বাঁধাকপি থেকে ছড়াতে পারে অসুখ? ছবি: সংগৃহীত।
শীতের সব্জি গাজর থেকে বাঁধাকপি, ফুলকপি এখন মেলে বছরভরই। চাউমিন হোক বা স্যান্ডউইচ কিংবা রোল— খাবারে একটু বাঁধাকপি মেশালেই স্বাদ বাড়ে। পুষ্টিগুণেও যে কোনও সব্জিকে টেক্কা দেওয়ার ক্ষমতা রাখে কপি। কিন্তু পুষ্টিকর খাবার কি অজান্তে কি অসুখ বাড়াচ্ছেন?
বর্ষার মরসুমে বাঁধাকপি খেতে হলে খুব ভাল করে ধোয়া দরকার, বলেন চিকিৎসকেরা। শুধু বাঁধাকপি নয়, যে কোনও সব্জি এই সময় বেশি করে ধোয়া দরকার। কারণ, বর্ষার জল থেকে রোগজীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়। কেউ কেউ বলেন, বাঁধাকপি বা সব্জি ঠিক ভাবে ধুয়ে না খেলে ফিতাকৃমির সংক্রমণ ঘটে।
ফিতাকৃমি শরীরে ঢুকলে নানা সমস্যা হতে পারে। যেহেতু এই পরজীবী অন্ত্রে বাস করে মানবশরীর থেকে পু্ষ্টিগুণ শোষণ করে, তাই শরীর দুর্বল হতে পারে, পেটের সমস্যাও দেখা দেয়। এমনকি, তা স্নায়ুতন্ত্রকেও আক্রমণ করে। এ থেকে হতে পারে ‘নিউরোসিস্টিসারকোসিস’। এটি মূলত পরজীবীঘটিত রোগ। দূষিত জল, খাবার থেকে ফিতাকৃমির ডিম প্রবেশ করে শরীরে। তার পর ফেটে গিয়ে লার্ভা বার হয়, যা রক্তপ্রবাহে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছয় এবং মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষে আশ্রয় নেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’(সিডিসি)-এর তরফে সতর্ক করে বলা হয়েছে, ভারতের নানা জায়গায় বর্ষার সময়ে এমন ফিতাকৃমির সংক্রমণ ঘটে।
তবে সব্জির চেয়েও শূকরের মাংস থেকে এই পরজীবী শরীরে ঢুকে পড়ার ঝুঁকি বেশি। কী ভাবে পশুপালন হচ্ছে, মাংস ঠিক মতো সেদ্ধ হচ্ছে কি না, এই বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ। হাত না ধুয়ে খাওয়ার অভ্যাসও বিপদ বাড়াতে পারে।
বর্ষায় কাঁচা সব্জি খাওয়ার ব্যাপারে সব সময়েই সাবধানতা জরুরি। বাঁধাকপিতে যেহেতু অনেক পরত থাকে, তাই তা পরিষ্কার করে ধোয়া সব সময় সম্ভব হয় না। কখনও জল দিয়ে ধুলেও রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি রয়ে যায়।
কী ভাবে বাঁধাকপি পরিষ্কার করবেন?
· বাঁধাকপির বাইরের পরতটিতে সবচেয়ে বেশি কাদা-ময়লা থাকে। এটি খুলে ফেলে দেওয়া ভাল।
· বাকি বাঁধাকপির কলের সামনে জলে ধরুন। রগড়ে পরিষ্কার করুন।
· একটি পাত্রে জল নিয়ে তাতে নুন দিন। বাঁধাকপি ১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখলে ভিতরে পোকা থাকলে বেরিয়ে যাবে।
· জলে সাদা ভিনিগার যোগ করে সেই জলে বাঁধাকপি কেটে ভিজিয়ে রাখুন। তার পর পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন।
· বর্ষায় কাঁচা বাঁধাকপি স্যালাড, স্যান্ডউইচে না খেয়ে একটু নুন জলে ভাপিয়ে নিন। এতে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর পরজীবী, রোগজীবাণু মরে যাবে।