দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে ফুসফুসেও। কী ভাবে জরুরি প্রত্যঙ্গটি রক্ষা পাবে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
কালীপুজো, দীপাবলির সময়ে দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় অনেকটাই। বাজির ধোঁয়া, যানবাহনের ধোঁয়া— সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে ভয়াবহ। বাতাসে ভাসমান অতিসূক্ষ্ম কণা এই সময় শ্বাসের সঙ্গে শরীরের প্রবেশ করে। সামগ্রিক স্বাস্থ্যের পক্ষে তা ক্ষতিকর তো বটেই, বিপজ্জনক হয়ে ওঠে ফুসফুসের অসুখ, হাঁপানি রয়েছে এমন রোগীদের জন্য।
ফুসফুস ক্রমাগত ধুলো-ধোঁয়ার সংস্পর্শে এলে প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বেড়ে যায়। সেই সমস্যার সমাধানে দরকার সঠিক পুষ্টি। প্রদাহনাশক এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার কিছুটা হলেও এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবর্মের কাজ করতে পারে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃ্দ্ধিতে সাহায্য করে।
ফুসফুসের উপর বিশেষ খাবার বা পুষ্টির প্রভাব নিয়ে এক সমীক্ষার আয়োজন করেছিল ইউরোপিয়ান রেসপিরেটরি সোসাইটি কংগ্রেস। সমীক্ষাটি চালিয়েছিল ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অফ লেসেস্টার। ২ লক্ষ মানুষের উপর সমীক্ষাটি চালানো হয়। তাতেই দেখা গিয়েছে, নিয়মিত ফল খেলে দূষণের হাত থেকে খুব সামান্য হলেও ফুসফুসকে বাঁচানো সম্ভব। পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম হল বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা, যার মধ্যে ব্ল্যাক কার্বন ও অন্যান্য দূষক মিশে থাকে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২.৫ পিএম-এর মতো দূষণের আবহে থেকেও ফল খাওয়ার জন্য ফুসফুসের ক্ষতি কিছুটা হলেও রোখা গিয়েছে। যাঁরা ফল খাননি, তাঁদের ক্ষেত্রে ফুসফুসের কার্যকারিতাও কমেছে। এই সমীক্ষাই প্রমাণ করে, কিছু ফলের অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং প্রদাহনাশক উপাদান ফুসফুসের জন্য ভাল।
কোন ধরনের ফল, খাবার ফুসফুসের ক্ষতি রুখতে পারে?
আমলকি: ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ আমলকি। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ফুসফুসকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের হাত থেকে রক্ষা করে। আমলকিতে থাকে ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা ফুসফুসের মধ্যে থেকে দূষিত পদার্থ দূর করতে এবং প্রদাহ কমাতে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয়, সকালে খালি পেটে একটি আমলকি চিবিয়ে খেলে। আমলকির রসও খাওয়া যায়। জ্বরজারি, ছোটখাটো সংক্রমণ থেকেও শরীরকে রক্ষা করে এতে থাকা ভিটামিন সি।
বেদানা: তালিকায় রাখা যায় বেদানার মতো ফলও। প্রতি ১০০ গ্রাম বেদানায় প্রোটিন রয়েছে ১.৭ গ্রামের মতো। ফ্যাটের পরিমাণ নামমাত্র। তাই নিয়মিত খেলেও ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয় থাকে না। এ ছাড়াও বেদানায় এমন কিছু খনিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট রয়েছে, যেগুলি সামগ্রিক ভাবে শরীরের জন্য ভাল। বেদানায় থাকা অ্যন্টি-অক্সিড্যান্ট ফুসফুসের প্রদাহ কমাতে, ক্ষতির হাত থাকে প্রত্যঙ্গটিকে বাঁচাতে সাহায্য করে।
ব্রকোলি: ফল না হলেও, এটি ভিটামিন এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর। এতে ভিটামিন এ, সি এবং কে রয়েছে। সব্জিটি ফুসফুসকে দূষণজনিত ক্ষতির হাত থাকে সামান্য হলেও রক্ষা করতে পারে। ফলে ফুসফুস ভাল রাখার জন্য ব্রকোলিও খাদ্যতালিকায় জুড়তে পারেন। ভিটামিন সি থাকায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও রয়েছে।