How to Avoid Mobile in the Morning

ফোন স্নানঘরে রেখে তার পরে ঘুমোতে যান! পরামর্শ মনোবিদের, ফোন পাশে থাকলে কী হতে পারে?

ফোন পাশে নিয়ে ঘুমোলে চোখ খোলার পরে প্রথম ফোনের পর্দাতেই চোখ রাখেন অধিকাংশ মানুষ। মেল রবিন্সের মতে, তাতে ঘুম থেকে ওঠার মুহূর্তের মধ্যেই মানসিক শান্তি নষ্ট করতে শুরু করে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২৫ ১৮:৩১
Share:

ছবি : সংগৃহীত।

চোখের পাতা খুলতে না খুলতেই হাত বাড়িয়ে দেন ফোনের দিকে! উপায় নেই, যে অ্যালার্মের আওয়াজে চোখ খুলছে, তা তো বাজছে ফোনেই। বা যাঁর অ্যালার্ম না বেজেই ঘুম ভাঙল, তিনিও সময় বোঝার জন্য দেওয়াল ঘড়ি নয়, ফোনই দেখেন। ঘুম থেকে উঠে এই যে প্রথমেই ফোনের দিকে তাকানোর অভ্যাস, তা শরীর এবং মনে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে বলে জানাচ্ছেন এক যাপন প্রশিক্ষক। তাঁর পরামর্শ, ‘‘আর যা-ই করুন ফোন মাথার পাশে নিয়ে কখনও শোবেন না। দরকার হলে ঘুমোনোর আগে ফোন স্নানঘরে রেখে আসুন।’’ কিন্তু কেন এই অভ্যাস সমস্যা তৈরি করতে পারে? তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন যাপন প্রশিক্ষক তথা লেখিকা মেল রবিন্স।

Advertisement

টিভি ব্যক্তিত্ব ওপরা উইনফ্রের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে এসেছিলেন মেল। সেখানেই তিনি কথা বলেছেন ফোন পাশে নিয়ে শোওয়ার ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে। মেল বলছেন, ‘‘ফোন পাশে নিয়ে ঘুমোলে তা শরীরের উপর কী কী প্রভাব ফেলে বা ঘুমে কী ভাবে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে সে বিষয়ে বহু গবেষণা হয়েছে, আমি সেই সব বিষয় নিয়ে কথাই বলছি না। আমার ভাবনার বিষয় হল, যখন আপনি ঘুম থেকে ওঠেন, তার পরে কী হয়?’’

ফোন পাশে নিয়ে ঘুমোলে চোখ খোলার পরে প্রথম ফোনের পর্দাতেই চোখ রাখেন অধিকাংশ মানুষ। মেলের মতে, তাতে ঘুম থেকে ওঠার মুহূর্তের মধ্যেই মানসিক শান্তি নষ্ট করতে শুরু করে। তিনি বলছেন, ‘‘আপনি ফোন পাশে নিয়ে ঘুমোচ্ছেন। অ্যালার্ম বাজল। আপনি ফোনটা তুললেন। আর আপনি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর আগে, এমনকি চোখ ভাল করে খোলার আগে গোটা দুনিয়ার খবরাখবর এবং সমাজমাধ্যমের হাজার একজন প্রভাবী আপনার শোয়ার ঘরে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ল। আপনিও একে একে মেসেজ দেখতে শুরু করলেন, ইমেল দেখতে শুরু করলেন। আর ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টা পরেই যখন আপনার ক্লান্ত লাগতে শুরু করল, তখন ভাবলেন কেন এ সব হচ্ছে!’’ কেন ক্লান্তি, কেন সকাল থেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন? কারণ ব্যাখ্যা করে মেল জানাচ্ছেন, সকাল থেকেই তো নানা চিন্তায় ভরে উঠছে মাথা। সেখানে আর আপনার নিজের জন্য সময় কোথায়!

Advertisement

তবে এর একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও রয়েছে। ঘুম থেকে উঠেই ফোনের পর্দায় চোখ রাখার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কের একটি অংশ সক্রিয় হয়। তাকে বলা হয় ‘স্ট্রেস রেসপন্স’। শরীর বা মন যখন কোনও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে (সেই চ্যালেঞ্জ সত্যিকারের হতে পারে আবার ভাবনাতেও তৈরি হতে পারে), তখনই এই অংশ সক্রিয় হয়, যা কর্টিসল নামে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। যা পরোক্ষে উচ্চ রক্তচাপ, উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

কিন্তু ফোন দেখলে কেউ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে কেন? মেল বলছেন, মস্তিষ্কে উদ্বেগের মাত্রা সকালের দিকে এমনিতেই বেশি থাকে। যদি জীবনে কোনও খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে থাকে, তা দারিদ্র হোক বা অপমান বা অন্য যে কোনও খারাপ লাগার বিষয়, তবে সেই উদ্বেগ ব্যক্তিবিশেষে সকালের দিকেই মনে পড়তে পারে। একে বলা হয় ‘স্টোরড ট্রমা’। কারও ক্ষেত্রে বিষয়টি বেশি। কারও কম। তবে ফোনে নানা ঘটনা দেখতে থাকলে ‘ট্রমা রেসপন্স’ বাড়তে থাকে। তখনই উদ্বেগ চেপে বসে। উল্টো দিকে ঘুম থেকে ওঠার পরে ঘণ্টাখানেক অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিলে, যেমন সূর্যের আলোয় থাকা বা হাঁটা বা শরীরচর্চা করা ইত্যাদি করলে এই স্ট্রেস রেসপন্স কমে যায় অনেকটাই। মেল বলছেন, ‘‘স্নানঘরে ফোন রাখা থাকলে হাতের নাগালের বাইরে থাকবে। তাতে শান্ত থাকবে মন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement