কী এই ‘মাইক্রো-ওয়াকিং’? কাদের জন্য সুবিধাজনক? ছবি: ফ্রিপিক।
সকালে উঠেই হনহন করে হাঁটতে হবে, তা একেবারেই নয়। সারা দিনে গুনে গুনে ১০ হাজার পা হাঁটলেও ওজন কমবে, তা-ও নয়। হাঁটুতে ব্যথা, পা ফোলার সমস্যা নিয়ে যাঁরা হাঁটতে পারছেন না, তাঁদের জন্য খুবই সুবিধাজনক ‘মাইক্রো-ওয়াকিং’। বিশেষ করে বয়স্কদের জন্য হাঁটার এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর।
কী এই ‘মাইক্রো-ওয়াকিং’?
হাঁটাহাঁটি করে ওজন কমানোর নানা পন্থা নিয়ে এখন চর্চা হচ্ছে বেশি। কখন হাঁটবেন, কতটা হাঁটবেন, কী নিয়মে হাঁটবেন— সে নিয়ে নানা মতামত দিচ্ছেন ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা। এর মধ্যেই নতুন এক পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে তা হল ‘মাইক্রো-ওয়াকিং’। অর্থাৎ একটানা হাঁটা নয়, ছোট ছোট পদক্ষেপে বিরতি নিয়ে হাঁটা। এই বিষয়ে ফিটনেস প্রশিক্ষক অনুপ আচার্যের মত, মাইক্রো-ওয়াকিংয়ে টানা ১০ মিনিট হাঁটতে হয় না। ৩০ সেকেন্ড বা ৪০ সেকেন্ড হেঁটে, ২-৩ মিনিটের বিরতি নিন। আবার হাঁটুন। যাঁরা কোনওরকম শরীরচর্চা করেন না অথবা শারীরিক কসরতও কম হয়, তাঁদের জন্য বিরতি নিয়ে হাঁটার পদ্ধতি খুবই উপকারী হতে পারে।
মাইক্রো-ওয়াকিংয়ে হনহন করে হাঁটতে হয় না। ধীরে সুস্থে বিরতি নিয়ে হাঁটলেই হবে। তবে বিরতির সময়টুকু যেন ১০ বা ১৫ মিনিট না হয়ে যায়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
মাইক্রো-ওয়াকিং নিয়ে পাবমেড থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, হার্টের রোগ থাকলে বা হাঁপানির সমস্যা থাকলে, একটানা বেশি ক্ষণ হাঁটা যায় না। সে ক্ষেত্রে মাইক্রো-ওয়াকিং ভাল।
হাঁটারও কিন্তু অনেক নিয়ম আছে। হাঁটার গতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার হলে তাকে ‘পাওয়ার ওয়াকিং’ বলা হয়। এই ধরনের হাঁটায় হৃদ্যন্ত্রের গতি বেড়ে যায়, ক্যালোরিও দ্রুত ক্ষয় হয়। আর বিরতি নিয়ে হাঁটলে শ্বাসের গতি ঠিক থাকে, হাঁটতে গিয়ে ক্লান্তি ভাব আসে না। ফলে বেশি সময় ধরে হাঁটা যায়। হাঁটলে ‘হ্যাপি’ হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যা শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভাল রাখে। খেয়াল রাখতে হবে, মাইক্রো-ওয়াকিংয়ের সময়ে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মিলিয়ে পা ফেলতে হবে। শ্বাস নেওয়ার সময় ৪ পা ফেলুন, শ্বাস ছাড়ার সময় আরও ৪ পা। ধীরে ধীরে শ্বাস- প্রশ্বাসের লয় কমলে প্রতি শ্বাসে পদক্ষেপের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় শারীরিক কসরতও হবে, মনঃসংযোগও বাড়বে।