Offering Tulsi

মহাদেব ও গণেশ বন্দনায় তুলসীপাতা ব্যবহার করেন? দুই দেবতার অভিশাপ নেমে আসবে জীবনে, জেনে নিন কারণ

ভগবান বিষ্ণু এবং কৃষ্ণের তুলসী প্রিয় হলেও শিব এবং গণেশকে তুলসী নিবেদন করা একেবারেই অনুচিত। শিব এবং গণেশকে তুলসী নিবেদন করা চলে না।

Advertisement

বাক্‌সিদ্ধা গার্গী

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৩
Share:

ছবি: (এআই সহায়তায় প্রণীত)।

পুজোর উপচারে ফুলের সঙ্গে বেলপাতা ও তুলসীপাতা না থাকলে তা যেন সম্পূর্ণ মনে হয় না। তুলসীপাতা ছাড়া শ্রীবিষ্ণুর পুজো অসম্পূর্ণ। সনাতন ধর্মে তুলসীপাতা অত্যন্ত পবিত্র। পুজো-আচ্চায় তুলসীপাতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দুদের কাছে তুলসী নারায়ণের প্রতীক। আবার শাস্ত্রমতে তুলসীকে লক্ষ্মীদেবীর আর এক রূপ বলে ধরা হয়।

Advertisement

হিন্দু পুরাণমতে তুলসীপাতা পবিত্রতা, ভক্তি এবং আশীর্বাদের প্রতীক। ভগবান বিষ্ণু এবং ভগবান কৃষ্ণের উপাসনার জন্য এটি অপরিহার্য। এই দুই দেবতার তুলসী প্রিয় হলেও এটি নিবেদনের উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রে বিশ্বাস করা হয় দেবাদিদেব শিব এবং গণপতিকে তুলসী নিবেদন করা একেবারেই অনুচিত। এই নিয়মটির শিকড় হিন্দু পুরাণে গভীর ভাবে প্রোথিত। আসুন জেনে নেওয়া যাক কেন শিব এবং গণেশকে তুলসী নিবেদন করা চলে না।

হিন্দু পুরাণের ধর্মগ্রন্থ এবং শিব পুরাণ অনুযায়ী তুলসীকে দেবী বৃন্দার পার্থিব রূপ বলে মনে করা হয়। এই দেবী জলন্ধর নামের এক অসুরের পত্নী ছিলেন। সেই অসুরের অত্যাচারে যখন ধরাধাম অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তখন ত্রাতা হন দেবাদিদেব মহাদেব। শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্য অসুর জলন্ধরকে বধ করেছিলেন পিনাকপাণি। জগতের শৃঙ্খলা রক্ষা করেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর খবর পেয়ে তুলসী শিবের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন। শিবনিন্দায় মুখর হয়ে ওঠেন তুলসী। স্বামীশোকে অন্ধ তুলসী রুদ্রদেবকে অভিশাপ দেন তুলসীপাতার কোনও অংশই শিবের উপাসনায় ব্যবহার করা যাবে না। শিবের পুজোর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও কিছুতেই তুলসীর সংযোগ রাখা চলবে না। সেই থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে শিবলিঙ্গ বা ভগবান শিবের মূর্তিতে তুলসীপাতা নিবেদন করা থেকে বিরত থাকেন ভক্তেরা। বেলপাতা দিয়ে মহাদেবের আরাধনা করা হয়।

Advertisement

অন্য দিকে, পার্বতী-পুত্র গণেশের আরাধনায়ও তুলসী নিষিদ্ধ। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী এক দিন তপস্যারত গণেশকে দেখে মন দিয়ে ফেলেন তুলসী। গজাননকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে বসেন তিনি। তুলসীর এই প্রস্তাবে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন গণেশ। পত্রপাঠ তুলসীর বিবাহপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এমনকি অভিশাপ দিতে বাধ্য হন গণেশ। পরে দেবতারা তাতে হস্তক্ষেপ করেন। দেবী তুলসীকে পবিত্র গাছে পরিণত করেন তাঁরা। এর পর থেকে গণেশের পুজোয় তুলসীর নৈবেদ্য গ্রহণ করা বন্ধ হয়ে যায়। গণপতির পুজোয় তুলসীর বদলে দূর্বাঘাস অর্পণ করার বিধি রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement