নিয়মিত জিমে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অধরা থাকতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশ এখন ফিটনেস সচেতন। সময়ের সঙ্গে চারপাশে ব্যাঙের ছাতার মতো অত্যাধুনিক জিমের সংখ্যাও বাড়ছে। অনেকেই নিয়মিত জিমে যাচ্ছেন। কিন্তু আশানুরূপ ফল অধরাই রয়ে যাচ্ছে। নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণ। কিন্তু কয়েকটি লক্ষণ খেয়াল করলে বোঝা সম্ভব যে, নিয়মিত শরীরচর্চার পদ্ধতিতেও পরিবর্তন প্রয়োজন।
১) একঘেয়েমি: নিয়ম মেনে প্রতি দিন জিমে যাওয়া অনেক সময়েই অভ্যাসে পরিণত হয়। কিন্তু সেখানে উন্নতির দিকটি ক্রমশ কমতে থাকে। নিয়মিত একই ধরনের ব্যয়াম থেকেও একঘেয়েমি তৈরি হতে পারে।
কী করণীয়: ব্যায়ামের ক্ষেত্রে একই ‘পুশ-পুল-লেগ’ (পুশ: শরীরের দিক থেকে বাইরের দিকে মুভমেন্ট, পুল: শরীরের দিকে মুভমেন্ট, লেগ: কোমরের নীচের অংশের ব্যায়াম) ঘরানার রুটিন থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। পরিবর্তে কার্ডিয়ো করা যেতে পারে। শরীরে নমনীয়তা বৃদ্ধি করতেও অন্য ধরনের ব্যয়াম করা যেতে পারে।
২) প্রশিক্ষকের ভূমিকা: অনেক সময়েই ওজন ঝরানো, বা পেশির ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য ক্লায়েন্টের জন্য বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন প্রশিক্ষক। ফলে লক্ষ্যমাত্রাকে ধাওয়া করতে গিয়েও অনেকের মধ্যে একঘয়েমি চলে আসতে পারে।
কী করণীয়: নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি, প্রশিক্ষকের পরামর্শ নিয়ে নতুন নতুন ব্যয়াম শেখা যায়। ধরা যাক, চার্টে ওজন-সহ স্কোয়াট ছিল না, কিন্তু তেমন কিছু শিখলে জিমের প্রতি আগ্রহ অটুট থাকবে।
৩) নিজের ক্ষমতা: জিমে সব সময়ই নিজের শারীরিক ক্ষমতা বুঝে পদক্ষেপ করা উচিত। পাশের জন ১০০ কেজি ওজন-সহ শরীরচর্চা করছেন মানে, অন্য কেউ সেটা না-ও করতে পারেন। পাশাপাশি, প্রশিক্ষকেরাও অনেক সময় গতি বাড়ানোর নিদান দিয়ে থাকেন। তার ফলেও সমস্যা হতে পারে।
কী করণীয়: এ রকম ক্ষেত্রে খোলা মনে প্রশিক্ষকের সঙ্গে কথা বলা উচিত। শরীরের কোনও সমস্যা বা পেশির ব্যথা থাকলে, সেটাও তাঁকে জানানো উচিত। জোর করে জিম করা উচিত নয়। প্রয়োজনে এক দিন বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে।
জিমে কোনও সমস্যা হলে প্রশিক্ষক বা কোনও চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। ছবি: সংগৃহীত।
৪) ডায়েট: জিমে গিয়ে বাকিদের মুখে কঠিন ডায়েটের কথা উঠে আসে। কেউ দিনে পাঁচটি ডিম খাচ্ছেন শুনে অন্য কেউ সেটা শুরু করলে উপকার না-ও পেতে পারেন। প্রশিক্ষকেরাও তাঁদের ক্লায়েন্টের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা জেনে তার পরে ডায়েট চার্ট দিয়ে থাকেন।
কী করণীয়: জিমের পাশাপাশি ডায়েট অনুসরণ অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যপূরণে সাহায্য করে। কিন্তু যে কোনও ডায়েট শুরু করার আগে প্রশিক্ষক বা কোনও পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
৫) বার বার চোট: ব্যায়ামের সঠিক পদ্ধতি না শিখে জিম করলে চোট-আঘাতের সম্ভাবনা বাড়তেই থাকে। তাই এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতি মেনে শরীরচর্চা না হলে ক্লান্তি এবং অবসাদের পরিমাণও বেড়ে যায়। ফলে জিমে আগ্রহ হারান অনেকেই।
কী করণীয়: চোট পেলে বিরতি নিয়ে আগে সুস্থ হওয়া উচিত। একই জায়গায় বার বার আঘাত লাগলে প্রশিক্ষক বা চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। সে রকম হলে প্রশিক্ষক বা জিম বদলে ফেলাও যেতে পারে।