প্রোটিন খেয়ে ওজন কমাতে চান? কোনও ভুল হচ্ছে কি? ছবি: সংগৃহীত।
মেদ ঝরাতে হলে পাতে রাখতে হবে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দৈনন্দিন খাবারে জুড়তে হবে প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। থাকতে হবে ভিটামিন এবং খনিজ, বলেন পুষ্টিবিদেরা।
কিনোয়া, ডিম, মাংস, বাদামের মাখন, বিন জাতীয় ডাল— সবই কিন্তু প্রোটিনে ভরপুর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকায় পড়ে। এই সব খেলেই কি ওজন ঝরবে?
আমেরিকান পুষ্টিবিদ জাস্টিন গিচাবা পুষ্টিবিদ্যা নিয়ে কাজ করেন। তিনি একজন প্রশিক্ষকও। সমাজমাধ্যমে নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতালব্ধ ফলাফল প্রকাশ করেন তিনি। জাস্টিন বলছেন, প্রোটিন সমৃদ্ধ ৫ খাবার কিন্তু অজান্তেই পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিতে পারে। মেদ গলানোর বদলে কখনও কখনও তা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। কোন কোন খাবার রয়েছে তালিকায়?
চিনেবাদামের মাখন: প্রোটিনে ভরপুর, রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। অনেকেই বাদামের মাখন টোস্টে মাখিয়ে খান বা স্মুদিতে এটি ব্যবহার করেন। পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, বাদামের মাখনে ক্যালোরি যথেষ্ট এবং ফ্যাটও মেলে এতে। ফলে নিয়মিত এবং বেশি করে খেলে, তা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
বিন: রাজমা, মুগ, মুসুর-সহ বিভিন্ন ডাল বা বিন জাতীয় খাবারে প্রোটিন যেমন মেলে, তেমনই পাওয়া যায় কার্বোহাইড্রেট। ১০০ গ্রাম রাজমায় ১২৭ কিলোক্যালোরি মেলে। এতে প্রোটিন পাওয়া যায় ৮.৭ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২২.৮ গ্রাম। ফলে প্রোটিনের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি যথেষ্ট পরিমাণে কার্বোহাইড্রেটও যায় শরীরে। সে কারণে, নিয়ম মেনে খেতে না পারলে, ডাল জাতীয় খাবারও ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে।
কিনোয়া: সুপারফুড বলে পরিচিত কিনোয়া খাচ্ছেন অনেকেই। বিশেষত স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের অনেকেই খাদ্যতালিকায় কিনোয়া রাখেন। জাস্টিনের কথায়, ‘‘প্রোটিন খাবারের তালিকায় কেন এটা ফেলা হয়, বুঝতে পারি না। এতে খুব বেশি প্রোটন কিন্তু মেলে না। তবে কার্বোহাইড্রেট থাকে অনেক।’’
বাদাম: কাঠবাদাম, আখরোট, চিনেবাদাম— যে কোনও বাদামে প্রোটিন যেমন প্রচুর মেলে, তেমনই থাকে ফ্যাটও। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এবং ফ্যাট— একসঙ্গে জুড়লে ক্যালোরির হিসেবও বৃদ্ধি পায়। ফলে ওজন কমানোর জন্য এই ধরনের খাবারের উপর পুরোপুরি ভরসা করলে সমস্যা হতে পারে।
গ্র্যানোলা: রোল ওট্স, বাদাম, বীজ, মধু মিশ্রিত গ্র্যানোলা পুষ্টিকর খাবারের তালিকাতেই পড়ে। ওজন ঝরানোর জন্য দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় গ্র্যানোলাও বেছে নেন অনেকেই। জাস্টিন বলছেন, নিঃসন্দেহে এই খাবার প্রোটিনে ভরপুর। তবে তার সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটও যুক্ত হয় যথেষ্ট পরিমাণে।
জাস্টিন জানাচ্ছেন, নিয়মিত এই পাঁচ খাবার খেয়ে যদি কেউ ওজন কমানোর চেষ্টা করেন, তা হলে তা আদৌ ফলপ্রসূ হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়। তবে এর বাইরেও অনেক খাবার আছে, যাতে ফ্যাট এবং ক্যালোরি কম। প্রোটিন বেশি।
জাস্টিন না বললেও, অন্য পুষ্টিবিদেরা বলেন, টোফু, ফ্যাট ছাড়া মুরগির মাংস, মাছ— এই ধরনের খাবারে যথেষ্ট প্রোটিন মেলে। এগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভাল। একই সঙ্গে পুষ্টিবিদেরা মনে করান, ওজন কমাতে গেলে ক্যালোরির হিসেবনিকেশ জরুরি। পুষ্টিকর খাবারও যথেচ্ছ পরিমাণে খাওয়া চলে না। দৈনন্দিন যতটা ক্যালোরি দরকার, তার চেয়ে কম ক্যালোরি শরীরে গেলে বা বাড়তি ক্যালোরি শরীরচর্চা করে ঝরিয়ে ফেললেও ওজন কমানো যায়।