পিছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখেন? অজান্তেই কঠিন অসুখ ডেকে আনছেন না তো, সাবধান হবেন কী ভাবে?

অধিকাংশ পুরুষই ট্রাউজ়ারের পিছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখেন। এই অভ্যাস কিন্তু অজান্তেই বড় বিপদ ডেকে আনছে আপনার শরীরে। বিশেষ করে পিছনের পকেটে ম্যানিব্যাগ রেখে দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকা মেরুদণ্ডের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। এই অভ্যাসটির কারণে ধীরে ধীরে আপনার মেরুদণ্ডের হাড় সরে যেতে পারে স্বাভাবিক অবস্থান থেকে।

পিছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার অভ্যাস ধীরে ধীরে আপনার স্বাভাবিক বসার ভঙ্গি বদলে দিতে পারে। এর ফলে আপনার নিতম্বে ব্যথা হতে পারে, যা ছড়িয়ে পড়তে পারে সায়াটিকা স্নায়ু ধরে পায়ের দিকে কিংবা পুরো পিঠে। কখনও কখনও সেই যন্ত্রণার তীব্রতা এতটাই বেশি হয় যে, উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাটুকুও থাকে না। তাই ফেলে না রেখে ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন। সঠিক ওষুধ এবং ব্যায়ামের সাহায্যে এই ব্যথা অনেকটাই আয়ত্তে রাখা যায়।

কোথায় থাকে এই স্নায়ু? এর উৎপত্তিস্থলই বা কোথায়?

সায়াটিকা আমাদের শরীরের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে মোটা স্নায়ু, যা শুরু হয় স্পাইন বা মেরুদণ্ড থেকে। এর একাধিক রুটের মধ্যে কিছু আসছে কোমরের নীচের দিকে ‘লাম্বার স্পাইন’ থেকে। সেখানে কোনও ভাবে আঘাত পেলেও এই ব্যথা হয়। এই ব্যথাকে ‘লাম্বোসায়াটিকা পেন’ও বলা হয়। আর বাকি রুটের উৎপত্তি মেরুদণ্ডের শেষ অংশ থেকে, যাকে ‘স্যাক্রাম’ বলে। এই স্নায়ুর শেষ প্রান্তগুলি একত্রিত হয়ে ডান-বাম দিকে কোমর ও নিতম্বের নীচ থেকে একেবারে পায়ের গোড়ালি অবধি চলে যায়।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডেস্কে বসে কাজ করার সময় পিছনের পকেটে মানিব্যাগ থাকলে সায়াটিকার সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়া কঠিন। এ রকম ব্যথা লক্ষ করলে সাবধানতা জরুরি। সহজে সমাধানযোগ্য সমস্যাটিকে অবহেলা করলে তৈরি হতে পারে বড় ধরনের শারীরিক সমস্যা।

বসার ভঙ্গি যে কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ

সঠিক ভঙ্গিতে বসা আমাদের সামগ্রিক সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন অনেকেই ডেস্কে বসে কাজ করেন। এর মানে হচ্ছে দীর্ঘ সময় বসে থাকা। দীর্ঘ ক্ষণ বসে থাকতে হলে বসার ভঙ্গি যেন ঠিকঠাক থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে শুরুতেই পেছনের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে ডেস্কে রাখুন। পাশাপাশি এমন একটি চেয়ারে বসুন, যেটি আপনার পিঠ ও মেরুদণ্ডের সঠিক ভঙ্গি ধরে রাখতে সাহায্য করবে।

আর কী কী কারণে হতে পারে সায়টিকার ব্যথা?

সায়াটিকার ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। গাড়িতে যেমন শক অবজ়ার্ভার থাকে, তেমনই মেরুদণ্ডের হাড়ের মাঝেমাঝেও ছোট ছোট ডিস্ক থাকে, যারা শক অবজ়ার্ভারের কাজ করে। কোনও কারণে যখন ডিস্ক ফেটে ভিতরের থকথকে তরল-সহ মজ্জা বেরিয়ে এসে স্নায়ুতে ধাক্কা মারে, এটিই সায়াটিকার ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ।

এ ছাড়া স্নায়ুর কোনও অসুখ হলে তা থেকেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। মেরুদণ্ডের উপর কোনও টিউমার হলে তার চাপ নার্ভরুটগুলির উপরে পড়েও এই ধরনের ব্যথা হয়।

তবে ‘আর্থ্রাইটিস’ বা বাত সায়াটিকার ব্যথা বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া, দুর্ঘটনার জন্য কোমরে আঘাত পেলে বা ভেঙে গেলেও সায়াটিকা হতে পারে। অনেক সময়ে অন্তঃসত্ত্বাদের এই সমস্যা হয়।