Indian Adapted Mediterranean Diet

অলিভ অয়েলের বদলে ঘি! থাইমের বিকল্পে তুলসী,ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েট ভারতীয়দের মতো করে বানাল এমস

মেডিটেরেনিয়ান ডায়েটের ভারতীর রূপ। নামীদামি সব্জি বা ফল খেতে হবে না। ওজন কমাতে ও যৌবন ধরে রাখতে রোজের সব্জি, ফল, শস্য দিয়েই খাবারের তালিকা বানিয়ে দিল এমস ও আইসিএমআর।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:

সাত দিনে কমবে ওজন, বার্ধক্য আসবে দেরিতে, ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েট এ ভার ভারতীয়দের জন্য। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েট বা ‘মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট’ নিয়ে ইদানীংকালে চর্চা খুব বেশি। ভূমধ্যসাগরের আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা এমন ডায়েট মেনে চলেন যাতে তাঁদের ওজন বাড়ে না, শরীর সুস্থ থাকে এবং বার্ধক্যও আসে দেরিতে। সেই ডায়েট পুরোপুরি উদ্ভিজ্জ খাবার ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উপরেই নির্ভরশীল। এমন কিছু দানাশস্য়, সব্জি ও ফল তাঁরা খান, যাতে নীরোগ শরীরে যৌবন ধরে রাখা যায় দীর্ঘ সময়।এখনকার অনেক বলিউড তারকাও ফলাও করে বলেন যে, তাঁরা ‘মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট’ মানছেন। তবে এই ডায়েট সকলের পক্ষে মেনে চলা সম্ভব নয়। কারণ এ দেশে জলবায়ুতে তেমন সব্জি ও ফল ফলেই না। সেগুলি কিনতে গেলে পকেট ফাঁকা হয়ে যাবে। তাই মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট যে ধারা মেনে চলে, তেমন ভাবেই ভারতীয়দের জন্যও একটি ‘ইন্ডিয়ান অ্যাডপ্টেড মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট’ (আইএএমডি) তৈরি করে ফেলেছে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)।

Advertisement

ভারতীয় মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট কী রকম?

এমস একা নয়, খাবারের তালিকা তৈরি করতে সাহায্য করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ ও (আইসিএমআর)। ভারতীয় মেডিটেরেনিয়ান ডায়েটে এমন সব্জি বা শস্য রাখা হয়েছে, যা সকলেই কিনে খেতে পারেন। অর্থাৎ, খুবই সহজলভ্য। রোজ যে সব সব্জি বা ফল খান, তার মধ্যে থেকে বেছে বেছেই তৈরি হয়েছে খাবারের তালিকা। পরিবেশ, আবহাওয়ার কথাও মাথায় রাখা হয়েছে। উত্তর ভারতের লোকজন যেমন খাবার খান, দক্ষিণ ভারতে তেমনটা নয়। তাই ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েটের ভারতীয় রূপে সাত রকম খাবারের তালিকা তৈরি হয়েছে। এলাকা ভেদে তা বদলায়। তবে কাজ হবে একই রকম।

Advertisement

‘বিএমসি নিউট্রিশন’ জার্নালে ভারতীয় চেহারার ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েট নিয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে এমসের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, স্থূলত্ব যে হারে বেড়ে চলেছে দেশে, তাতে খাওয়াদাওয়ায় লাগাম না পড়ালে জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি হৃদ্‌রোগ, ডায়াবিটিসের রোগীতে ভরে যাবে। তাই ক্যালোরি মেপে খাওয়া খুব জরুরি। ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েটে ক্যালোরি মেপেই খাওয়া হবে। চার রকমের ক্যালোরির তালিকা তৈরি হয়েছে— ১২০০, ১৪০০, ১৬০০ ও ২০০০। শরীর বুঝে বেছে নিতে হবে। যাঁর কায়িক পরিশ্রম বেশি, তাঁর জন্য অধিক ক্যালোরির ডায়েট, যাঁর শরীর নাড়াচাড়া তেমন হয় না, তাঁর জন্য একটু কম ক্যালোরিই ভাল।

বিকল্প খাবার কী কী?

ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফল, সব্জি, গোটা শস্য, লেবু, বাদাম, বীজ এবং অলিভ অয়েল খাওয়া হয়। মাছ-মাংস বা দুগ্ধজাত খাবারের পরিমাণ সীমিত। প্রক্রিয়াজাত খাবার ছুঁয়েও দেখা হয় না। এ দেশে একস্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে রান্না তেমন হয় না। সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়িতে তা অসম্ভব। তাই অলিভ অয়েলের বিকল্পে সামান্য ঘি বা রাইস ব্র্যান অয়েল চলতে পারে।

মেডিটেরেনিয়ান ডায়েটে বুলগার, ফারো, কিনোয়া খাওয়ার চল বেশি। এগুলির বদলে ডালিয়া, ব্রাউন রাইস, জোয়ার, বাজরা বা রাগি খাওয়া যেতে পারে। বাজরার রুটি, মাল্টিগ্রেন আটার রুটি, রাগি বা ডালিয়ার খিচুড়ি ভাল বিকল্প হতে পারে।

থাইম, রোজ়মেরির মতো মশলা ভূমধ্যসাগরীয় ডায়েটে ব্যবহার করা হয়। এ দেশে থাইমের বিকল্প হতে পারে তুলসী। মশলার মধ্যে জিরে, জোয়ান, জায়ফল ও জয়িত্রী উপকারী। এগুলি প্রদাহনাশক।

ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় মরসুমি সব্জি ও ফল বেশি খাওয়া হয়। নানা রকম বেরি জাতীয় ফল, বিভিন্ন ধরনের লেবু, শাকপাতা বেশি খাওয়া হয়। সব রকম বেরি এ দেশে পাওয়া যায় না। কাজেই বিকল্প হিসেবে পালংশাক, মেথিশাক, বেথোশাক, মূলোশাক খাওয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের মধ্যে বাদাম ও নানা ধরনের বীজ, যেমন সূর্যমুখী, তিসির বীজ ভাল। তা ছাড়া বিভিন্ন রকম ডাল, ছোলা, রাজমা রয়েছে ডায়েটের তালিকায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement