লিভার রিফ্লাক্স কী, কী কী লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাবেন? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভারী খাওয়াদাওয়া করেই ঘরে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লেন! এ দিকে, চোখ বোজার কিছু ক্ষণ পরেই শুরু হল অস্বস্তি। আইঢাই ভাব। কী করবেন বুঝতে না পেরে জল খেলেন। তাতে সমস্যা আরও বাড়ল। বুকজ্বালা করা, চোঁয়া ঢেকুরে হিমশিম খেতে হল। চিকিৎসকেরা বলেন, অম্বল ও গলা-বুক জ্বালার সমস্যা যদি দীর্ঘমেয়াদি হয়ে যায়, তা হলে তাকে আর সাধারণ গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বলা যায় না। সেটি হতে পারে ‘জিইআরডি’, অর্থাৎ ‘গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজ়িজ়’-এর লক্ষণ, যাকে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বলা হয়। এরই একটি পর্যায় হল ‘লিভার রিফ্লাক্স’, যখন লিভার থেকে নিঃসৃত পিত্ত খাদ্যনালি হয়ে উপরে উঠে আসতে থাকে।
লিভার রিফ্লাক্সকে ‘বাইল রিফ্লাক্স’ বলা হয়। এই সমস্যা অনেকেরই থাকে। লক্ষণ চেনা নেই বলে তার সঠিক চিকিৎসা হয় না। ফলে রোগ ভিতরে ভিতরে বাড়তে থাকে এবং তা থেকে মেটাবলিক সিনড্রোম ও হায়াটাস হার্নিয়ার সমস্যাও হতে পারে। এতে হজমের প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে, পাকস্থলী ও লিভার থেকে অম্ল রস ক্রমাগত উপরে উঠে আসতে থাকে। এর থেকে আলসারের লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
কী কী লক্ষণ দেখলে চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
বাইল রিফ্লাক্সের লক্ষণগুলি প্রায় অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতোই, তবে কারও কারও ক্ষেত্রে আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন, কিছু খেলে গলা, বুকে জ্বালা হবে। ভাজাভুজি না খেলেও অম্বল হবে। পেট ফাঁপার সমস্যা বাড়বে। সব সময়েই মনে হবে পেট ভার, খিদে কমে যাবে।
পিত্তরস খাদ্যনালি দিয়ে গলায় উঠে এলে গলা জ্বালা, গলায় ব্যথা, বমি বমি ভাব হবে। কিছু ক্ষেত্রে কণ্ঠস্বরেরও পরিবর্তন হতে পারে।
বাইল রিফ্লাক্সের কারণে আলসার হতে পারে, এতে পেটে ব্যথা, জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হবে। ওজন কমে যেতে পারে।
চিকিৎসা কী?
ওজন কমানো জরুরি, তার জন্য খাওয়াদাওয়ায় রাশ টানতে হবে। ভাজাভুজি, তেলমশলা দেওয়া খাবার খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
প্রক্রিয়াজাত কোনও রকম খাবার খাওয়া চলবে না, নরম পানীয়, অ্যালকোহল এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত ধূমপানও সমস্যা তৈরি করতে পারে।
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার ঘণ্টাদুয়েক আগে খাবার খেয়ে নিতে হবে। রাতে গরম দুধ, চা বা কফি খাওয়া চলবে না।
লিভার রিফ্লাক্স থেকে হার্নিয়ার সমস্যা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার করার প্রয়োজন হতে পারে।