অভিনেত্রী তমন্না ভাটিয়ার ত্বক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কী? ছবি: সংগৃহীত।
‘স্ত্রী ২’ ছবির ‘আজ কি রাত’ গানের দৃশ্যে তমন্না ভাটিয়ার সৌন্দর্য, শরীরী বিভঙ্গ মুগ্ধ করেছিল দর্শকদের। রূপ ধরে রাখতে ত্বকের পরিচর্যা জরুরি সকলেই জানেন, কিন্তু অভিনেত্রী মনে করাচ্ছেন, পেটের স্বাস্থ্যের সঙ্গেও কিন্তু গুরুতর সম্পর্ক রয়েছে ত্বকের। এই ব্যাপারে তিনি নিজেই ভুক্তভোগী। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছেন, ‘‘নানা জনের নানা জিনিসে অ্যালার্জি থাকে। কিন্তু আমি দীর্ঘ দিন বুঝতেই পারিনি, আমার দুধ এবং গ্লুটেনে সমস্যা রয়েছে।’’
ত্বকের নানা রকম সমস্যার কারণ খুঁজতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই ডায়েট বদলেছেন তমন্না। এক সময় বুঝতে পেরেছেন, গ্লুটেন না খেলেই ত্বক ভাল থাকছে। সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক পরিচর্যায় নয়, বরং শারীরিক সুস্থতার উপরেও নির্ভর করে, সেই বোধই হয়েছে তাঁর।
তমন্নার গ্লুটেন ইনটলা্রেন্স রয়েছে। কিন্তু কী এটি? কী হয় এতে? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ‘‘গ্লুটেন হল এক ধরনের প্রোটিন। আটা, বার্লিতে মেলে এটি। আটা জলে গুললে ইলাস্টিকের মতো একটি প্রোটিন তৈরি হয়। একেই বলে গ্লুটেন। কারও কারও এই গ্লুটেন হজমেই সমস্যা হয়। তার প্রভাব পড়ে শরীরে এবং তা থেকে ত্বকেও।’’
কোন কোন উপাদানে গ্লুটেন মেলে?
গমের আটা, ময়দা, সুজি,
বার্লি (বার্লির জল, বার্লি থেকে তৈরি ভিনিগার বা যে কোনও পানীয়)
রাই (গমের মতোই শস্য)
কোন খাবার এড়িয়ে চলবেন?
কেক, কুকিজ়, পেস্ট্রি, পাউরুটি, বিয়ার, পাস্তা, নুড্লস, পিৎজ়া বেস, বিস্কুট, সয় সস (যদি না তা আলাদা করে গ্লুটেন ফ্রি করা হয়), চিপ্স, ভাজাভুজি (কোনটিতে গ্লুটেন জাতীয় পদার্থের পরত দেওয়া হয়), ফ্লেভার্ড ইয়োগার্ট, আইসক্রিম (কোনও কোনও), এমনকী লজেন্সেও গ্লুটেন থাকতে পারে।
গ্লুটেন ইনটলারেন্স হলে কী হয়?
মহারাষ্ট্রের এক হাসপাতালের পুষ্টিবিদ বৈশালী মরাঠে এক সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, ক্ষুদ্রান্ত্রের ভিতরে থাকে ভিল্লি, যার কাজই হল খাবার থেকে পুষ্টিগুণ শোষণ করা। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে ভিল্লি গ্লুটেন প্রোটিনটি ভাঙতে বা শোষণ করতে পারে না। তাঁদেরই বলা হয় 'গ্লুটেন ইনটলারেন্ট'।এই পরিস্থিতিকে বলা হয় 'নন সেলিয়াক গ্লুটেন সেন্সিটিভিটি'।
লক্ষণ
· গ্লুটেন হজমে সমস্যা থাকলে পেট ব্যথা, বুক জ্বালা, আন্ত্রিক, বদহজম, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
· ত্বকে চুলকানি, র্যাশ, ফুস্কুড়ি হতে পারে।
· উদ্বেগ হতে পারে, কাজে মন দিতেও অসুবিধা হতে পারে।
· মেজাজেও বদল আসতে পারে।
কারও কারও রুটি খেলেই সমস্যা হয়। যদি মনে হয়, আটা দিয়ে তৈরি খাবার খেলে অম্বল হচ্ছে বা শরীরে অসুবিধা হচ্ছে তা হলে কিছু দিন সেটি বাদ দিয়ে দেখা দরকার, অন্য খাবার খেলেও একই রকমের কষ্ট হচ্ছে কি না। পুষ্টবিদের পরামর্শ, গ্লুটেন ইনটলারেন্স হলে মিলেট খাওয়া যেতে পারে। রাগি, জোয়ার জাতীয় যে কোনও শস্যই বেছে নেওয়া যায়। ফাইবারে পূর্ণ এই শস্যগুলি হজম করা সহজ, স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল। রুটির বদলে ভাত, কাওনের চালের খিচুড়ি খেতে পারেন। রাগির আটা দিয়ে তৈরি রুটিও খাওয়া যেতে পারে।