Heart Attack Vs Cardiac Arrest

হার্ট অ্যাটাক আর ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ কিন্তু এক নয়, দুইয়ের মধ্যে তফাত কোথায়? কোনটির কী লক্ষণ?

হৃদ্‌যন্ত্রের দুই সমস্যাই প্রাণঘাতী, তবে হার্ট অ্যাটাকে রোগীকে বাঁচানোর কিছু সময় অন্তত পাওয়া যায়। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আচমকা এসে সব তছনছ করে দিয়ে চলে যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩৪
Share:

হার্ট অ্যাটাক ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মধ্যে তফাত কোথায়? ছবি: ফ্রিপিক।

হার্ট অ্যাটাককে অনেকেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ভেবে বসেন। দুইয়ের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য আছে। লক্ষণও আলাদা। হৃদ্‌যন্ত্রের দুই সমস্যাই প্রাণঘাতী, তবে হার্ট অ্যাটাকে রোগীকে বাঁচানোর কিছু সময় অন্তত পাওয়া যায়। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট আচমকা এসে সব তছনছ করে দিয়ে চলে যায়। রোগীকে বাঁচানোর সময় অনেক ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় না।

Advertisement

কেন হয় হার্ট অ্যাটাক?

হার্টে রক্ত চলাচল যদি বন্ধ হতে থাকে, তা হলে হৃদ্‌পেশির সঙ্কোচন ও প্রসারণে সমস্যা হয়। হার্ট তখন ঠিকমতো পাম্প করে রক্ত সঞ্চালন করতে পারে না। তখনই হয় হার্ট অ্যাটাক। আবার হৃৎপিণ্ডের করোনারি ধমনীর মধ্যে যদি কোনও কারণে ব্লকেজ হয়ে যায়, তখনও রক্ত চলাচল বাধা পায়। ফলে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে থাকে। রোগীর বুকে ব্যথা হয়, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, হার্ট ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ কমে গিয়ে জ্ঞান হারাতে পারেন রোগী। এই অবস্থাই হল হার্ট অ্যাটাক। তবে হার্ট পুরোপুরি অকেজো হয়ে যায় না, তার কার্যক্ষমতা কমে আসে মাত্র। সঠিক সময়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে বাঁচানো সম্ভব।

Advertisement

কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কতটা আলাদা?

হৃৎপিণ্ড হঠাৎ শরীরে রক্ত সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়। হৃৎপিণ্ড রক্ত পাম্প করা বন্ধ করে দিলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছোতে পারে না। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, এবং শেষ পর্যন্ত সংজ্ঞা হারান রোগী। এ ক্ষেত্রে হার্ট পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে, মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ আচমকাই থেমে যেতে পারে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রোগী জ্ঞান হারাতে পারেন বা কোমায় চলে যেতে পারেন। কাজেই কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে রোগীকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে পড়ে।

কাদের কোনটি হতে পারে, লক্ষণই বা কী কী?

হার্ট অ্যাটাক নীরবে আচমকা হতে পারে, যাকে ‘সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক’ বলে। তবে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার এক মাস আগে থেকেই শরীর নানা লক্ষণ দেখিয়ে সাবধান করতে থাকে। যেমন বুকের মাঝে একটা চাপা ব্যথা হবে, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘কমপ্রেসিভ চেস্ট পেন’। সেই সঙ্গে প্রচুর ঘাম হবে। জামাকাপড় ভিজে যেতে পারে ঘামে। ব্যথা শুধু যে বুকে হবে তা নয়, অনেকেরই বুকে ব্যথা হয় না। তবে বাঁ দিকের চোয়াল, কাঁধ এবং হাতে ব্যথা হতে পারে। কারও আবার পিঠের দিকেও এই ব্যথা ছড়িয়ে যেতে পারে। রাতে শুয়ে দরদর করে ঘাম হবে। ঠান্ডা ঘরে বসেও গরম লাগবে।

উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে, রক্তচাপ বেশি হলে, অতিরিক্ত ধূমপান ও মদ্যপান করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। পাশাপাশি মানসিক চাপ, অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস, ডায়াবিটিসও হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণ আগে থেকে বোঝা যায় না। একাধিক বার হার্ট অ্যাটাক, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, ওষুধের ওভারডোজ় এবং কিছু ক্ষেত্রে জিনগত কারণে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতে পারে। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে রোগীর হার্টবিট বন্ধ হয়ে যাবে, নাড়ির গতি পাওয়া যাবে না, শ্বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

দুইয়ের ক্ষেত্রে রোগীকে ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। দেরি করা মানেই বিপদ ঘটতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement