গোচরের সপ্তমে রাহু ও কেতুর অবস্থানের ফল দেখে নেওয়া যাক -
রাহু ও কেতু উভয়েই ক্রুর স্বভাবযুক্ত। সাধারণত এদেরকে অশুভ ও পাপগ্রহ বলে মনে করা হয়। কিন্তু ব্যবহারিক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ভাব রাশিতে নিজ নিজ স্থিত অনুসারে এই দুই গ্রহই শুভ বা অশুভ ফল প্রদান করে থাকে। রাহু বুধের রাশি মিথুন বা কন্যা, শুক্রের রাশি বৃষ ও তুলা এবং শনির রাশি মকর কুম্ভতে অবস্থান করলে এবং ভাব স্থিতি অনুকূল হলে, এরা নিজ দশা-অন্তর্দশা অনুসারে স্বাভাবিক গ্রহগুলির থেকেও বেশি শুভফল প্রদান করে। তবে বাস্তবে রাহু-কেতুর নিজস্ব কোনও ঘর নেই। এরা যে যে রাশিতে অবস্থান করে, সেই রাশির অধিপতি গ্রহের মতো আচরণ করে। যে গ্রহের নক্ষত্রে এরা জন্মের সময় সঞ্চরণ করেছে সেই নক্ষত্রের প্রকৃতি ও স্বভাব এরা আত্মস্থ করে।
দশম ভাবে রাহু ও কেতুর গোচর ফল দেখে নেওয়া যাক -
জাতকের জন্ম কোষ্ঠীতে রাহু লগ্ন, চন্দ্রলগ্ন থেকে এই ভাবে অবস্থান করে জাতক কৃপণ ও বিলাসী স্বভাবের হয়। কিন্তু এরা নিজের সন্তান, বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে ঝগড়া, অশান্তি করে থাকে। এই ভাবে রাহু স্থিত হলে শনির থেকেও বেশি প্রভাব বিস্তার করে। জাতক প্রচুর সম্পত্তির মালিক, বিখ্যাত ব্যক্তি ও ব্যবসায়ে সফলতা অর্জন করে থাকে।
রাহু গোচরে দশম ভাবে এলে জাতককে মানহানি, ধনহানি, কেলেঙ্কারিতে জড়ালেও একই সঙ্গে নতুন চাকরী, ব্যবসায়ে সাফল্য প্রদান করে। তবে গোচরকালীন সময়ে জাতককে একটি কথা অতি অবশ্যই মনে রাখা উচিত যে অধৈর্য হয়ে খারাপ পথের দিকে এগোলে চলবে না। কারণ তাহলে সঞ্চিত অর্থ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কেতু যদি জাতকের জন্ম সময়ে এই ভাবে অবস্থান করে, তবে জাতক পিতার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। পিতার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মূর্খের মতো আচরণ করে। এরা চিন্তা ভাবনা করে কাজ করলে সুখ-সমৃদ্ধি-সম্পত্তির সুখ দেখে এবং চাকুরীতে উচ্চপদ লাভ করে এবং সম্মানের সঙ্গে কাজ করে।
দশম ভাবে কেতু গোচরে আসলে প্রথম দিকে জাতককে কার্যে অসফলতার মুখ দেখায়। এই সময় জাতক অসুস্থ হয়ে পড়ে, খিটখিটে মেজাজের হয় এবং এদের সম্পত্তি নষ্ট অথবা চুরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শত্রু সংখ্যাও হঠাৎ করে বেড়ে যায়। তবে রাশির ১৫ ডিগ্রীতে সঞ্চরণকারী কেতু জাতককে শুভ ফল প্রদান করে। জাতকের যশ, সম্মান, প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়া অন্যান্য দিকেও সাফল্য অর্জন করে থাকে।