Magnesium deficiency Symptoms

অল্পেই কাহিল, খিটখিটে মেজাজ, যখন তখন মনখারাপের কারণ কিন্তু একটি জিনিসের ঘাটতি, কী সেটি?

সারা রাত ঘুমিয়ে উঠেও ক্লান্তি, দুঃখের কারণ না ঘটলেও মনখারাপের নেপথ্যে একটি খনিজই কলকাঠি নাড়ছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ১৫:১৮
Share:

সকালে উঠে ক্লান্তি, মনখারাপ, একটি কারণেই হচ্ছে। ছবি: এআই।

সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখলেন, গা-হাত পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা। ঠান্ডা লেগে এমন হচ্ছে ভেবে পাত্তাও দিলেন না। দুপুর হতে না হতেই ক্লান্তি এসে ঘিরে ধরল। মেজাজও চড়ল সপ্তমে। কেউ কিছু বললে বিরক্তি, বেশি শব্দ শুনলে মাথা ধরার মতো সমস্যাও দেখা দিল। এই যে আচমকা শরীরের অবস্থা বদল, যখন তখন মেজাজ ওঠানামা— এর কারণ কিন্তু সামান্য নয়। সারা রাত ঘুমিয়ে উঠেও ক্লান্তি, দুঃখের কারণ না ঘটলেও মনখারাপের নেপথ্যে একটি খনিজই কলকাঠি নাড়ছে। সেই খনিজ শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম সামলায়। পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়, আবার মনও ভাল রাখে। কী সেটি? কী ভাবে মিটবে তার ঘাটতি?

Advertisement

সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতোই জরুরি খনিজ ম্যাগনেশিয়াম। মহিলাদের জন্য তো এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্যালশিয়ামের অভাব হলে মেয়েদের যেমন হাড় দুর্বল হয়, ম্যাগনেশিয়ামের অভাবেও তা হয়। হরমোনগুলির ওঠানামা নিয়ন্ত্রণেও এর ভূমিকা আছে। ঋতুচক্র স্বাভাবিক রাখতেও ম্যাগনেশিয়াম বড় ভূমিকা পালন করে।

‘পাবমেড’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে ও হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও ম্যাগনেশিয়াম বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তাই এই খনিজটি মোটেই হেলাফেলার পাত্র নয়। বরং এটি ঠিকমতো শরীরে থাকলে, রক্তে শর্করার মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমবে।

Advertisement

পেশির শক্তি বাড়ানো এর সবচেয়ে বড় কাজ। মাঝেমধ্যেই পেশিতে টান ধরা, রাতে ঘুমোনোর সময়ে কাফ মাসল বা হাতে ব্যথা হওয়ার কারণও কিন্তু এরই ঘাটতি। হাড় ও দাঁত ভাল রাখাও ম্যাগনেশিয়ামের কাজ। কাজেই এর অভাব হওয়া মানে, পেশি যেমন দুর্বল হবে, তেমনই হাড়ও ভঙ্গুর হতে থাকবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ভিটামিন ডি শরীরে তখনই ঠিকমতো কাজ করবে, যদি তার দোসর হয় ম্যাগনেশিয়াম। ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেলে তার সঙ্গে এমন খাবার খেতে হবে, যাতে ম্যাগনেশিয়াম ভরপুর মাত্রায় রয়েছে। আবার দেখা গিয়েছে, ওজন কমাতেও এটি সাহায্য করে। ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খেলে বাড়তি মেদ ঝরতে থাকবে। এ দিকে পুষ্টিরও কমতি হবে না।

ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি পোষাবেন কী ভাবে?

অনেক সুস্বাদু এবং সহজলভ্য খাবারে ম্যাগনেশিয়াম প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। রোজের পাতে সেগুলি রাখলে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হবে না।

পালংশাকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম থাকে। এক কাপ সেদ্ধ পালং থেকে অন্তত ৭৮ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যাবে। আবার কয়েক রকম বাদাম ও বীজেও ম্যাগনেশিয়াম থাকে। যেমন, আধ কাপের মতো কুমড়োর বীজে প্রায় ১৫০ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে, চিয়া বীজে এর পরিমাণ প্রায় ১১১ মিলিগ্রাম, কাজুবাদামে অন্তত ৭৮ মিলিগ্রাম। রোজের জলখাবারে বা সন্ধ্যার স্ন্যাক্সে বাদাম ও বীজ রাখলে ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হবে না।

এক কাপ মটরশুঁটিতে প্রায় ৬০ মিলিগ্রামের মতো ম্যাগনেশিয়াম থাকে। আবার ডালিয়া, কিনোয়ার মতো দানাশস্যও এই খনিজে ভরপুর। ভাতের বদলে যদি দানাশস্য খেতে পারেন, তা হলে ওজনও কমবে, আবার খনিজের ঘাটতিও মিটবে।

কলা, পেঁপেও ম্যাগনেশিয়ামে ভরপুর। একটি মাঝারি কলায় প্রায় ৩২ মিলিগ্রাম ম্যাগনেশিয়াম থাকে। সকালের জলখাবারে কলা রাখতেই পারেন বা কলার স্মুদি চিনি ছাড়া বানিয়ে খেতে পারেন। দুধ, দইও ম্যাগনেশিয়ামের ভাল উৎস। প্রোবায়োটিকের জন্যও রোজ দই খাওয়া যেতে পারে। তাতেও খনিজের ঘাটতি পুষিয়ে যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement