বাস্তুশাস্ত্রে পঞ্চত্বের প্রভাব সম্পর্কে জেনে নিন

এই পঞ্চতত্ত্ব থেকে উৎপন্ন পৃথক পৃথক শক্তি তরঙ্গগুলির প্রভাবই বাস্তু শাস্ত্রের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। বাস্তবক্ষেত্রে কর্মরত বা বসবাসকারী কোন ব্যক্তির শরীর ও মস্তিষ্কে এই শক্তি তরঙ্গ গুলি প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:০০
Share:

বাস্তু মূলত পঞ্চ শক্তির প্রভাব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই শক্তিগুলি হল তেজ(অগ্নি) ,বায়ু, জল, আকাশ, ক্ষিতি অর্থাৎ মাটি। যা বাস্তুশাস্ত্রে ‘পঞ্চত্ব’ নামেই পরিচিত। পৃথিবীতে ‘তেজ’ অর্থাৎ অগ্নি তত্ত্বের উৎস হল সূর্য। বায়ু তত্ত্বের উৎস হল বায়ুমণ্ডল। মহাসাগর, নদী ইত্যাদিই হল জলতত্ত্বের কারক এবং মাটি অর্থাৎ পৃথিবী নিজেই ভূ–চৌম্বক শক্তির আধার। এই পঞ্চতত্ত্ব থেকে উৎপন্ন পৃথক পৃথক শক্তি তরঙ্গগুলির প্রভাবই বাস্তু শাস্ত্রের মূল প্রতিপাদ্য বিষয়। বাস্তবক্ষেত্রে কর্মরত বা বসবাসকারী কোন ব্যক্তির শরীর ও মস্তিষ্কে এই শক্তি তরঙ্গ গুলি প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

Advertisement

বাস্তু শাস্ত্রের সিদ্ধান্ত গুলিকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগের মাধ্যমে যাতে আমরা মঙ্গলময় জীবনের অধিকারী হয়ে উঠতে পারি তার জন্য নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তগুলি অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে –

১। উত্তর দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা কুবের। এর প্রবাহিত শক্তি তরঙ্গের প্রভাব ধনপ্রাপ্তি ঘটায়। এই স্থানটি মায়েরও স্থান। তাই বাড়ির উওরদিকের স্থান মুক্ত রাখা উচিত, অন্যথায় মাতৃপক্ষের পীড়া বা কষ্ট উপস্থিত হতে পারে।
২। পূর্ব দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা সূর্য। এই দিক জ্ঞানের ও অধ্যাত্মিকতার পক্ষে সহায়ক হয়। এই দিকটি পিতার স্থান। তাই পূর্ব দিক উন্মুক্ত রাখা উচিত। অন্যথায় গৃহ স্বামীর কষ্ট উপস্থিত হতে পারে।
৩। পশ্চিম দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা বরুণ।এই দিক সাফল্য, যশ, এবং ভদ্রতার কারক।
৪। দক্ষিণ দিক(অগ্নিকোণ) জীবনের বিকাশের পথে বাধা দান করে। বিভিন্ন রকমের প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে। এই দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন যম।
৫। উত্তর-পূর্ব দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন শিব। এই সুস্বাস্থ্য সম্পত্তি ও সমৃদ্ধি প্রদান করে। সন্তানের জন্মের বিষয়কেও প্রভাবিত করে থাকে।
৬। পূর্ব-দক্ষিণ(অগ্নিদায়ক) দিকের অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন অগ্নি, যা মানব জীবনে সুস্বাস্থ্য ও উৎসাহ প্রদান করে।
৭। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক (নৈর্ঋত কোণ) গৃহস্থের আচার-বিচার ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে।
৮। উত্তর-পশ্চিম (বায়ুকোণ) দিক মূলত গৃহের সঙ্গে সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্র অর্থাৎ শত্রুতা বা মিত্রতার সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে।
‘পঞ্চত্ব’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত প্রাকৃতিক শক্তিগুলির প্রভাব কখনও ধনাত্মক, কখনও ঋণাত্মক প্রকৃতির হয়ে থাকে। বাস্তুভূমির উপর এই প্রভাবগুলি কখনও সুফল প্রদান করে আবার কখনও কুফল প্রদান করে।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন