সবার জন্য নয় চিয়া! ছবি: সংগৃহীত।
ইন্টারনেটের দৌলতে স্বাস্থ্য ভাল রাখার নানা টোটকা এখন সাধারণ মানুষের হাতের মুঠোয়। রোগ এসে কাবু করার আগেই রোগকে দূরে রাখতে তৎপর হচ্ছেন মানুষ। চেষ্টা করছেন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে। কারণ, সেখানেই হাজারও রোগের বীজ লুকিয়ে। আর এই ওজন কমানোর চেষ্টায় আগুপিছু না ভেবেই অনেকে খেতে শুরু করছেন চিয়াবীজ।
কারণ চিয়াবীজ তকমা পেয়েছে নতুন সুপারফুডের। এমন খাবার যা স্বাস্থ্য ভাল রাখার পাশাপাশি ওজনও রাখবে বশে। কিন্তু সত্যিই কি চিয়া সবার জন্য ভাল? পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর বলছেন, ‘‘চিয়া চোখ বন্ধ করে বেছে নেওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা উচিত। কারণ চিয়া সবার শরীরে সমান প্রভাব ফেলবে না। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিয়াবীজ নিয়মিত খেতে থাকলে বিপদ বাড়তে পারে। এমনকি, তৈরি হতে পারে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সি-ও।’’
কারা চিয়াবীজ খাবেন না?
পুষ্টিবিদ বলছেন, চার ধরনের মানুষের চিয়াবীজ এড়িয়ে চলাই ভাল। বা খেলেও অতি অল্প পরিমাণে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই খাওয়া উচিত।
১। যাঁদের হার্টের সমস্যা রয়েছে এবং রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান, তাঁদের চিয়াবীজ না খাওয়াই ভাল। এমনকি, যাঁরা উচ্চরক্তচাপের রোগী এবং প্রেসারের ওষুধ খান, তাঁদেরও চিয়াবীজ এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ চিয়া বীজে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। যা রক্তের ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি ব্লাড থিনার জাতীয় ওষুধ খেলে রক্তের ঘনত্ব কমে শরীর থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার ঝুঁকি বাড়বে। অথবা রক্তচাপ এক ধাক্কায় বিপজ্জনক ভাবে কমে যেতে পারে।
২। যাঁদের পেটের সমস্যা রয়েছে, বিশেষ করে যাঁদের অতীতে গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল সমস্যা হয়েছে তাঁদের চিয়াবীজ বুঝে শুনে খাওয়া উচিত বলে মনে করেন রমিতা। তিনি বলছেন, ‘‘চিয়াবীজ থেকে ব্লোটিং বা পেটফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য এমনকিস তলপেটে ব্যথা হওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। তাই যাঁদের হজম ক্ষমতা দুর্বল, তাঁদের চিয়াবীজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।’’
৩। যে সব মায়েরা সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন, তাঁদেরও চিয়াবীজ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন পুষ্টিবিদ। তিনি জানাচ্ছেন, সন্তান জন্মের পরে মায়েরা যখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তখন তাঁদের প্রত্যেকের শরীরের আলাদা আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। সেই সময় চিয়াবীজের মতো একটি খাবার খাওয়া শুরু করলে তার উল্টো প্রভাব পড়তে পারে। তাই এ ব্যাপারে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিয়ে তবেই খাওয়া উচিত।
৪। অনেকের বাদামে অ্যালার্জি থাকে। তাঁদের ক্ষেত্রে একই অ্যালার্জি হতে পারে চিয়াবীজ খেলেও। যার ফলে ত্বকে র্যাশ বেরনো, চুলকানি এমনকি, শ্বাসকষ্টের সমস্যাও হতে পারে।