মাল্টিগ্রেন আটা, সুজি না কিনোয়া, কোনটি খেলে উপকার বেশি হবে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
ওজন কমাতে ময়দা খাওয়া ছেড়েছেন অনেকেই। বদলে রুটি বা পরোটা যা-ই খান, তা বানানো হচ্ছে আটা দিয়ে। আবার সুজি দিয়ে তৈরি রুটি বা চিল্লাও পাতে থাকছে। বাঙালির হেঁশেলে আটা ও সুজি, দুই উপকরণই মজুত থাকে। সেই সঙ্গে এখন বাঙালির রান্নাঘরে ঢুকে পড়েছে কিনোয়া। পুষ্টিবিদেরা বলেন, ময়দার চেয়ে আটা ভাল, আবার আটা-ময়দার গ্লুটেনে যদি অ্যালার্জি থাকে, তা হলে বিকল্প হতে পারে সুজি। ডায়াবিটিস থাকলে সুজির বদলে কিনোয়া বেশি উপকারে আসবে। এখন কথা হল, তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে হলে কোনটি বেশি উপকারী হবে, তা জেনে নেওয়া জরুরি। কারা কোনটি খাবেন তা-ও গুরুত্বপূর্ণ।
মাল্টিগ্রেন আটা ভাল না সুজি না কি কিনোয়া?
গমের আটা বা সুজি কোনওটিই দ্রুত ওজন কমাবে না। তবে সুজির চেয়ে মাল্টিগ্রেন আটায় ফাইবার বেশি থাকে, এটিই যা ভাল দিক। গমের আটা সকলের ক্ষেত্রে উপকারী না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মাল্টিগ্রেন আটার উপর ভরসা করা যেতে পারে। বিভিন্ন দানাশস্য দিয়ে তৈরি এই আটা গমের আটার চেয়ে বেশি উপকারী। ১০০ গ্রাম মাল্টিগ্রেন আটায় ১২-১৬ গ্রামের মতো প্রোটিন, ৬৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট ও ১০ গ্রাম ফাইবার থাকে। সেখানে ১০০ গ্রাম সুজিতে ফাইবার থেকে ৩ গ্রামের মতো। সে দিক থেকে মাল্টিগ্রেন আটাই এগিয়ে থাকবে।
আবার আটা, সুজি ও কিনোয়ার মধ্যে যদি বিচার করেন, তা হলে এগিয়ে থাকবে কিনোয়া। এক ধরনের ফুলগাছের বীজ হল কিনোয়া। এতে যেমন কার্বোহাইড্রেট আছে, তেমনই আছে প্রোটিন। শস্য না হয়েও যেহেতু শস্যের মতোই কাজ করে, তাই অনেকেই একে সিউডো সিরিয়ালও বলে থাকেন। প্রোটিন, ভিটামিন বি ও ফাইবারে ভরপুর কিনোয়া খেলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমবে। দিনে এক বাটি কিনোয়া খাওয়া মানে শরীরকে একই সঙ্গে শর্করা, প্রোটিনের জোগান দেওয়া। তার সঙ্গে আরও থাকছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ই ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। কিনোয়ার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবেটিক ডায়েটেও কিনোয়া রাখা যেতে পারে।
কারা কোনটি খাবেন?
স্থূলত্ব রয়েছে, খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমাতে চান, এদিকে ডায়াবিটিসও আছে, তাঁদের জন্য কিনোয়া বেশি উপকারী।
আটা বা ময়দার রুটি বা পরোটা খেয়ে যাঁরা অভ্যস্ত, হজমেও তেমন সমস্যা নেই, তবে ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য গমের আটা বা ময়দার স্বাস্থ্যকর বিকল্প হতে পারে মাল্টিগ্রেন আটা।
হজমে সমস্যা আছে, লিভারের রোগ মাঝেমধ্যেই ভোগায় যাঁদের, রুটি বা দানাশস্য খেয়েও হজম হয় না, তাঁরা সুজি খেতে পারেন। কোনও অসুস্থতা থেকে সেরে উঠেছেন যাঁরা, তাঁরা সহজপাচ্য খাবার হিসেবে সুজি খেতেই পারেন। তবে সুজি নানা রকম সব্জির সঙ্গে মিশিয়ে খেলেই উপকার বেশি হবে।