরিয়া ফোলেরি’ নামক একটি অ্যামিবা। সারা বিশ্বের খোলা জলে এই অ্যামিবাটি বসবাস করে। মূলত নাক এবং মুখ দিয়ে এই অ্যামিবা দেহে প্রবেশ করে। তার পর অল্প দিনের মধ্যেই মস্তিষ্কের অলফ্যাক্টরি নার্ভে আক্রমণ করে সংক্রমণ তৈরি করে। বলা যেতে পারে, ‘কুরে কুরে’ মস্তিষ্কের কোষ খেয়ে নেয় সে। তার জন্যই নিগ্লেরিয়া ফোলেরির অন্য নাম ‘ব্রেন ইটিং অ্যামিবা’।
কী ভাবে সংক্রমণ
সাধারণত পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটার সময়ে নিগ্লেরিয়া ফোলেরি নাকের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করতে পারে। এ ছাড়াও সংক্রমিত জল থেকেও এই অ্যামিবা আক্রমণ করতে পারে। সূত্রের দাবি, বৃষ্টির জলেও অ্যামিবাটি বেঁচে থাকতে পারে।
কী কী উপসর্গ
নিগ্লেরিয়া ফোলেরি দেহে প্রবেশ করলে জ্বর, মাথাঘোরা, বমি ভাব শুরু হয়। সময়ের সঙ্গে ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, ঝাপসা দৃষ্টিশক্তির মতো লক্ষণ প্রকট হয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু না হলে ব্যক্তি কোমায় চলে যেতে পারেন। সাধারণত ৫ দিনের মধ্যে ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে।
মৃত্যুর হার
এখনও পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুর হার বেশি। সমীক্ষা বলছে, ১৯৬২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় ১৬৪ জন নিগ্লেরিয়া ফোলেরি দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, যাঁদের মধ্যে মাত্র ৪ জন জীবিত রয়েছেন।
সাবধানতা
বাড়ির বাইরে মুখ ধোয়ার ক্ষেত্রে সব সময় পরিষ্কার জল ব্যবহার করা উচিত। সুযোগ হলে সেই জল ফুটিয়ে নেওয়া যেতে পারে। বর্ষার সময়ে খোলা জলে সাঁতার কাটা এড়িয়ে যাওয়া উচিত। জলে নামলেও মাথা ডোবানো উচিত নয়।