এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের বারাণসী এবং কাসগঞ্জের গণধর্ষণের ঘটনার তদন্তের মধ্যেই আবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটল যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। এ বার ঘটনাস্থল রামপুর জেলা। বুধবার সকালে বছর এগারোর এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে মাঠ থেকে নগ্ন এবং অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে ধর্ষণের অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিল ওই কিশোরী। তার বাড়ির লোকেরা খোঁজাখুঁজি করছিলেন। কিন্তু কোথাও হদিস মেলেনি তার। বুধবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি মাঠের মধ্যে কিশোরীকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়েরা। তার শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। মুখে ভারী এবং ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। ফলে মুখে গভীর ক্ষত পাওয়া গিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয়েরাই কিশোরীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় মেরঠে স্থানান্তর করা হয়। পকসো আইনে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। সেই ফুটেজ দেখে অভিযুক্ত যুবককে চিহ্নিত করে পুলিশ। গ্রেফতার করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান ওই যুবক। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। সেই গুলি পায়ে লাগে অভিযুক্তের। অবশেষে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
মেরঠ হাসপাতালের চিকিৎসক অঞ্জু সিংহ এক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এটি স্পষ্ট ধর্ষণের ঘটনা। কিশোরীর যৌনাঙ্গের আঘাত থেকে অনুমান করা হচ্ছে এক জন বা তার বেশি লোক জড়িত থাকতে পারেন। কিশোরীর মুখে ভোঁতা জিনিস দিয়ে আঘাত করায় মুখ ফুলে গিয়েছে। অত্যন্ত আতঙ্কে রয়েছে কিশোরী।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ রকম ভয়ঙ্কর ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।’’
রামপুরের পুলিশ সুপার বিদ্যাসাগর মিশ্র জানিয়েছেন, কিশোরীর মা পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর কন্যা কথা বলতে পারে না, কানেও শোনে না। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক কিশোরীর সঙ্গে কথা বলছেন তার বাড়ির সামনে। তার পর তার সঙ্গে কিশোরীকে যেতে দেখা গিয়েছে।
গত ৪ এপ্রিল বারাণসীর গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ১০ এপ্রিল নিজের সংসদীয় কেন্দ্রে পৌঁছে খোঁজখবর নেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, তদন্ত নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এই ধরনের ঘটনা যাতে আগামী দিনে না ঘটে, সেই সতর্কবার্তাও দিয়ে গিয়েছিলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থার নির্দেশ দেন রাজ্য প্রশাসনকে। তার পাঁচ দিনের মধ্যেই ওই মামলার তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিককে সরিয়ে দেওয়া হয়। শুধু বারাণসীই নয়, তার পর পর কাসগঞ্জেও গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এক তরুণী তাঁর হবু স্বামীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হন।