Side-effects of nose picking

সুখ যখন অসুখের কারণ! নাক খোঁটার অভ্যাসের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক বিপদ

অনেকেই হয়তো জানেন না, চিকিৎসা বিজ্ঞানে নাক খোঁটার অভ্যাসের বেশ খটমটে একটা নাম রয়েছে—‘রাইনোটিলেক্সোম্যানিয়া’। চিকিৎসকদের মতে, নাক খোঁটার অভ্যাস যদি নেশার পর্যায়ে পৌঁছয়, তবে তা বেশ বিপদের।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:২২
Share:

নাক খোঁটায় লুকিয়ে রয়েছে মারাত্মক অসুখের বিপদ। ছবি: এআই।

আড়ালে হোক বা প্রকাশ্যে, নাক খোঁটার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। কখনও কোনও অস্বস্তির কারণে নাকে আঙুল দেন কেউ। আবার অনেক সময় অভ্যাসবশে আঙুল চলে যায় নাকের ভিতর। অনেক সময় আবার অন্যমনস্ক হয়ে স্থান-কালের খেয়ালও থাকে না। সেই কীর্তি সকলের নজরে পড়ে গেলে অস্বস্তিতে পড়তে হয়। বড়দের পাশাপাশি ছোটদেরও এমন প্রবণতা থাকে। আর সেই ‘বদভ্যাস’ ছাড়তে শাসন করা বড়দের অনেকের কাছেই নাকে আঙুল ঢোকানো আসলে মুদ্রাদোষ।

Advertisement

অনেকেই হয়তো জানেন না, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই কর্মের বেশ খটমটে একটা নাম রয়েছে—‘রাইনোটিলেক্সোম্যানিয়া’। চিকিৎসকদের মতে, নাক খোঁটার অভ্যাস যদি নেশার পর্যায়ে পৌঁছায় তবে তা বেশ বিপদের। কেউ কেউ নাক খুঁটে এমন আরাম পান যে, তা নেশার পর্যায়ে চলে যায়। তাঁরা ক্রনিক ‘রাইনোটিলেক্সোম্যানিয়া’য় আক্রান্ত বলে ধরা হয়।

অনেক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই অভ্যাস আসলে ‘অবসেসিভ-কমপালসিভ ডিজ়অর্ডার’-এর অন্তর্গত। তবে চিকিৎসকরা বলেন, খোঁটার কারণে নাকের মধ্যে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে থাকে। এই রোগটির নাম ‘স্টেফিলোক্সাস অরিয়াস’। অনবরত নাক খুঁটলে অনেক সময়ে রক্তপাতও ঘটতে পারে। যা খুবই বিপজ্জনক। নাকের মাধ্যমে এই ব্যাক্টেরিয়াগুলি মস্তিষ্কের কোষগুলির উপরেও প্রভাব ফেলে। রোজ নাকে আঙুল ঢোকানোর অভ্যাস ডেকে আনতে পারে অ্যালঝাইমার্স ও ডিমেনশিয়ার মতো রোগ। আঙুলের মাধ্যমে একটি বিশেষ ব্যাক্টেরিয়া পৌঁছে যেতে পারে মাথায়। আর তা থেকেই তৈরি হতে পারে স্মৃতিভ্রংশের সমস্যা। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ব্যাক্টেরিয়াটির নাম ক্ল্যামাইডিয়া নিউমোনি। এই ব্যাক্টেরিয়া থেকে নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। বিজ্ঞানীদের দাবি, এই ব্যাক্টেরিয়া নাকের ভিতরে থাকা অলফ্যাক্টরি স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে পৌঁছে যেতে পারে। অলফ্যাক্টরি স্নায়ুই ঘ্রাণের অনুভূতি তৈরি করে। এই স্নায়ুটিকেই মস্তিষ্কে যাওয়ার রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করে জীবাণুটি। এই জীবাণুর আক্রমণে মস্তিষ্কের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচতে অ্যামাইলয়েড বিটা নামের একটি প্রোটিন জমা হয় কোষে। এই প্রোটিনের সঞ্চয় অ্যালঝাইমার্স রোগের অন্যতম কারণ।

Advertisement

কিন্তু প্রশ্ন হল, বিপদ জেনেও মানুষ কেন নাক খোঁটে? গবেষকদের মতে, এটা কিছু মানুষের স্বভাব, যা তাঁদের এক ধরনের মানসিক পরিতৃপ্তি এনে দেয়। অনেকের আলস্য প্রকাশেরও লক্ষণ নাকে আঙুল দেওয়া। অনেকেই কোনেও কাজ না থাকলে তাই নাক খোঁটেন। আবার উল্টোটাও দেখা যায়। কোনও রকম বির্তর্ক বা আলোচনায় অংশ নিয়েও মানুষ নাক খোঁটেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement