বৃষ্টির দিনে কেন টক দই খাওয়া ঠিক নয়? ছবি: ফ্রিপিক।
শরীরের জন্য প্রোবায়োটিক উপকারী। আর প্রোবায়োটিকের জন্য টক দই খেতেই বলেন পুষ্টিবিদেরা। টক দইয়ের গুণ অনেক। তবে তা খাওয়ার নিয়ম আছে। বিশেষ করে, বৃষ্টির দিনে দই খেতে বারণই করা হয়। আগেকার সময়ে মা-ঠাকুরমারাও বর্ষার দিনে দই খেতে মানাই করতেন। তার কিছু কারণও আছে। রোজের খাওয়ার পরে টক দই খাওয়ার অভ্যাস যাঁদের আছে, তাঁদের জেনে রাখা ভাল। দই যদি খেতেই হয়, তা হলে কিছু নিয়ম মেনে খেতে হবে।
বর্ষায় কেন দই খাওয়া ঠিক নয়?
টক দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান লিভার সুস্থ রাখে। তেমনই কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে দই খেলে। অনেকেই দুধ খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখতে পারেন দইয়ের উপর। টক দইয়ের ‘ফারমেন্টেড এনজ়াইম’ খাবার হজমের জন্য কার্যকর। কিন্তু বর্ষার সময়ে তা হয় না। এই সময়ে বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার মাত্রা বেশি থাকে, ফলে দইয়ের ‘এনজ়াইম’ হতে অনেক সময় লাগে। সে কারণে এই সময়ে দই বেশি খেলে বদহজমের সমস্যা হতে পারে। পেট ভার, পেট ফাঁপা, অম্বলের সমস্যাও হতে পারে। গ্যাস-অম্বল বা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা যাঁদের আগে থেকেই রয়েছে, তাঁদের এই সময়ে দই খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়।
দই পেট ঠান্ডা রাখে। কিন্তু বৃষ্টির দিনে তাপমাত্রা এমনিতেই কমে যায়। তাই এই সময়ে বেশি দই খেলে সর্দি-কাশি, গলা ব্যথার সমস্যা হতে পারে। অনেকেরই ঠান্ডা লাগার ধাত বেশি থাকে। আবার সাইনাস বা টনসিলের সমস্যাও থাকে। তেমন হলে, দই না খাওয়াই ভাল।
বর্ষাকালে জলবাহিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। যদি দই তৈরির দুধ বিশুদ্ধ না হয় বা দই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়, তা হলে সেটি সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
সন্তানকে স্তন্যপান করাচ্ছেন এমন মায়েরা বা অন্তঃসত্ত্বাদের এই সময়ে টক দই না খাওয়াই ভাল। বর্ষার সময়ে শিশুদের ভুলেও দই খাওয়াবেন না।
দই কখন খাবেন ও কী ভাবে?
দিনের বেলা দই খাওয়াই সবচেয়ে ভাল। এবং দুপুরে খাওয়ার পরেই খেতে পারেন দই। তবে সবচেয়ে ভাল হয় যদি দিনের দু’টি খাবারের মাঝে দই খাওয়া যায়।
রাতে দই খাওয়া একেবারেই উচিত হবে না। দইয়ে থাকে ‘হিস্টামিন’ নামক উপাদান। এই পদার্থটি কিন্তু মিউকাসের জন্ম দেয়। তাই রাতে দই খেলে সর্দিকাশির সমস্যা বেশি দেখা দেয়। সে দিক বিচার করে রাতে দই না খাওয়াই ভাল।
লেবু বা সাইট্রাস জাতীয় ফলের সঙ্গে ভুলেও টক দই খাবেন না। টক ফলের সঙ্গে তো বটেই, কোনও ফলের সঙ্গেই দই না খাওয়াই ভাল।
বর্ষার সময়ে দই খেতে হলে তাতে কিছু মশলা মিশিয়ে নিতে পারেন। গোলমরিচ, শুকনো খোলায় ভাজা জিরে, বিট নুন মিশিয়ে দই খেলে হজম দ্রুত হবে।
দই খাওয়ার অভ্যাস থাকলে শসা, পেঁয়াজের সঙ্গে মিশিয়ে রায়তা বানিয়ে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই দুপুরের খাওয়ার পরে। খালি পেটে দই খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা আরও বাড়বে।