হাত-কাঁধের ব্যথা দূর হবে চেয়ারে বসেই! চিত্রাঙ্কন: শৌভিক দেবনাথ।
সারা দিন ল্যাপটপের সামনে ঘাড় গুঁজে কাজ। দ্রুত কাজ শেষ করার চাপে মাথা তোলার ফুরসত থাকে না। একটানা কাজ করলে ঘাড়-কাঁধে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক। দিনের পর দিন ৮-৯ ঘণ্টা একটানা বসে কাজে কাঁধ, ঘাড় ও হাতের পেশির সক্রিয়তা কমে। কাঁধের পেশি এমন শক্ত হয়ে যায় যে, নাড়াচাড়া করার উপায় থাকে না। ফলে ফ্রোজ়েন শোল্ডারের সমস্যা দেখা দেয় বেশির ভাগেরই। একে তো কাঁধে ব্যথা, তার উপরে সর্ব ক্ষণ মাউস ধরে থাকার কারণে হাতের কব্জি ও তালুতেও নিদারুণ ব্যথাবেদনা ভোগায়। কিছু ধরতে গেলেই হাত কাঁপে, হাতের শিরায় টান ধরে। ব্যথা কমানোর মলম, স্প্রে ব্যবহারে সাময়িক আরাম হলেও লাভ খুব একটা হয় না। ব্যথানাশক ওষুধ খেলে আবার হিতে বিপরীত হয়। তা হলে উপায়?
যোগ প্রশিক্ষকেরা বলছেন, সহজ কিছু যোগাসনেই ব্য়থাবেদনা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। যোগাসন মানেই জটিল বা কঠিন কোনও পদ্ধতি নয়। যাঁরা সদ্য শুরু করতে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সহজ কিছু স্ট্রেচিং আছে, যা চেয়ার বসেই অভ্যাস করা যায়। যেমন, ঊর্ধ্ব হস্তাসন। নিয়মিত অভ্যাসে ঘাড়, কাঁধ ও হাতের ব্যথা দূর হবে অল্প দিনেই।
কী ভাবে করবেন?
১) চেয়ারে পা ঝুলিয়ে সোজা হয়ে বসুন। পিঠ টানটান থাকবে। পা মাটিতে ঠেকে থাকবে। চেয়ারে হেলান দিয়ে বসলে হবে না।
২) শ্বাস নিতে নিতে দুই হাত কানের পাশ দিয়ে মাথার উপরে তুলুন। এ বার দুই হাত জড়ো করে মাথার উপরেই নমস্কারের ভঙ্গি করুন।
৩) ধীরে ধীরে মাথা তুলে হাতের দিকে তাকাতে হবে। ৩০ সেকেন্ড ওই ভাবে থাকুন।
৪) শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে দুই হাত নামিয়ে নিন। মাথাও সোজা করুন।
৫) এই ভাবে ৩০ সেকেন্ড করে ৫-৭ সেটে অভ্যাস করতে হবে।
৬) খেয়াল রাখবেন, প্রতি বার হাত নামানোর পরে অন্তত ১০-২০ সেকেন্ড চুপ করে বসে গভীর ভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে। তার পর আবার প্রক্রিয়াটি শুরু করতে হবে।
উপকারিতা:
১) কাঁধের পেশির সক্রিয়তা বাড়বে। ফ্রোজ়েন শোল্ডারের সমস্যা থাকলে তা দূর হবে।
২) হাতের পেশি জোর বাড়বে, বাতের ব্য়থা কমবে।
৩) স্পন্ডিলাইটিসের কারণে যাঁদের ঘাড় ঘোরাতে সমস্যা হয়,তাঁরা আসনটি অভ্যাস করলে আরাম পাবেন।
৪) কোমর থেকে বাহুমূল প্রসারিত হয়ে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ফলে শরীরের অতিরিক্ত ক্লান্তি ভাব কমে যায়।
৫) হাতের অতিরিক্ত মেদ ঝরে যাবে।
৬) নিয়মিত আসনটি অভ্যাস করলে মনঃসংযোগ বাড়বে, উদ্বেগ কমবে।
কারা করবেন না?
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে আসনটি করবেন না।
মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে প্রশিক্ষকের পরামর্শ ছাড়া আসনটি করবেন না।
স্নায়ুর রোগ থাকলে বা তার জন্য ওষুধ খেতে হলে আসনটি না করাই ভাল।