গোচরে মঙ্গল জন্ম রশি বা জন্ম লগ্নে থেকে বেশ কিছু ঘরে এলে শারীরিক ও মানসিক শক্তি বাড়ে, উৎসাহ ও উদ্দীপনা বাড়ে, চঞ্চলতা বাড়ে, স্বাস্থ্য ভাল থাকে, নতুন উদ্যমে কর্ম করতে উৎসাহ জাগে। মঙ্গল এক একটা ঘরে ৪৫ দিন করে থাকে। গোচরে মঙ্গল সাধারণত ৩য়, ৬ষ্ঠ, দশম ও একাদশ ঘরে মোটামুটি ভাল ফল দেয়। এবারে জন্মরাশি ও জন্মলগ্ন থেকে গোচরে এক এক ঘরে এক এক রকমের ফল দেয় তা নিম্নে পযায়ক্রমে দেওয়া হলঃ
জন্মরাশি বা জন্মলগ্নে গোচর মঙ্গলঃ এই স্থানে গোচরে মঙ্গল এলে শরীরে প্রানিক উত্তাপ বেড়ে যায়। অত্যাধিক চঞ্চলতার কারণে প্রায় অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। স্ত্রীর অসুস্থতা বেড়ে যায়। অকারণে উত্তেজনা বেড়ে ওঠে। রাগ বা ক্রোধ জাগে। বাড়ি পরিবর্তন করতে হয়। অকারণ রক্তপাত হয়। উচ্চরক্তচাপে ভোগে।
দ্বিতীয়ে গোচর মঙ্গলঃ পরিবারে অর্থ ও সম্পদের ক্ষতি হয়। ছোট ছেলে মেয়েরা অকারণে আঘাতপ্রাপ্ত হয়, পিতা-মাতার রক্তচাপ বেড়ে যায়, কখনও ছোট খাটো সারজিক্যাল অপারেশন হয়। লেখক বা কবিরা এই সময়কে কাজে লাগিয়ে ছন্দযুক্ত কবিতা লেখে ,যে শিল্পীরা তুলি ধরেন, এই সময় তাদের আঁকা ছবিগুলি ভাল হয় ও প্রশংসিত হয়।
তৃতীয়ে মঙ্গলঃ এই সময় নতুন কিছু উদ্যোগ নিতে ইচ্ছা করে, সব ধরনের কাজে উৎসাহ জাগে, চ্যালেঞ্জ নিতে ইচ্ছা জাগে। নিজের প্রতিপত্তি বাড়ে, সকলের সহযোগীতা পাওয়া যায়। অকারণ উৎসাহ জাগে। নিজের ছোট ভাইবোন থাকলে তারা এই সময় অকারণে চোট বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
চতুর্থে গোচর মঙ্গলঃ এই ঘরে মঙ্গল এলে সময় খুব খারাপ যায়। খুব সাবধানে সব কিছু ম্যানেজ করতে হয়, নচেৎ অনেক কিছু বা অনেক সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়। উপরওয়ালার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। বৌয়ের সঙ্গে মন কষাকষি চলে। আয়ের অবনতি হয় অথবা আয়ের সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়। জাতিকার ক্ষেত্রে, অনেক সময় স্বামী মারা যায় অথবা স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়।
পঞ্চমে মঙ্গলঃ খারাপ সময়। ছেলে মেয়েরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, স্বাস্থ্য খারাপের দিকে যায়। রোজগার কমে যায়, পিতা কর্ম থেকে অবসর নেয়, অনেক সময় পিতার চাকুরী চলে যায়। যারা যোগ ধ্যানে যুক্ত তাদের পক্ষে এই সময় বিশেষ শুভ।
ষষ্টে মঙ্গলঃ মঙ্গলের এই ঘরে আগমন খুবই শুভ। পুরনো অনেক দিনের কোনও কাজ যা আটকে ছিল সেটার সমস্যার সমাধাণ হয়। যদি কোনও প্রমোশন আটকে থাকে, এই সময় তা রিলিজ পায়। নানা দিক থেকে সাফল্য আসে। জীবন যাত্রায় পরিবর্তন হয়। যারা ধর্ম পথে আছেন তাদের জীবনে একটা উঁচু পরিবর্তন আসে, যাকে সিদ্ধি বলে।
সপ্তমে গোচর মঙ্গলঃ এই সময়ে স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হয় না বরং আরও খারাপের দিকে যায়। স্বাস্থ্যও খারাপের দিকে যায়। কর্মেরস্থানে অশান্তি সৃষ্টি হয়। টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ নানা ভাবে এই সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। বিনা কারণে, অনেক সময় ঝগরা-বিবাদে জড়িয়ে পড়তে হয়।
অষ্টমে গোচর মঙ্গলঃ এই সময়ে পুরাতন অর্শের ব্যথা বাড়ে। সেই সঙ্গে রক্তপাত হয়। নানা কারনে সারজিক্যাল অপারেসন হয়, নানান ধরণের অস্ত্রপচার হয়, খুন হয়ে যাওয়ার ভয় কাজ করে, বন্ধু-বান্ধবের সহ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ভুল বোঝবুঝির সৃষ্টি হয়, নানা কারণে অথর্দণ্ড দিতে হয়, পয়সা কম এমন কাজ করতে বাধ্য হতে হয়। পায়ের মাংস পেশীতে ব্যথাজনিত রোগ হয়, লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়। মিশটিক চর্চা করে এমন ব্যক্তিদের কুলকুন্ডলী জাগ্রত হয়।
নবম ভাবে গোচরে মঙ্গলঃ ভাবা যায় নি এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যায়, এই সময়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়। আধ্যাত্মিক জীবনে প্রবেশের ডাক আসে। ছোট বোনের স্বামীর জীবন নিয়ে টানাটানি চলে।
দশম ভাবে গোচরে মঙ্গলঃ এটা এমন একটা সময় যখন ব্যক্তিগত জীবনে এবং একই সঙ্গে পেশাগত জীবনে সব দিক থেকে সাফল্য নেমে আসে। পারিবারিক জীবনেও অন্য সকলের জীবনে সবার একটা উন্নতি দেখা যায়।
একাদশ ভাবে গোচরে মঙ্গলঃ আসা করা যায় না এমন সব দিকে উন্নতি হয়। আয় উন্নতি প্রভুত পরিমানে হয় এই সময়ে। হটাৎ করে আকস্মিক ভাবে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায়। পুরানো কোনও আকাঙ্খা হটাৎ করে বাস্তবে রূপ পায়। পরিত্যাক্ত সম্পত্তি বা অন্যের দখলে থাকা নিজের সম্পত্তি এই সময় ফিরে পাওয়া যায়।
দ্বাদশে গোচরে মঙ্গলঃ এই সময় সব ব্যাপারে মিশ্র ফল হয়। শারীরিকভাবে এনার্জি ঘাটতি, মানসিক টেনসান, কোনও কিছু বা কাউকে মানিয়ে নেওয়ে বেশ মুশকিল। কর্মক্ষেত্রে নতুন কোনও যোগাযোগ। তবে এই সময় শত্রুর বিনাশ হয়েই থাকে। স্ত্রীকে কোনও ব্যাপারে অনুকূলে পাওয়া বেশ কঠিন।