Cucumber vs Bottle Gourd Raita

গরমে রায়তা খাচ্ছেন! শসার বদলে লাউয়ের কুচি দিলে কি তা বেশি উপকার? কী বলছেন পুষ্টিবিদ?

এ কথা ঠিকই যে, লাউ দিয়ে বানানো রায়তা বঙ্গে বিশেষ প্রচলিত নয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র, গুজরাতে এই রায়তা বানানোর চল আছে। লাউ দিয়ে রায়তা খাওয়ার প্রচলন রয়েছে পঞ্জাবেও। কিন্তু শসার রায়তার থেকে কি তা বেশি উপকারী?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৫ ১৯:১৭
Share:

লাউয়ের রায়তা না শসার রায়তা—কার পাল্লা ভারী? ছবি : সংগৃহীত।

গরমে পেট ঠান্ডা রাখতে রায়তা খান অনেকেই। দইয়ের মধ্যে শসা, টম্যাটো, পেঁয়াজ, লঙ্কাকুচি আর ভাজা মশলা দিয়ে মাখানো সেই রায়তা যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর বলেও মনে করেন পুষ্টিবিদেরা।

Advertisement

কেন স্বাস্থ্যকর? দই আর শসা— এক, উভয়েই শরীরকে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। দুই, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এবং তিন, পাকস্থলীকে ঠান্ডা রেখে বদহজমের সমস্যা কমায়। কিন্তু রায়তার ওই চেনা উপকরণ যদি বদলে দেওয়া হয়, যদি শসার বদলে লাউয়ের কুচি দিয়ে বানানো হয় রায়তা, তবে কি সেটি আরও বেশি স্বাস্থ্যকর হবে?

এ কথা ঠিক, লাউ দিয়ে বানানো রায়তা বঙ্গে বিশেষ প্রচলিত নয়। কিন্তু মহারাষ্ট্র, গুজরাতে এই রায়তা বানানোর চল আছে। মহরাষ্ট্রে লাউ দিতে বানানো রায়তাকে বলা হয় ‘দুধি কা রায়তা’। গুজরাতে বলা হয় ‘ঘিয়া রায়তা’। তবে লাউ দিয়ে রায়তা খাওয়া প্রচলন সবচেয়ে বেশি রয়েছে পঞ্জাবে। সেখানে ওই রায়তা পরিচিত ‘লউকি কি রায়তা’ নামে!

Advertisement

সাধারণত লাউয়ের রায়তা বানানোর জন্য লাউকে কুরে নিয়ে তাকে সেদ্ধ করে জল ঝরিয়ে দইয়ে মিশিয়ে নেওয়া হয়। সঙ্গে কাঁচা লঙ্কাকুচি, ভাজা জিরের গুঁড়ো, সামান্য গরম মশলা আর বিটনুন মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় লাউয়ের রায়তা। কিন্তু বাংলার শসার রায়তার থেকে লাউয়ের রায়তার উপকারিতা কি একটু হলেও বেশি? পুষ্টিবিদ শ্রেয়া চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, একটু নয়, শসার রায়তার থেকে পুষ্টিগুণে লাউয়ের রায়তা বরং অনেকটাই এগিয়ে। কেন, তার ব্যখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

শ্রেয়া জানাচ্ছেন, শসা খাওয়া ভাল। গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতেও সাহায্য করে। কারণ শসায় জলের ভাগ অনেকটাই বেশি। কিন্তু শসার পুষ্টিগুণ নিয়ে বলার মতো বিশেষ কিছু নেই। অন্য দিকে, লাউ পুষ্টিগুণে অনেক এগিয়ে এবং এটি শরীরের নানা উপকারেও লাগে।

কী কী উপকারে লাগে?

১। লাউয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। শ্রেয়া বলছেন, ‘‘ওই পটাশিয়াম যেমন শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে, তেমনই রক্তে ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। দু’টি বিষয়ই হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

২। লাউ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে বলে জানাচ্ছেন শ্রেয়া। তিনি বলছেন, ‘‘যাঁদের ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্যও লাউ খাওয়া ভাল। কারণ লাউয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (যার উপর রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বে়ড়ে যাওয়া নির্ভর করে) অনেক কম।’’

৩। লাউ শরীরে প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে। ফলে শরীরে ব্যথাজনিত সমস্যা থাকলে, তা কমাতে সাহায্য করে লাউ।

৪। ভিটামিন সি এবং অন্য অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও লাউয়ে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। শ্রেয়া বলছেন, ‘‘এই ধরনের সব্জিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস ক্যানসার প্রতিরোধকও হয়।’’

৫। এ ছাড়াও যদি কেউ ওজন কমাতে চান, তবে দই দিয়ে লাউয়ের রায়তা একটি সম্পূর্ণ আহার হতে পারে বলেও মনে করেন শ্রেয়া। তিনি বলছেন, ‘‘লাউয়ে রয়েছে একাধিক ভিটামিন এবং খনিজ। আর আছে ফাইবার। তাই খেলে অনেক ক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। আবার এতে ক্যালোরিও কম। তাই যাঁরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছেন, তাঁরা সারা দিনে এক বার দই দিয়ে লাউয়ের রায়তা খেতে পারেন। তাতে তাঁদের ওজনও কমতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement