বড়দিনে দেদার হুল্লোড় করেও শরীর ঠিক থাকবে, রইল কিছু কৌশল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দুর্গাপুজোয় বাঙালি উৎসব উদ্যাপনে মাতে। বড়দিনেও। বাঙালির পার্বণে বড়দিন ঢুকে পড়েছে সেই কবেই। কলকাতার ক্রিসমাস যাপন, দেশের অন্যান্য শহরের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সমৃদ্ধও বটে। বড়দিনে বাঙালি বাড়িতেও খানাপিনার আসর বটে। ঘর সাজিয়ে বড়দিনের উদ্যাপন চলে। অনুষ্ঠান, পার্টিও বেশ সরগরম। খাওয়াদাওয়া, হইহুল্লোড়ের কোনও কমতি নেই। এ বারেও হয়তো পরিকল্পনা আগে থেকেই সেরে রেখেছেন অনেকেই। বড়দিনের সন্ধ্যায় দেদার খাওয়া ও রাতভর সুরাপানের আয়োজনও হয়তো হচ্ছে। হুল্লোড় যতই করুন, শরীরটাও ঠিক রাখা জরুরি। তার জন্য কিছু নিয়মও মানতে হবে।
বড়দিনের সকালের ‘ডিটক্স’
শসার খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে নিন। পাতিলেবু ছোট ছোট টুকরো করে কেটে রাখুন। এ বার কাচের পাত্রে পরিমাণ মতো জল নিয়ে শসা এবং লেবু ভিজিয়ে রাখুন। সারা রাত ভিজিয়ে রাখতে পারলে ভাল হয়। চাইলে এক মুঠো পুদিনা পাতাও ছড়িয়ে দিতে পারেন। সকালে খালি পেটে এই পানীয় খেলে হজমক্ষমতা বাড়বে। টক্সিন বেরিয়ে যাবে।
এক কাপ পালংশাক, আধ কাপ ধনে পাতা, একটু পার্সলে পাতা, একটা আমলকি ভাল করে ধুয়ে মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। তার পর এই মিশ্রণটি ভাল করে ছেঁকে রস বের করে সেটা একটু নুন এবং পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খান। এই পানীয়ও শরীর ডিটক্স করবে।
খাওয়াদাওয়া করুন নিয়ম মেনে
অম্বল হয়ে পেট-বুক জ্বালা করলে সঙ্গে সঙ্গে আরাম দিতে পারে আধ কাপ ঠান্ডা দুধ। দুধে এমন কিছু জিনিস থাকে, যা অ্যাসিডের সঙ্গে লড়তে সক্ষম। শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা কমায়। ফলে কম সময়ে শরীরের ভিতরের জ্বালা ভাব কমে।
বেশি তেলমশলা দেওয়া খাবার খেয়ে ফেললে তার পরে কখনওই সঙ্গে সঙ্গে জল খাবেন না। অম্বলের সমস্যা বেশি হলে সারা রাত মৌরি জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই জল ছেঁকে খেলে গ্যাস-অম্বলের থেকে রেহাই পেতে পারেন।
গোলমরিচ, লবঙ্গ, এলাচ খেলেও অ্যাসিডের হাত থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যায়। অল্প বিটনুন দিয়ে আদাকুচি খেলে গ্যাস-অম্বল প্রতিরোধ করা যায়।
ভারী খাবার খেয়ে নরম পানীয় বা আইসক্রিম ভুলেও খাবেন। এগুলি অম্বলের সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। জিরে গ্যাস-অম্বল নিরাময়ে খুবই সাহায্য করে। শুকনো খোলায় জিরে ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এক চামচ জিরে গুঁড়ো এক গ্লাস জলে মিশিয়ে খেতে পারেন।
সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। ঘুম ঠিকমতো না হলে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। তার প্রভাব পেটের স্বাস্থ্যে, মস্তিষ্কেও পড়ে। ঠিক সেই কারণে রাতে ঘুম না হলে হজমের সমস্যা হয়। শরীর ক্লান্ত লাগে। উৎসবের দিনেও খুব বেশি রাত না করে ঘুমোনোই ভাল।
চা, কফি, মিষ্টি, মদ— উৎসবের দিনে যেটাই খাওয়া হোক না কেন, তাতে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। পরিমিত আহারই সু্স্থতার চাবিকাঠি। কার্বনযুক্ত পানীয়, অতিরিক্ত চা-কফি এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর মকটেল, ভেষজ চায়ে চুমুক দেওয়া যায়। মিষ্টি খেলেও তার মাত্রা থাকা জরুরি।
পেটের রোগ সারানোর আরও একটা উপায় হল, খেয়ে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়বেন না। খাওয়ার পরে মিনিট খানেক হেঁটে নিলে হজম ভাল হয়। ঘরে বা ছাদেই হাঁটুন। বিশ্রামও নিতে হবে সঠিক সময়ে।