গোটা একটা দিন চিনি না খেলে কী হবে? ছবি: ফ্রিপিক।
মাত্র একটা দিন। চিনি ও ময়দা খাওয়া একেবারে বন্ধ করে দিতে পারেন। চা, কফি হোক বা রোজের রান্নায়, একটি দানাও চিনি দেওয়া যাবে না। ময়দার কোনও খাবারও খাওয়া যাবে না। বিস্কুটও নয়। গোটা একটা দিন এ ভাবে কাটিয়ে দিতে পারলে, শরীরে যা যা বদল আসবে তা দেখলে রীতিমতো চমকে যাবেন।
ওজন বেশি, রক্তে উচ্চ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড থাকলে অন্তত এক দিনের জন্য মিষ্টি ও ময়দার খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেখুন। ফল পাবেন হাতেনাতে। পুষ্টিবিদেরা বলেন, এক মাসের জন্য চিনি খাওয়া বন্ধ করলে অনেক উপকার হবে। তবে হঠাৎ করে চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলেও কাজটা কিন্তু মোটেও সহজ নয়। মদ, সিগারেট, চায়ের মতো একেবারে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিলে তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপর। তাই গোটা প্রক্রিয়াটিই করতে হবে ধাপে ধাপে। শুরুতে ২৪ ঘণ্টা করে অভ্যাস করতে হবে।
শরীরে কী কী বদল আসবে?
রক্তে শর্করা কমবে
চিনি বা ময়দা মানে কিন্তু মিষ্টি জাতীয় খাবারও খাওয়া যাবে না। যেমন কেক, পেস্ট্রি, চিনি দেওয়া শরবত, প্যাকেটবন্দি ফলের রস, বিস্কুট, কুকিজ়, বার্গার এই সব খাবারও পড়বে। এগুলি না খেলে ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় থাকবে।
শরীরে অতিরিক্ত জল জমবে না
চিনি বা ময়দা দেওয়া খাবার না খেলে শরীরে অতিরিক্ত জলও জমবে না। সাধারণত গ্লুকোজ় যখন গ্লাইকোজ়েন রূপে লিভার ও পেশিতে জমা হয়, তখন প্রতি গ্রাম গ্লাইকোজ়েনের সঙ্গে ৩-৪ গ্রাম জলও জমা হয়। ২৪ ঘণ্টা চিনি না খেলে, এই জল জমার পরিমাণও কমবে। ফলে কিডনি থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বেরিয়ে যাবে। এতে পেট ফাঁপা, ফেট ফোলা, অম্বলের সমস্যা কমবে।
সুগার ক্রেভিং কমবে
সর্বক্ষণ খিদে পাওয়া বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা কমবে। রোজ বেশি পরিমাণে মিষ্টি জাতীয় খাবার ও কার্বোহাইড্রেট খেলে ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়ে। এর ফলে আরও কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার ইচ্ছা হয়। আর যত ক্ষণ না পর্যন্ত মিষ্টি খাচ্ছেন, স্বস্তি হবে না। যদি মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেন, তা হলে এই ইচ্ছাও চলে যাবে ধীরে ধীরে।
প্রদাহ কমবে
চিনি ছাড়তে পারলে প্রদাহ কমাতেও সাহায্য হয়। হার্টের রোগের ঝুঁকিও বাড়ে বেশি চিনি খেলে। হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে চিনি খাওয়া বন্ধ করে দিতে পারেন।
কাজে উৎসাহ আসবে
ডোপামিনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। এতে মনমেজাজ ভাল থাকবে। সেরোটোনিন, ডোপামিন, নরএপিনেফ্রিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারগুলি মানসিক স্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এদের অভাব মানেই দুশ্চিন্তা বাড়ে, উদ্বেগ বাড়ে, কাজে উৎসাহ চলে যায়। অবসাদও আসে। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে এই নিউরোট্রান্সমিটারগুলির ক্ষরণ কমতে থাকে। তাই মিষ্টি খাওয়া বন্ধ করলেই দেখবেন, কর্মক্ষমতা এক বারে অনেকটা বেড়ে যাবে। শরীর ও মন সতেজ হবে।