Brain Function Damaging Habits

হেডফোনে গান শোনা, মোবা‌ইল দেখা, আর কোন অভ্যাসে নিঃশব্দে কমতে পারে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা?

দৈনন্দিন অভ্যাসই নিঃশব্দে মস্তিষ্কের শত্রু হয়ে উঠছে না তো? মস্তিষ্ক সচল রাখার পথের কাঁটা কোন অভ্যাসগুলি?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:৫৭
Share:

গান শোনা, মোবাইল দেখার মতো অভ্যাসেও মস্তিষ্কের ক্ষতি হকে পারে কি? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

ঘুম ভাঙা থেকে দিন শুরু। তার পর সংসার, অফিস— হাজারটা কাজ। দৈনন্দিন ব্যস্ততা সামলানো কার্যত অভ্যাস হয়ে যায়। তবে এই অভ্যাস নিঃশব্দে মস্তিষ্কের ক্ষতি করছে কি?

Advertisement

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ‌-র জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মানুষ যখন গভীর ঘুমে থাকে, মস্তিষ্ক তখন নানা রকম কাজ করে। বলা চলে, ঘরের কাজ। বিটা অ্যামাইলয়েড-এর টক্সিন দূর করে স্মৃতির ভাঁড়ার চাঙ্গা রাখে। দেখা গিয়েছে, দৈনন্দিন জীবনে ঘুম কমে যাওয়া মস্তিষ্কের অনেক সমস্যার নেপথ্য কারণ।

ব্রেন ফগ, সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হওয়ার পিছনে রয়েছে দৈনন্দিন জীবনযাপনের খুব সাধারণ কিছু অভ্যাস।

Advertisement

দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকা: শখ করে নয়, কাজের প্রয়োজনে অনেককে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকতে হয়। বিশেষত যাঁদের অফিসে বসে কাজ, তাঁদেরই সমস্যা বেশি। টানা বসে থাকলে, অঙ্গ সঞ্চালন কমে যায়। ফলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের মাত্রা কমে। মস্তিষ্কেও অক্সিজেন তুলনামূলক কম পৌঁছয়। তারই প্রভাবে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। ‘ফ্রন্টিয়ার্স’ নামে জার্নালে প্রকাশ, দীর্ঘ সময় ধরে এমন চললে মস্তিষ্কের গঠনগত বদল হতে শুরু করে।

সমাধান: এক ঘণ্টা অন্তর মিনিট ২-৩ হেঁটে নেওয়া উচিত। একটু পায়াচারি, জল খাওয়া— শরীর সচল রাখতে সাহায্য করে।

একসঙ্গে নানা কাজ: একসঙ্গে নানা কাজ সামলাতে হয় সকলকেই। পরিবার-অফিসের ভারসাম্য রক্ষার জন্য শুধু নয়, বেসরকারি চাকরিক্ষেত্রে এক জন কর্মীকে অনেক সময় নানা কাজ সামলাতে হয়। এর ফলে অনেক সময় কাজ মন দিয়ে করা যায় না। একসঙ্গে অনেক কাজ সামলাতে গিয়ে ভুল হয়। উদ্বেগ বৃদ্ধি পায়। যার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কেও। সিদ্ধান্ত নিতেও সমস্যা হয়।

সমাধান: পরিকল্পনা করে নেওয়া দরকার, কোনটার পর কোন কাজ করা যাবে। কোন কাজকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

জোরে গান শোনা: অনেকেরই বেশ জোরে হেডফোনে গান শোনার অভ্যাস রয়েছে। তা থেকেও নিঃশব্দে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে।জোরে গান শুনলে অন্তঃকর্ণের কোষের ক্ষতি হয়। এর সঙ্গে মস্তিষ্কেরও সম্পর্ক থাকে। প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাতে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ্-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানা যায়, শ্রুবণশক্তি কমে গেলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

সমাধান: হেডফোনে ৬০ শতাংশের বেশি উচ্চস্বরে এবং ৬০ মিনিটের বেশি একটানা গান বা কিছু শোনা ঠিক নয়।

ঘুমোনোর আগে মোবাইল দেখা: ঘুমোনোর আগে মোবাইলে ভিডিয়ো, সিরিজ় দেখার অভ্যাস তৈরি হয়েছে অনেকেরই। এতে ঘুম আসতে দেরি হয়। মোবাইলের পর্দার ‘ব্লু লাইট’ ঘুম আনতে সাহায্যকারী হরমানোর ভারসাম্য নষ্ট করে। ঘুম কম হলে স্মৃতিশক্তিও প্রভাব পড়তে পারে।

সমাধান: ঘুমোতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে মোবাইল দেখা বন্ধ করা উচিত। ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই জরুরি।

খাওয়া: মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতার ২০শতাংশই আসে পুষ্টি থেকে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-এর জার্নালে প্রকাশিত প্রক্রিয়াজাত, চিনিযুক্ত বা অতিরিক্ত ফ্যাটযুক্ত খাবার অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়।

সমাধান: অস্বাস্থ্যকর খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার, ফল পাতে রাখা দরকার। বাদাম, বীজ, তৈলাক্ত মাছ খেলে মস্তিষ্ক কর্মক্ষম থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement