Double Carbing

পেটের মেদ ঝরিয়ে ক্ষীণকটি হতে চান? একসঙ্গে দু’রকমের কার্বোহাইড্রেট খাচ্ছেন না তো!

পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক সব বৃথা গেল। কিছুতেই পেট আর কোমরের দু’পাশে জমে থাকা বাড়তি কয়েক কিলো মেদ থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না। নেপথ্য কারণ হতে পারে ‘ডাবল কার্বিং’।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৩
Share:

ছবি : শাটারস্টক।

রোগা হওয়ার জন্য কত কী-ই না করছেন! ভাজাভুজি খাচ্ছেন না, লিফ্‌টের বদলে সিঁড়ি বেয়ে নামা ওঠা করছেন। নিয়মিত জিমে গিয়ে শরীরচর্চাও করছেন, কিন্তু কিছুতেই পেট আর কোমরের দু’পাশে জমে থাকা বাড়তি কয়েক কিলো মেদ থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না। পুশ-আপ, প্ল্যাঙ্ক সব বৃথা গেল। তবে কোথায় সমস্যা! ফিটনেস এবং যাপন প্রশিক্ষক ইম্যানুয়েল ডিকারসন জুনিয়র বলছেন সমস্যাটা খাওয়াদাওয়ারও হতে পারে। যাঁরা রোগা হওয়ার সফরের শেষ প্রান্তে পৌঁছেও শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং লাইন পেরোতে পারছেন না, তাঁদের জন্য ইম্যানুয়েলের পরামর্শ একসঙ্গে দু’রকম কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করুন। এই ধরনের খাওয়ার একটি নামও দিয়েছেন ওই যাপন প্রশিক্ষক— ‘ডাবল কার্বিং’।

Advertisement

ডাবল কার্বিং কী?

একটি ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োয় ইম্যানুয়েল বলছেন, ‘‘মডেলদের মতো পেটানো চেহারা পেতে চান? তা হলে প্রথমেই দু’রকম কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একসঙ্গে খাওয়া বন্ধ করুন। প্রতি বার খাওয়ার সময় কেবল একটিই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খান। ধরুন বার্গার খাচ্ছেন, তবে তার সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ় খাবেন না। কারণ বার্গারের পাউরুটিতে কার্ব থাকছে আবার ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ়েও থাকছে। বদলে বার্গারের সঙ্গে হালকা করে প্যানে ভেজে নেওয়া সব্জি খেতে পারেন। কিংবা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ় খেলে পাউরুটি দু’টো বাদ দিতে পারেন।’’

Advertisement

ভারতীয়দের অনেকে ভাত-রুটি একসঙ্গে খান। খিচুড়ির সঙ্গেও খাওয়া হয় আলুরদম, আলুভাজা বা আলুর বড়া। —ফাইল চিত্র।

ভারতে বা বঙ্গে কি দু’রকম কার্বোহাইড্রেট খাওয়া হয়?

ইম্যানুয়েল যে ধরনের খাদ্যাভ্যাসের কথা বলছেন, তা ভারতীয়, এমনকি, বাঙালিদের মধ্যেও চালু আছে। অনেকেই ভাতের সঙ্গে আলু ভাতে, আলুর তরকারি খেয়ে থাকেন। কলকাতার বিরিয়ানি থেকে ঝালমুড়ি— সবেতেই দু’রকমের কার্বোহাইড্রেট বিদ্যমান। বিরিয়ানিতে চাল-আলু, ঝালমুড়িতে মুড়ি এবং আলু, এমনকি, বাঙালির প্রিয় পাঁঠার মাংস আর ভাতেও আলু থাকা জরুরি। এ ছাড়াও আছে লুচি-আলুরদম, মোগলাই পরোটার সঙ্গে আলুর তরকারি, আলুর পরোটা, শিঙাড়ার সঙ্গে মিষ্টি চাটনি খেলে তিন রকম শর্করা খাওয়া হয়। ভারতীয়দের অনেকে ভাত-রুটি একসঙ্গে খান। খিচুড়ির সঙ্গেও খাওয়া হয় আলুরদম, আলুভাজা বা আলুর বড়া। দোসার ভিতরেও থাকে আলুর পুর। আবার ইতালিয়ান খাবারে পাস্তার সঙ্গে পরিবেশন করা হয় গার্লিক ব্রেড। এই সবই ‘ডাবল কার্বিং’। যা মেদ ঝরানোর গোপন শত্রু, বলছেন ফিটনেস প্রশিক্ষক।

ধরুন বার্গার খাচ্ছেন, তবে তার সঙ্গে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ় খাবেন না। — ফাইল চিত্র।

‘ডাবল কার্বিং তত্ত্ব’ কি ঠিক?

ইম্যানুয়েলের সঙ্গে একমত পুষ্টিবিদ উমঙ্গ মলহোত্র। তিনি বলছেন, ‘‘আসলে প্রত্যেক বার খাবার খাওয়ার সময় আমাদের শরীরে পুষ্টি যাওয়ার কথা। কিন্তু খাবার যদি শর্করায় ভারাক্রান্ত হয় তবে পুষ্টির পরিমাণ কমছে। পাশপাশি বাড়ছে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রাও। যা দ্রুত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ওজন ঝরানোর সফরে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।’’ পুষ্টিবিদের মতে, রক্তে শর্করা হঠাৎ বাড়লে তা থেকে উল্টোপাল্টা খাবার খাওয়ার ইচ্ছে জাগতে পারে, তা থেকে মেদ জমতে পারে, তাতে ওজন ঝরানোর যাবতীয় চেষ্টা এবং তার জন্য করা পরিশ্রমের বারোটা বাজবে।

রোগা হওয়ার সফরের শেষ প্রান্তে পৌঁছেও শেষ পর্যন্ত ফিনিশিং লাইন পেরোতে পারছেন না? —ফাইল চিত্র।

তবে কী করণীয়?

পুষ্টিবিদ জানাচ্ছেন, একটি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রেখে তার সঙ্গে খাওয়া বাকি খাবারগুলিকে প্রোটিনজাতীয় খাবারে বদলে নিন। ভাতের সঙ্গে আলু ছাড়া সব্জি অথবা পনির বা টোফু বা চিকেন রাখুন। বা লুচি-পরোটার সঙ্গে আলুর দমের বদলে নিন ডাল বা কম শর্করা বিশিষ্ট আনাজের তরকারি। এই সামান্য বদলে শরীরে যাওয়া শর্করার মাত্রাই শুধু কমবে না, শরীরে পুষ্টিও বেশি যাবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement