—প্রতীকী ছবি।
চন্দ্র পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌরজগতের পঞ্চম বৃহৎ উপগ্রহ। পৃথিবীর কাছের উপগ্রহ হল চন্দ্র। এই কারণেই পৃথিবীর উপর চন্দ্রের প্রভাব মারাত্মক। জ্যোতির্বিজ্ঞান মতে, চন্দ্র উপগ্রহ হলেও, জ্যোতিষশাস্ত্রে চন্দ্রকে গুরত্বপূর্ণ গ্রহের স্থান দেওয়া হয়। জন্মসময়ে আপনার চন্দ্রের অবস্থান কেমন ছিল সেই হিসাবে জন্মনক্ষত্র বিচার করা হয়। চন্দ্রের অবস্থানের উপর তিথি-নক্ষত্র গণনা করা হয়।
রাশিচক্রের চতুর্থ রাশি, অর্থাৎ কর্কট রাশি হল চন্দ্রের নিজক্ষেত্র। জন্মছকে চন্দ্রের অবস্থান ও পক্ষবল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নির্দিষ্ট ব্যক্তির উপর চন্দ্র শুভ বা অশুভ কেমন প্রভাব দান করবে তা উক্ত দু’টি জিনিসের উপর নির্ভর করে।
চন্দ্র মাতা পার্বতীর কারক। চন্দ্রের প্রভাব রয়েছে আমাদের মনের উপর। এ ছাড়া, চিন্তাশক্তি, কল্পনাশক্তি, বিষণ্ণতা, ঈর্ষাপরায়ণতা এবং মানসিক তৃপ্তি বা অতৃপ্তির কারণ হল চন্দ্র। যে কোনও কাজ শুরু করার আগে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। নচেৎ কাজটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পূর্ণ করা যায় না। সেই সঠিক সিদ্ধান্তটি নেওয়ার জন্য প্রয়োজন সুস্থ মনের। মনের সুস্থতা অথবা অসুস্থতা নির্ভর করে নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্মছকে চন্দ্রের শুভ বা অশুভ অবস্থানের উপর।
অমাবস্যার পর প্রতিপদ তিথি থেকে পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত চন্দ্রের ক্ষমতা ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। পূর্ণিমার পর চন্দ্রের ক্ষমতা ক্রমশ ক্ষীণ হতে থাকে, অমাবস্যায় পূর্ণ ক্ষীণ হয়।
যে কোনও ব্যক্তির জন্মছকে নির্দিষ্ট কোনও গ্রহের শুভ বা অশুভ অবস্থানের উপর উক্ত ব্যক্তির কোনও হাত থাকে না। অর্থাৎ, আপনার জন্মছকে কোন গ্রহ কী অবস্থানে থাকবে সেটা আপনি ঠিক করতে পারবেন না। তবে জন্মছকে থাকা অশুভ গ্রহের বাজে ফলদানের ক্ষমতা কমানো সম্ভব। তার জন্য পালন করতে হবে নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রতিকার।
চন্দ্রের দশা কালে, অর্থাৎ মহাদশা বা অন্তঃদশা কালে চন্দ্রের শুভ বা অশুভ ফলপ্রাপ্তি বৃদ্ধি পায়। এই সময়কালে চন্দ্রের প্রতিকার মেনে চলা (দান বা পুজো) বিশেষ প্রয়োজন। তবে চন্দ্র বা যে কোনও গ্রহ অশুভ হলে নিয়মিত পুজোপাঠ করলে তবেই শুভ ফলপ্রাপ্তি সম্ভব।
চন্দ্রের বিভিন্ন প্রতিকারের মধ্যে দেবী দুর্গার পুজো বিশেষ ফলদায়ী। শ্রাবণ মাসে শিব-পার্বতীর পুজো-আরাধনায় চন্দ্রের খারাপ ফল দানের ক্ষমতা কমানো সম্ভব। শ্রাবণ মাসের প্রত্যেক দিন সম্ভব না হলেও, অন্তত শ্রাবণের প্রত্যেক সোমবার শিব পার্বতীর পুজোয় বিশেষ শুভ ফলপ্রাপ্তি হয়।