Sea on Mental Health

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ‘ব্লু স্পেস’, জানাচ্ছে গবেষণা

ঘুরতে যাওয়া মানে কারও কাছে শুধুই সমুদ্র। সমুদ্রের নোনা হাওয়া, গর্জন এবং অবিরাম ঢেউয়ে ভেসে যাওয়ার প্রভাব কি সত্যিই পড়ে মনের উপর?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ১৬:২৮
Share:

‘আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনাবালি তীর ধরে, বহুদুর বহুদূর হেঁটে এসেছ’। ছবি: পিক্সাবে

‘উঠল বাই তো কটক যাই’। তবে বাঙালির জন্য তা কটক না হয়ে বোধ হয় ‘পুরী’ হলেই ভাল। শিমূলতলা বা জসিডি বাদ দিলে বাঙালির কাছে সমুদ্র মানে পুরী। আবার কোনও বাঙালি মন ভাল করার রসদ খুঁজে পান বেনারস বা হরিদ্বারের ঘাটে। সমুদ্র হোক বা গঙ্গার ঘাট, বহমান জলের ধারায় অন্তরের গ্লানি ধুয়েমুছে ফেলতেই কি মানুষ বার বার ছুটে যায় জলের কাছে। ভিক্টোরিয়া যুগেও মন ভাল করার ওষুধ ছিল সমুদ্র।

Advertisement

পৃথিবী জুড়ে প্রায় শতাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকলে মন এবং শরীরের উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। মন ভাল রাখতে চিকিৎসকেরা তাই ‘স্ক্রিন টাইম’ কমিয়ে ‘গ্রিন টাইম’ বাড়িয়ে তোলার নিদান দেন। মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অবসাদ কাটিয়ে উঠতে যা বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। তবে সম্প্রতি এই ধারণা কিঞ্চিৎ বদলেছে। নতুন গবেষণা বলছে, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে ‘গ্রিন টাইম’-এর তুলনায় ‘ব্লু স্পেসেস’ বেশি উপকারী। অর্থাৎ, প্রকৃতির সবুজ গাছপালা, জঙ্গলের চেয়েও বেশি কার্যকর সমুদ্র, হ্রদ বা লেকের জল। জলের স্রোতই কি মনের ধূসর কোণে জমে থাকা নুড়ি-পাথর ভাসিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে?

Advertisement

এ প্রসঙ্গে মনোবিদ দেবশীলা বোসের মন্তব্য, “প্রকৃতির সঙ্গে বেশি সময় কাটালে মানসিক চাপ মুক্ত থাকা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে জলের গুরুত্ব বেশি। কারণ, তার বহমানতা। অনবরত সমুদ্রের গর্জন কানে গেলেও কিন্তু মন শান্ত হয়। অবিরাম ঢেউয়ের যে ছন্দ, তার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে অনেকেই তালহীন জীবনের মানে খুঁজে পেতে পারেন।”

ছোট শিশুকে ঘুম পাড়াতে গেলে নির্দিষ্ট একটি ছন্দে তার পিঠে, গায়ে তাল দিতে হয়। সেই ছন্দের একঘেয়েমিতেই তাদের মন শান্ত হয়। দু’চোখে ঘুম নেমে আসে। সমুদ্রের ক্ষেত্রেও সেই ছন্দ একই ভাবে মস্তিষ্কে, মনের ক্ষততে প্রলেপ দিতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। শুধু মন নয়, সেখানকার আবহাওয়ায় শরীরও ভাল থাকে। মানসিক চাপ কমলে রক্তে শর্করার মাত্রা, উচ্চ রক্তচাপ এবং হরমোনের ভারসাম্যও বজায় থাকে।

‘আবার যেদিন তুমি সমুদ্র স্নানে যাবে আমাকেও সাথে নিও, নেবে তো আমায়’। ছবি: পিক্সাবে

তবে সমুদ্রের গভীরতা বা বিশালতায় নিজেকে হারিয়ে ফেলার ভয়ও পান অনেকে। মনোবিদের মতে, “এই বিষয়টি ব্যক্তির পছন্দ-অপছন্দের উপরেও অনেকটা নির্ভর করে। তা ছাড়া, জল নিয়ে যদি কারও মনে কোনও খারাপ স্মৃতি থাকে, সেই ব্যক্তির সমুদ্র ভাল না-ও লাগতে পারে। আবার ঘুরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক দিকটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তবে মন ভাল করতে সমুদ্র, পাহাড়, জঙ্গল বা নদীর ধার— যেখানেই যান না কেন, ওই ক’টা দিন জাগতিক সব চাওয়া-পাওয়া, সমাজমাধ্যম, যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে ফেলতে না পারলে কোনও ফল মিলবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন