Hiccups Causes

ঘন ঘন হেঁচকি ওঠে কেন? বড় অসুখের পূর্বাভাস নয় তো? কখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

হেঁচকি এমনিতে সাধারণ শারীরিক সমস্যা, তবে কখনও কখনও তা বিপদের কারণও হয়ে উঠতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২৫ ১৭:০২
Share:

হেঁচকি কখন বিপজ্জনক? ফাইল চিত্র।

যখন তখন হেঁচকি ওঠা কাজের কথা নয়। খেতে গিয়ে হেঁচকি, কথা বলার মাঝে হেঁচকি ওঠা সত্যিই বিরক্তিকর। যত ক্ষণ না কমছে, হিমশিম খেতেই হয়। সব সময়ে যে জল খেলেই হেঁচকি কমে যায়, তা নয়। তখন নানা ধরনের ঘরোয়া টোটকা প্রয়োগ করে দেখা হয়। হেঁচকি এমনিতে সাধারণ শারীরিক সমস্যাই, তবে কখনও কখনও তা বিপদের কারণও হয়ে উঠতে পারে। চিকিৎসকেরা বলেন, মাঝেমধ্যেই হেঁচকি ওঠা, রাতে শুয়ে হেঁচকি, অম্বলে গলা-বুক জ্বালা করতে করতে হেঁচকি উঠে যাওয়া— ভাল লক্ষণ নয়। হেঁচকির বেগ যদি এক দিনের বেশি থাকে, সে ক্ষেত্রে তা কোনও বড় অসুখের পূর্বলক্ষণও হতে পারে।

Advertisement

কেন ওঠে হেঁচকি?

ডায়াফ্রামের অনিয়ন্ত্রিত সঙ্কোচন ও প্রসারণ ঘটলে তখন বাইরে থেকে শরীরে ঢোকা বাতাস গলার কাছে আটকে যায়, যা ভোকাল কর্ডে ধাক্কা দিতে থাকে। ডায়াফ্রাম হল একটি পেশি, যা বক্ষগহ্বরকে উদর থেকে আলাদা করে। শ্বাসপ্রশ্বাসে ডায়াফ্রামের বড় ভূমিকা থাকে। শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের খাঁচা প্রসারিত করতে এবং শ্বাস ছাড়ার সময় সঙ্কুচিত করতে সাহায্য করে তা। যদি এর সঙ্কোচন ও প্রসারণ নিয়ম মেনে না হয়, তখন খাবার বা জল গলায় আটকে গিয়ে বা শ্বাসের বাতাস আটকে গিয়ে হেঁচকি ওঠে।

Advertisement

হেঁচকি ওঠার অনেক কারণ রয়েছে, যেমন— দ্রুত খাবার খেলে বা জল পান করলে, অতিরিক্ত মদ্যপান করলে, মশলাদার খাবার বেশি খেলে, অতিরিক্ত মাত্রায় সোডা বা কার্বোনেটেড পানীয় খেলে হেঁচকি ওঠে। মানসিক চাপও এর কারণ হতে পারে। আবার অ্যাসিড রিফ্লাক্সে যাঁরা ভোগেন, তাঁদেরও এই সমস্যা মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। হেঁচকি বিরক্তিকর মনে হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা ক্ষতিকর নয় এবং নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা গুরুতর কোনও শারীরিক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

হেঁচকি কখন বিপজ্জনক?

৪৮ ঘণ্টার বেশি হেঁচকি একটানা হতে থাকলে বা টানা দু’দিন ধরে মাঝেমধ্যেই হেঁচকি উঠতে থাকলে সতর্ক হতে হবে। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘পার্সিস্ট্যান্ট হিকাপস’। এটি নানা কারণে হতে পারে—

১) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যার কারণে হতে পারে, যেমন ব্রেন স্ট্রোক, মস্তিষ্কের টিউমার, মেনিনজাইটিস বা কোনও স্নায়ুর রোগ হলে ঘন ঘন হেঁচকি উঠতে পারে।

২) পাকস্থলীর সমস্যা হলে, হজম সংক্রান্ত কোনও রোগ হলে বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যায় খাদ্যনালিতে প্রদাহ বেড়ে গিয়ে হেঁচকি উঠতে পারে।

৩) কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ারও পূর্বলক্ষণ হতে পারে হেঁচকি।

৪) কিডনির রোগ বা ডায়াবিটিস শরীরে বাসা বাঁধলে, তার পূর্বলক্ষণ হিসেবে একটানা হেঁচকি উঠতে পারে।

৫) শরীরে টিউমার বাসা বাঁধলে, নির্দিষ্ট কোনও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হেঁচকি উঠতে পারে।

চিকিৎসকের কাছে কখন যাবেন?

হেঁচকির সঙ্গে বুকে ব্যথা, শ্বাস নিতে কষ্ট হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। অনেক সময় হেঁচকি উঠতে উঠতে বমিও হয়ে যায় কারও কারও। যদি দেখেন, বমির সঙ্গে রক্ত বেরোচ্ছে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছে, কথা বলতে ও খাবার গিলতে কষ্ট হচ্ছে, তা হলে দেরি করা ঠিক হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement