গুঁড়ো দুধে কী কী ক্ষতি হতে পারে শিশুর? ছবি: ফ্রিপিক।
গরুর দুধের বদলে অনেক বাবা-মা শিশুকে গুঁড়ো দুধ খাওয়ান। বাজারে এখন অনেক ধরনের গুঁড়ো দুধ বেরিয়ে গিয়েছে। এই সব দুধের বিজ্ঞাপনে ফলাও করে স্বাস্থ্যের উন্নতির কথা লেখা থাকে। তবে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, দোকান থেকে কেনা গুঁড়ো দুধ কখনওই শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। কোথাও ঘুরতে গেলে অথবা ব্যস্ততার সময়ে চটজলদি খাওয়ানো যাবে ভেবে অনেক অভিভাবকই গুঁড়ো দুধ কিনে রাখেন। তবে এই ধরনের দুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক। দীর্ঘ সময় ধরে খাওয়াতে থাকলে শিশুর ডায়াবিটিসের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
গুঁড়ো দুধে এমন কিছু প্রিজ়ারভেটিভ থাকে যা শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফার্মা রিসার্চ অ্যান্ড হেল্থ সায়েন্স’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, গুঁড়ো দুধে অক্সিস্টেরল থাকে যা থেকে শিশুর হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তা ছাড়া এই ধরনের দুধ বহু দিন ধরে প্যাকেটবন্দি থাকে। ফলে এতে জীবাণু সংক্রমণ ঘটাও অস্বাভাবিক নয়। এমনও দেখা গিয়েছে, গুঁড়ো দুধ থেকে ডায়েরিয়া বা পেটের সংক্রমণে ভুগেছে শিশু।
এই বিষয়ে পাবমেড থেকেও গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। গবেষকেরা জানান, গরুর দুধে যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে তা এই দুধে থাকে না। কারণ গুঁড়ো দুধকে প্রক্রিয়াজাত করতে এমন উপাদান মেশানো হয়, যা শরীরের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। স্বাদ বাড়াতে গুঁড়ো দুধে বেশি পরিমাণে চিনিও মেশানো থাকে। তাই দীর্ঘ সময় ধরে এমন দুধ খেলে শিশুর টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
গুঁড়ো দুধের বদলে কী খাওয়াতে পারেন?
শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য, গুঁড়ো দুধের বদলে চাল-ডাল-আলু দিয়ে হালকা করে তৈরি খিচুড়ি সামান্য ঘি বা মাখন দিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে শিশুকে। সুজি, দুধের সঙ্গে চালের গুঁড়ো সিদ্ধ করে মিশিয়ে, দুধের সঙ্গে রুটির পাতলা অংশ ভিজিয়েও খাওয়াতে পারেন। গরুর দুধে অ্যালার্জি হলে কাঠবাদামের দুধও খাওয়ানো যেতে পারে। পাতলা করে রান্না ডালিয়াও ভাল খাবে শিশু। শুরুতে অল্প করে নুন দিয়ে রান্না করতে হবে। চিনির ব্যবহার না করাই ভাল। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট যাতে সঠিক পরিমাণে থাকে, সেটা দেখতে হবে। ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত শিশুর দিনে ৬৫০ কিলো ক্যালোরি দরকার। তার মধ্যে ৪২০ কিলো ক্যালোরি আসবে মায়ের দুধ থেকে, বাকিটা পরিপূরক আহার থেকে। শিশুকে নানা রকম মরসুমি সব্জি ও ফলও খাওয়াতে হবে।