হাঁটুর ব্যথা কমবে, মহিলারা জেনে নিন কিছু উপায়। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
হাঁটুর ব্যথা বড় ভোগায় বয়সকালে। বিশেষ করে পঞ্চাশ বা ষাটের পর থেকে অস্থিসন্ধির ব্যথা ভোগায় অনেক মহিলাকেই। বিশেষত এ দেশের মহিলাদের মধ্যে অস্টিয়োপোরোসিস, অস্টিয়োআর্থ্রাইটিস হতে বেশি দেখা যায়। ফলে অনেক সময়েই একটা বয়সের পরে চিকিৎসকেরা ক্যালশিয়াম খেতে বলেন। কিন্তু এখন বয়স বাড়লেই যে শুধু হাঁটু ব্যথা করবে তেমনটা নয়। ইদানীং কম বয়স থেকেই হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন অনেকে। আর ব্যথা মানেই, মুঠো মুঠো ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে ফেলা কাজের কথা নয়। তা হলে যন্ত্রণা কমানোর উপায় কী?
মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের ওঠানামায় অনেক সমস্যা হয়। এই হরমোন মহিলাদের অনেক শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। বয়ত যত বাড়ে, তত এই হরমোনের কার্যকারিতা কমতে থাকে। পাশাপাশি মেয়েদের হাড়ে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। যাঁরা দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে বা মেঝেয় পা মুড়ে বসে কাজ করেন, তাঁদের ব্যথা বেশি হয়। মহিলাদের হাঁটুর গঠনও ব্যথার কারণ। হাঁটু ভাঁজ করলে যে ‘বেন্ডিং মোমেন্ট’ বা চাপ তৈরি হয়, তার টানে হাঁটুর সামনের দিকে থাকা মালাইচাকি হাড়ের তলার অংশের কার্টিলেজে চাপ দেয়। এই চাপ যত বাড়ে, ততই হাঁটুর হাড়ে ক্ষয় হতে থাকে। এটিও মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়।
তা হলে যন্ত্রণা কমবে কী উপায়ে?
হাঁটুর ব্যথা বাড়লে জিমে গিয়ে ট্রেডমিলে হাঁটা বা দৌড়নোর মতো কাজ করবেন না। কারণ, ব্যথা কী কারণে হচ্ছে, সেটা আগে চিহ্নিত করা দরকার। ব্যথা নিয়ে ভারী ব্যায়াম করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
বেশি সময় ধরে পা মুড়ে মাটিতে বসে থাকলে যন্ত্রণা বাড়বে। এক জায়গায় অনেক ক্ষণ বসে টিভি বা কম্পিউটার দেখবেন না।
হালকা ব্যায়াম করতে পারেন মহিলারা। পায়ের নীচে ম্যাট বা তোয়ালে রেখে বসতে হবে। দুই পা সামনে লম্বা করে ছড়িয়ে বসতে হবে। এ বার হাঁটুর ভিতরের অংশটা যথাসম্ভব মেঝের সঙ্গে লাগাতে হবে, আবার হাঁটু মুড়তে হবে। তবে খুব বেশি হাঁটু মুড়বেন না। অল্প হাঁটু মুড়ে আবার পা সোজা করবেন।
চেয়ারে বসে একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন। চেয়ারে পিঠ টানটান করে বসে বাঁ পা স্বাভাবিক ভঙ্গিতে রাখুন। ডান পা সামনের দিকে সোজা তুলে দিন। ডান পা কিছু ক্ষণ ধরে রেখে আবার মাটি স্পর্শ করুন। আবার তুলুন। এ ভাবে প্রত্যেক পায়ে দশ বার করুন।
লায়িং হ্যামস্ট্রিং স্ট্রেচ করলেও উপকার পাবেন। মেঝেয় টানটান হয়ে শুয়ে বাঁ পা উপরে তুলুন। এ ক্ষেত্রে মাটির সঙ্গে পা ৯০ ডিগ্রি কোণে থাকবে। দু’হাত বাঁ ঊরুর নীচে রেখে ভারসাম্য বজায় রাখুন। এ বার বাঁ হাঁটু আস্তে আস্তে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। ৩০ সেকেন্ড রেখে, আবার স্বাভাবিক জায়গায় ফিরে যান। এ ভাবে দু’পায়েই ব্যায়ামটি করতে হবে।