Headache types and symptoms

মাথাব্যথার সাত-সতেরো! কোন দিকের ব্যথা কী বোঝায়? অবস্থানের সঙ্গে বদলে যায় রোগের ধরনও

‘ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্য সিফিকেশন অফ হেডেক ডিজ়অর্ডার' (আইসিএইচডি) নামে একটি জার্নাল রয়েছে, তাতে মাথা ব্যথার নানা ধরন ও উপসর্গ গিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। কোন ব্যথার কী মানে, কোনটি কী রোগের লক্ষণ জানিয়েছেন গবেষকেরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ১৫:১০
Share:

কোন দিকের মাথাব্যথা কী রোগের লক্ষণ ফাইল চিত্র।

মাথাব্যথা নিয়ে বড়ই মাথাব্যথা অনেকের। রোদে বেরোলে ব্যথা, বৃষ্টিতে ভিজলে ব্যথা। কখনও মাথার ডান দিকে, কখনও বাঁ দিকে, কখনও মাঝখানে আবার কখনও বাঁ দিক থেকে শুরু করে একেবারে ডান দিক অবধি ব্যথার স্রোত বয়ে যায়। কোন ব্যথার কী যে মানে, তা না বুঝেই ব্যথানাশক ওষুধ বা মলম লাগিয়ে সাময়িক ভাবে যন্ত্রণা কমানোর চেষ্টা হয়। তাতে অবশ্য লাভ তেমন হয় না। ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্যাসিফিকেশন অফ হেডেক ডিজ়অর্ডার' (আইসিএইচডি) নামে একটি জার্নাল রয়েছে, তাতে মাথা ব্যথার নানা ধরন ও উপসর্গ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। কোন ব্যথার কী মানে, কোনটি কী রোগের লক্ষণ, তা জানিয়েছেন গবেষকেরা।

Advertisement

এ দেশেও ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’-এর একটি গবেষণাপত্র রয়েছে মাথা ব্যথার রকমফের নিয়ে। সেখানে গবেষকেরা মাথা যন্ত্রণার নানা প্রকারকে ‘হেডেক ডিজ়অর্ডার’ বলেছেন। এটি দু’প্রকারের— প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি। সেকেন্ডারি অর্থে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দীর্ঘ সময়ে টিভি-মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে যে ব্যথা হয় তাকে বোঝায়। আর প্রাইমারির অনেক ভাগ রয়েছে। লক্ষণভেদে রোগের ধরনও বদলে যায়। তার মধ্যে কোনওটি আবার ‘ক্রনিক হেডেক ডিজ়অর্ডার’।

হাইপারটেনশন যখন তুঙ্গে

Advertisement

রক্তচাপ বেড়ে গেলে যখন তখন মাথাব্যথা হতে পারে। হাইপারটেনশনে রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়, ফলে রক্তপ্রবাহে বাধা পড়ে। সেই সময়ে মাথার মাঝখানে ও মাথার পিছন থেকে ঘাড় অবধি তীব্র ব্যথা শুরু হয়। মাথা ঘোরা ও চোখে অন্ধকার দেখার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। মাঝেমধ্যেই এমন ব্যথা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

ক্লাস্টার ব্যথা

এই মাথাব্যথার ধরন আলাদা। এ ক্ষেত্রে মাথার একপাশে ও এক চোখে যন্ত্রণা শুরু হবে। চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠা, অনবরত জল পড়তে থাকা, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দেবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ক্লাস্টার মাথাব্যথার কারণ সম্পূর্ণ জানা নেই। সাধারণত অত্যধিক পরিশ্রম, কম ঘুম, রাত জাগার অভ্যাসের কারণে শরীরের ঘড়ি বা ‘সার্কাডিয়ান রিদ্‌ম’ বদলে গেলে এমন ব্যথা হতে পারে। হরমোনের গোলমালের কারণেও এই ব্যথা হয়।

বাড়াবাড়ি রকম সাইনাস

নাকের দু’পাশে, কপালে, দু’চোখের মাঝে, চোখের পিছনে ব্যথা হয়। সাইনাসের মিউকাসগুলি কোনও ভাবে শরীর থেকে বেরোতে না পারলেই শুরু হয় সাইনুসাইটিসের সমস্যা। ঋতু বদলের সময়ে ব্যথা বাড়ে। ঘুম ভাঙা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা, নাক বন্ধ, নাক থেকে জল পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। অনেক সময়ে জ্বরও আসে।

মাইগ্রেন যখন শত্রু

মাইগ্রেন হল ‘নিউরোলজিক্যাল’ রোগ। চিকিৎসকেরা বলেন, মাথার এক দিকেই ব্যথা হয় বেশি। সারা ক্ষণ দপদপ করতে থাকে। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধি ব্যথা থাকতে পারে। মাথাব্যথার সঙ্গে ঘাড়ের পিছনেও যন্ত্রণা হবে, বমি ভাব থাকবে, চোখে আলো পড়লেও কষ্ট হবে।

থান্ডারক্ল্যাপ

হঠাৎ করেই মাথার এক দিক থেকে ব্যথা শুরু হবে ও তা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠবে। টানা কয়েক মিনিট থাকতে পারে ব্যথা। ওষুধেও সারবে না, বারে বারেই ব্যথা হতে থাকবে। জীবাণু সংক্রমণ, মেনিনজ়াইটিস, শরীরের ভিতর কোনও কারণে রক্তক্ষরণ শুরু হলে এমন ব্যথা হতে পারে। থান্ডারক্ল্যাপ ব্যথা হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

রিবাউন্ড ব্যথা

ব্যথা ফিরে আসবে বার বার। যে কোনও ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরেই ব্যথা হবে। অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া, যখন তখন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার অভ্যাসের কারণে এই ব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনও ওষুধের ডোজ় চলাকালীনই ব্যথা বাড়বে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement