Red Fruits Benefits

সুস্থ জীবন হোক রঙিন, শুধু সবুজ নয়, ডায়েটে রাখুন লাল, কারণ জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা

- শরীর সুস্থ রাখতে খাদ্যতালিকায় প্রিয় রং হোক লাল। কী এমন আছে এতে, যা হতে পারে সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ১৪:৩৩
Share:

কেন লাল রঙের ফল দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি? ছবি: সংগৃহীত।

শরীর ভাল রাখতে টাটকা সবুজ শাকসব্জি কতটা জরুরি, সে কথা প্রায় সকলেই জানেন। তবে শুধু সবুজ নয়, পুষ্টিবিদেরা বলছেন, খাদ্যতালিকা হওয়া দরকার রঙিনও। আর সেই রঙে সবুজের পাশাপাশি আবশ্যক লালও। কিন্তু কেন?

Advertisement

চেন্নাইয়ের পুষ্টিবিদ দীপলক্ষী শ্রীরাম জানাচ্ছেন, এক এক রং এক এক রকমের পুষ্টির উৎস। প্রতিটিরই শরীরে প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে লাল রঙের ফল বা সব্জি, পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।

লাল রঙের ফল বা সব্জিতে থাকে ক্যারোটিনয়ডেস। আপেল, স্ট্রবেরি, বেদানা, চেরি, লাল আঙুর, তরমুজ, লাল বেলপেপার, টম্যাটোর মতো খাবারে থাকে অ্যান্থোসায়ানিন, লাইকোপেন, রেসভেরাট্রল, বেটালেনসের মতো শক্তি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।

Advertisement

কলকাতার পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘লাল ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মেলে, যা রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। যাঁরা মরসুম বদলের বদলের সময় ঘন ঘন সর্দিজ্বরে ভোগেন, তাঁদের খাদ্যতালিকায় লাল ফল, সব্জি আবশ্যিক ভাবে থাকা প্রয়োজন।’’

অ্যান্থোসায়ানিন: লাল আঙুর, স্ট্রবেরি, লাল বাঁধাকপিতে মেলে এটি। অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার বাড়বৃদ্ধিতে সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টটি। যার ফলে পেটের সমস্যা কমে।

লাইকোপেন: টম্যাটো, তরমুজে মেলে এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ক্যানসার প্রতিরোধেও এই উপাদান কার্যকর।

বেটালেনস: বিটে রয়েছে বেটালেনস। প্রদাহ কমাতে, শরীর থেকে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বার করতে এটি সহায়ক। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট লিভারের স্বাস্থ্যও ভাল রাখে।

রেসভেরাট্রল: লাল আঙুরে মেলে এই উপাদানটি। হার্টের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে, ত্বকের দীপ্তি ধরে রাখতে এবং ক্যানসার প্রতিরোধেও তা সহায়ক।

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের ভূমিকা অবশ্য এই টুকুতেই ফুরিয়ে যায় না। শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর ফ্রি র‌্যাডিক্যালের হাত থেকেও রক্ষা করে এটি। দৈনন্দিন কাজকর্মের সময় এবং ধূমপান, সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাবে শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল তৈরি হয়। ফ্রি র‌্যাডিক্যাল কোষের এবং ডিএনএ প্রোটিনের ক্ষতি করে। সেই ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতেই সাহায্য করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, বলছেন দীপলক্ষ্মী।

উপকারিতা আর কী?

লাল ফলের অনেকগুলিতেই মেলে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ। এই ভিটামিনগুলি একই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের কাজ করে, জানাচ্ছেন শম্পা। তিনি বলছেন, ‘‘এই ধরনের ভিটামিনের একাধিক কাজ রয়েছে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধিতে, দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে, হজমক্ষমতা বৃদ্ধিতে, ওজন বশে রাখতে, অ্যালঝাইমার্স প্রতিরোধেও সাহায্য করে। লাল ফলের মধ্যে বেরি জাতীয় ফলগুলি আরও বেশি উপকারী, কারণ এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বেশি থাকে।

কতটা ফল খাওয়া দরকার?

উপকারী হলেও দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ফল খাওয়ার পরিমাপ থাকা প্রয়োজন, মত পুষ্টিবিদদের। একটি শিশুকে দিনে ৫০ গ্রাম ফল খাওয়ানো যেতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে সেই পরিমাপ হতে পারে ১০০-১৫০ গ্রাম। তবে শুধু লাল নয়, দিনে ১৫০ গ্রাম ফল খেলে, বিভিন্ন রঙের ফল মিলিয়ে মিশিয়ে খাওয়া দরকার, বলছেন পুষ্টিবিদেরা।

তবে কোনও কোনও ফলে পটাশিয়াম বেশি থাকে। যেমন কলা। কিডনির সমস্যা থাকলে বা শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে, কোন ফল খাবেন না বা কতটা পরিমাণে খাওয়া যাবে সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement