জেনে নিন ফরচুনা কী এবং কোন ভাবে পড়েছে (প্রথম অংশ)

রোমান ভাগ্য দেবীর নাম ফরচুনা। যাকে বলা হয় গডেস অফ ডেস্টিনি। ফরচুনা আবার জিউসের কন্যা। জিউস হচ্ছে লটারি জাতীয় অর্থ পাওয়া যায়, তার দেবতা।

Advertisement

অসীম সরকার

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ২৩:৫৪
Share:

ফরচুনা কোনও গ্রহ নয়, ফরচুনা হচ্ছে অঙ্কের বিন্দু। যেমন রাহু, কেতু কোনও গ্রহ নয়, অঙ্কের বিন্দু। ফরচুনা হচ্ছে ভাগ্যের সেই বিন্দু, যেখানে লুকনো আছে ভবিষ্যতের বহু গুপ্ত কথা। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে বারোটি ভাবের মধ্যে যে ভাবে ‘ফরচুনা’ পড়ে, সেই ভাবকে ধরে বিচার করতে হয়। ভারতীয় জ্যোতিষে ফরচুনা-র ব্যবহার কম। তবে এখন অনেকে ভারতে ফরচুনার চর্চা করছে। যেমন কৃষ্ণমূর্তি তার জ্যোতিষ চর্চায় ফরচুনাকেঅন্তর্ভুক্ত করেছেন। রোমান সাম্রাজ্য যখন ছিল, তখন থেকেই ফরচুনার ব্যবহার চলছে। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে ব্যাপক ভাবে ফরচুনার ব্যবহার হয়ে থাকে। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে ফরচুনা যে ঘরে পড়ে সেই ঘরকে লগ্ন ধরে বাকি ঘরগুলির বিচার করতে হয়। পাশ্চাত্যে জ্যোতিষে ফরচুনাকে চন্দ্র লগ্ন হিসেবে বিবেচনা করে। কেউ কেউ বলেন ফরচুনা প্রতি জন্মে আত্মার গুপ্ত ভাবকে ব্যক্ত করে।

Advertisement

রোমান ভাগ্য দেবীর নাম ফরচুনা। যাকে বলা হয় গডেস অফ ডেস্টিনি। ফরচুনা আবার জিউসের কন্যা। জিউস হচ্ছে লটারি জাতীয় অর্থ পাওয়া যায়, তার দেবতা।এই গডেস অফ ডেস্টিনি তিনি ভাল ভাগ্যের দেবী, আবার মন্দ ভাগ্যেরও দেবী।

ফরচুনা কী ভাবে বের করব? অতীতকালে দিনে জন্ম আর রাত্রি জন্ম দু’টি ক্ষেত্রে আলাদা আলদা অঙ্কের নিয়ম ছিল। এখন সারা পৃথিবীতে মোটামুটি একটা নিয়মেই প্রায় সবাই ফরচুনা বের করে।

Advertisement

ফরচুনা বের করতে লগ্নের স্ফুট, চন্দ্রের স্ফুট ও রবির স্ফুট প্রথমেই জানা দরকার। তারপর নীচের এই ফরমুলায় ফেলে দিলেই উত্তর পাওয়া যাবে—

ফরচুনা= লগ্নের স্ফুট + চন্দ্রের স্ফুট – রবির স্ফুট

ধরা যাক, কোনও জাতকের সিংহ লগ্নে ১২১ ডিগ্রিতে জন্ম, তার চন্দ্রের স্ফুট ৬১ ডিগ্রি, আর রবির স্ফুট ৩১১ ডিগ্রি।

এ বারে তার ফরচুনা =

(১২১+৬১)-৩১১

= ১৮২-৩১১

= (১৮২+৩৬০)-৩১১ {যে হেতু বাঁদিক ছোট,তাই ৩৬০ ডিগ্রি যোগ করা হল}

= ৫৪২-৩১১ = ২৩১ডিগ্রি = বৃশ্চিক ২১ ডিগ্রি।

এই সিংহ লগ্ন জাতকের ফরচুনা পড়েছে চতুর্থে বৃশ্চিকে। এ বার চতুর্থ ভাবে ফরচুনা পড়লে কী হয় জানব। জাতক/জাতিকা একটা সুন্দর গৃহ পরিবেশ পাবে। সে গৃহ সুখে সুখী হবে। কম-বেশী সে ভাগ্যবান বা ভাগ্যবতী। তাদের জমি-জমা, চাষবাস, বাড়িঘর সম্পত্তি থেকে আয় বোঝায়।কোনও গুপ্ত কিছু থেকে লাভবান হওয়া বোঝায়। মাটির নীচে খনিজ পদার্থ থেকে, বালি, পুকুর ইত্যাদি থেকে আয় বোঝায়। জমি, বাড়ি, রিয়েল এস্টেটে পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া বোঝায়। চতুর্থে ফরচুনার জন্য শারীরিক স্বাস্থ্য ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল বোঝায়।

এ বার বিভিন্ন ভাবে ফরচুনা পড়লে কী ফল দেয়, তা আমরা জানব—

(১) লগ্ন ভাবে ফরচুনা: এই ভাবে ফরচুনা পড়লে জাতক/জাতিকা যা কিছু জীবনে লাভ করে, ভাল পরীক্ষার ফল, চাকরি লাভ, বা ব্যবসায় উন্নতি, সব নিজের প্রচেষ্টায়। কর্ম উপলক্ষে জাতক/জাতিকাকে নানা জায়গায় ভ্রমণ করতে হয়। এক স্থানে বাস ও কর্ম এদের হয় না বললেই চলে।

(২) দ্বিতীয় ভাবে ফরচুনা: এই ভাবে ফরচুনা আর্থিক প্রতিষ্ঠা ও সাফল্য দেয়। জমি জমা, চাকরি বা ব্যবসা সব কিছু থেকেই আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়া বোঝায়। বন্ধু-বান্ধব থেকে সহযোগিতা পাওয়া বোঝায়।

(৩) তৃতীয় ভাবে ফরচুনা: এই ভাবে ফরচুনা পড়ার জন্য জাতক/জাতিকা ভ্রমণ সংক্রান্ত ব্যাপার থেকে, পাড়া-প্রতিবেশী থেকে, আত্মীয়স্বজন থেকে ও ভাই বোন থেকে বিশেষ রকম সহযোগিতা পেয়ে থাকে। বুদ্ধি খাটিয়ে যে সব কাজ-কর্ম করা যায় তার থেকে লাভবান হওয়া বোঝয়। কোনও এজেন্সি সংক্রান্ত ব্যাপার বা ব্যবসা থেকে আর্থিক সাফল্য বোঝায়।

(ক্রমশ)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন