Tapeworm infection

ভারী বর্ষায় ফিতাকৃমির সংক্রমণ ঘটছে মস্তিষ্কে! মুম্বইয়ে স্নায়ুর বিরল রোগে আক্রান্ত বহু

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর (সিডিসি) তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভারতের নানা জায়গায় বর্ষার সময়ে এমন ফিতাকৃমির সংক্রমণ ঘটে। যে রোগ এখন ছড়িয়েছে, তার নাম ‘নিউরোসিস্টিসারকোসিস’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৫:৩৯
Share:

মস্তিষ্কে ঢুকছে ফিতাকৃমি, কী ভাবে সাবধান হবেন? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

প্রবল খিঁচুনিতে মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন রোগী। কখনও অস্বাভাবিক আচরণও করছেন। আবার কারও দেখা দিচ্ছে মৃগী রোগের উপসর্গ। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, মস্তিষ্কের কোষে ফিতাকৃমির লার্ভা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা নষ্ট করছে মস্তিষ্কের কোষ। ক্ষয় হচ্ছে স্নায়ুর। ভারী বর্ষায় মুম্বইয়ের নানা জায়গায় এমন বিরল স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। মস্তিষ্কে ফিতাকৃমির সংক্রমণ থেকেই এমন রোগ ছড়াচ্ছে বলে দাবি।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’-এর (সিডিসি) তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভারতের নানা জায়গায় বর্ষার সময়ে এমন ফিতাকৃমির সংক্রমণ ঘটে। যে রোগ এখন ছড়িয়েছে তার নাম ‘নিউরোসিস্টিসারকোসিস’। এটি মূলত পরজীবীঘটিত রোগ। দূষিত জল, খাবার থেকে ফিতাকৃমির ডিম প্রবেশ করে শরীরে। সেই ডিম শরীর থেকে পুষ্টি নিয়ে অন্ত্রে বেড়ে ওঠে। তার পর ফেটে গিয়ে লার্ভা বার হয়, যা রক্তপ্রবাহে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছোয় এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষে আশ্রয় নেয়। মস্তিষ্কের কোষ থেকেই এরা পুষ্টি সংগ্রহ করে। ফলে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষয়ে যেতে শুরু করে, ক্ষতি হয় স্নায়ুর। মস্তিষ্কে সিস্ট তৈরি হয়, যার জেরে রোগীর প্রবল খিঁচুনি শুরু হয়, ঘন ঘন বমি হতে থাকে, বদলে যায় মেজাজ। মস্তিষ্কে প্রদাহ বাড়লে তার থেকে ব্রেন-স্ট্রোকও হতে পারে।

সিডিসি জানাচ্ছে, মুম্বইয়ের নানা জায়গায় ভারী বর্ষার কারণে জল জমছে। সেখানে পশুপাখির মলে ফিতাকৃমির উপদ্রব বাড়ছে। অপরিষ্কার জায়গায় দূষিত জল, আধসিদ্ধ খাবার, আধকাঁচা মাংস থেকে এই পরজীবীর সংক্রমণ দ্রুত ঘটে। তা ছাড়া রাস্তায় বিক্রি হওয়া কাটা ফল, সব্জি বা শরবত-লস্যি থেকেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। রাস্তায় যে সব খাবার বিক্রি হয়, সেখানে অনেক সময়েই পরিচ্ছন্নতার বিধি মানা হয় না। জলও পরিশুদ্ধ নয়। ফলে সংক্রমণ ঘটে অনায়াসেই। একবার যদি খাবার বা জলের মাধ্যমে ফিতাকৃমির ডিম ঢুকে যায় শরীরে, তা হলে তার বংশবৃদ্ধি ঘটবে দ্রুত। মস্তিষ্কে খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়বে ফিতাকৃমির লার্ভা এবং এর থেকে জটিল স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে।

Advertisement

এমআরআই ও সিটি স্ক্যানে রোগ চিহ্নিত করা সম্ভব। তবে চিকিৎসকেরা এই বর্ষার সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারই পরামর্শ দিচ্ছেন। সব্জি, মাছ ও মাংস ভাল করে পরিষ্কার করে উচ্চতাপে রান্না করে খেতে হবে। এই সময়ে জল ফুটিয়ে খাওয়াই ভাল। রাস্তায় বিক্রি হওয়া কোনও রকম খাবার খাওয়া চলবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement