ভারত সন্ন্যাসবাদের দেশ। আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক জীবনকে কমবেশি সন্ন্যাসবাদ প্রভাবিত করেই থাকে। সেই কারণে আমরা, অর্থাৎ সাধারণ মানুষ সেক্সকে কী ভাবে দেখব, সেই সম্বন্ধে শাস্ত্রকারেরা খুব সহজ ভাবে বলে গেছেন ‘পুত্রার্থে ক্রিয়াতে ভার্যা’। ভার্যা মানে আমার শাস্ত্রমতে বিবাহিত স্ত্রী। ‘ভার্যা’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ মানে যা বিভাজিত হয়। বায়োলজিক্যাল মানে ‘মাল্টিপ্লিকেশন’ অর্থাৎ বংশবিস্তার। সোজা কথায়, শাস্ত্রকারদের মতে, আমরা বিয়ে করি সন্তান উৎপাদনের জন্য। কাম বা সেক্স নর ও নারীর মধ্যে মিলন ঘটাতে সাহায্য করে। সেই হিসেবে আমাদের বিবাহিত জীবনে ‘হেলদি সেক্স লাইফ’এর বিশেষ প্রয়োজন। কারণ আমাদের শাস্ত্র ধর্ম, অর্থ, কাম ও মোক্ষের কথা বহুকাল আগেই বলে গিয়েছে। কামের সংযত আচরণের কথা খুব জোরের সঙ্গে বলে গিয়েছে।
জ্যোতিষ বিচারে প্রত্যেক জাতক/জাতিকার সপ্তম ভাব জানিয়ে দেয় স্বাস্থ্যকর যৌন জীবনের তারা কতটা উপযুক্ত। ডাক্তারদের মতো অভিজ্ঞ জ্যোতিষও জন্মছক বিশ্লেষণ করে বলে দিতে পারে একজন জাতক/জাতিকা বিবাহের পর যৌনজীবনে কতটা সুখী হতে পারবে। সেক্স লাইফে অসুখীর জন্য দাম্পত্য জীবন ভেঙে যাবে কি না।
এ বারে আমরা আলোচনা করব জন্মছকে সপ্তম ভাবে বিভিন্ন গ্রহ কী ভাবে আমাদের দাম্পত্যজীবনকে প্রভাবিত করে থাকে—
(১) সপ্তম ভাবে রবি: এরা আগ বাড়িয়ে রতি ক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করে। নারী হোক বা পুরুষই হোক এরা সব সময় অ্যাক্টিভ রোল প্লে করে।
(২) সপ্তম ভাবে চন্দ্র: এরা যৌনমিলনে বিশেষ ভাবে মানসিক অস্থিরতা অনুভব করে। এরা স্পর্শসুখে আনন্দ পায় বেশি।
(৩) সপ্তম ভাবে মঙ্গল: এরা নিজের কাম ইচ্ছা পূরণে সর্বদা উদগ্রীব থাকে। বিপরীত লিঙ্গের ইচ্ছাপূরণে সে ভাবে আগ্রহ দেখায় না। ভীষণ কামুকতার জন্য অসংলগ্ন যৌন জীবন যাপন করতে পারে। বাস্তবে এরা যৌন সুখ পূরণের জন্য যে কোনও পথ নিতে পারে। এরা অপ্রাকৃত উপায়ে বেশি যৌন সুখ পায়।
(৪) সপ্তমে বুধ: এরা দেহের থেকে মনে যৌন সুখ পায় বেশি। পুরুষ হলে শারীরিক দিক থেকে অপরকে যৌন সুখ দেওয়ার ব্যাপারে এরা তত সক্রিয় নয়। তাই বিয়ের আগেই যাদের সপ্তমে বুধ থাকে অর্থাৎ পুরুষ জাতকেরা বিশেষ ভাবে স্বাস্থ্যসন্মত উপায়ে চিকিৎসা করিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসলে বিপদ অনেকটা কেটে যায়।
(৫) সপ্তমে বৃহস্পতি: নারীপুরুষ পরস্পর পরস্পরকে যৌন তৃপ্তি দেওয়ার ব্যাপারে বেশ সচেতন থাকে। এদের কাছে যৌন মিলন ভালবাসার একটা অংশ। এরা প্রবল ভাবে একে অপরকে গভীর ভাবে ভালবাসে। এরা পরস্পরকে শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখে থাকে।
(৬) সপ্তমে শুক্র: এরা সুস্থ রুচির হয়ে থাকে। এরা সেক্স ও প্রেমের মধ্যে সামঞ্জস্য রেখে চলে। এরা যাকে ভালবাসে তাকে যৌন তৃপ্তি দিয়ে ভরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরা স্থূল যৌন তৃপ্তির চেয়ে অপরোক্ষ যৌন তৃপ্তিতে আনন্দ পায় বেশি।
(৭) সপ্তমে শনি: এরা যৌন মিলনে খুবই শীতল থাকে। বাস্তবে যাদের সপ্তমে শনি থাকে তারা নারী বা পুরুষ যেই হোক, প্রকৃত অর্থে তারা যৌন মিলনে অতৃপ্ত থাকে। এরা পরস্পরের প্রতি খুবই বিশ্বস্ত থাকে জীবনের শেষ দিন অবধি।
(৮) সপ্তমে রাহু: এরা যে কোনও ভাবে বিকৃত যৌন তৃপ্তিতে বিশ্বাসী। এদের বিবাহিত জীবনে একে অপরকে বঞ্চিত করে থাকে।
(৯) সপ্তমে কেতু: যার সপ্তমে কেতু সে অতিমাত্রায় ষ্পর্শকাতর চরিত্রের কারণে সহবাসের পূর্বেই রেতঃপাত করে থাকে। এরা বিকৃত কামের শিকার হয়।
(১০) সপ্তমে মঙ্গল ও রাহু: যাদের সপ্তমে মঙ্গল ও রাহু থাকে তারা প্রবল যৌন উচ্ছ্বসের কারণে সহবাসের সময়ে অমানবিক আচরণ করে থাকে। এরা আজীবন যৌন অতৃপ্ত থাকে। যার জন্য নানা রকম ব্যাধির শিকার হয়ে থাকে।
(১১) সপ্তমে শনির সঙ্গে রাহু বা কেতু ও মঙ্গল থাকে: এরা যৌন সহবাসে পশুর মতো আচরণ করে। নানা বিকৃত উপায়ে এরা কাম মিটিয়ে থাকে।