কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন, সাধারণ সর্দি না সাইনাস? ছবি: ফ্রিপিক।
প্রবল মাথা যন্ত্রণা, সারা ক্ষণ নাক-মাথায় ভারী ভাব এমনকি ব্যথার জেরে জ্বর চলে আসা— সাইনাসের এই লক্ষণগুলি নিয়ে অনেকেই সচেতন। আবার অনেকেই আছেন, যাঁরা সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে সাইনাসের লক্ষণ গুলিয়ে ফেলেন। ফলে সঠিক চিকিৎসাই হয় না। সর্দি হওয়া বা মাথা যন্ত্রণা হলেই চেনা অ্যান্টিবায়োটিক মুঠো মুঠো খেয়ে ফেলেন। এতে হিতে বিপরীতই হয়।
সাইনাস ও সাধারণ সর্দির মধ্যে তফাত কোথায়?
সাধারণ সর্দির জন্য রেসপিরেটারি ভাইরাস দায়ী। অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণেও সর্দি-কাশির সমস্যা বাড়ে। তবে সাইনাসের কারণ আলাদা। মানুষের মাথার খুলির মধ্যে অনেকগুলি গহ্বর থাকে। যেমন ধরুন নাকে, কপালে, নাকের ঠিক দু’পাশে। এই গহ্বরগুলিকেই সাইনাস বলে। সাইনাসের আবার অনেক ভাগ আছে। যেমন, ফ্রন্টাল সাইনাস (কপালে), ম্যাক্সিলারি সাইনাস (নাকের দু’পাশে গালে), স্ফেনয়েড সাইনাস (চোখের পিছনে) ইত্যাদি। এই গহ্বরগুলিতেও নাকের মতো মিউকাস থাকে। এ বার এই সাইনাসের মিউকাস যদি বেরোতে না পারে, তখনই সমস্যা শুরু হয়। যাকে বলা হয় সাইনাসাইটিস। তখন প্রদাহ মারাত্মক বেড়ে যায়।
সাইনাস ও সর্দির লক্ষণ আলাদা
সাধারণ সর্দি-কাশিতে ক্রমাগত হাঁচি হবে, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে জল পড়ার সমস্যা বাড়বে।
ঘন ঘন জ্বর আসতে পারে, চোখে ব্যথা হবে, মাথায় যন্ত্রণা হতে পারে।
সাইনাসাইটিস বাড়লে মাথা ধরার প্রবণতাও বাড়ে। সর্দি না কমালে কিন্তু মাথায় বাম লাগিয়ে এর থেকে মুক্তি পাবেন না। তবে মনে রাখতে হবে, সাইনাসাইটিস সম্পূর্ণ না সারলেও জীবনযাপনে বদল আনলে এই রোগের দাপট অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। রাতে ঘুমোতে গেলে অনেকেরই নাক বন্ধ হয়ে যায়। ফলে মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ চালাতে হয়। এতে মুখের ভিতরটা শুকিয়ে যায়। এর থেকে মুখেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। এ সবই সাইনাসের লক্ষণ।
শ্লেষ্মাজনিত সমস্যাকে দূরে রাখলেই সাইনাসের সমস্যা অনেকটা দূরে থাকে। আদা, মধুর মিশ্রণ শ্লেষ্মার জন্য অত্যন্ত উপকারী। মধুর অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ক্ষমতা শরীর গরম রাখে। আদা প্রাকৃতির ভাবেই অ্যান্টিব্যাক্টিরিয়াল। এই দুই উপাদানের মিশ্রণ প্রতি দিন খেতে পারলে সাইনাসের সমস্যা থেকে অনেকটাই দূরে থাকা যায়। সাইনাসের সমস্যা বাড়লে সার্জারি করাতেও হতে পারে।