প্রতীকী ছবি।
সোমবার সকাল থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না ৯ বছরের দিপু কুমারকে। খবর পাওয়ার পর থেকেই লুধিয়ানার দুগরিতে তন্ন তন্ন করে খোঁজ করতে শুরু করেছিল পুলিশ। পর দিনই দিপুর মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। ধুলো, ঝোপঝাড়ের মধ্যে মিশে পড়েছিল দিপুর দেহের ৬টা টুকরো। পাশে পড়েছিল কাটা মুন্ডুটাও। এই নৃশংস খুনের পিছনে কে রয়েছে তা খুঁজতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ দুঁদে অফিসারদের। মাথা কেটে, দেহ টুকরো করে শুধু খুনই করা হয়নি তাকে, খুনের পর তার মাংসও খুবলে খাওয়া হয়েছিল। জলের মতো পান করা হয়েছিল তার রক্তও! আর এত কিছুর পিছনে ছিল দিপুর চেয়ে মাত্র কয়েক বছরের বড় এক কিশোর। তারই পাড়াতুতো বন্ধু!
বিষয়টি সামনে আসার পর সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মানসিক চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত ওই কিশোর স্থানীয় স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। দিপুর প্রতিবেশী। সোমবার সকালে ঘুড়ির সুতো দেবে বলে দিপুকে সে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। সে সময় বাড়িতে কেউই ছিলেন না। বাথরুমে নিয়ে গিয়ে একটি ধারালো ছুরি দিয়ে দিপুকে খুন করে সে। তারপর দেহ থেকে মাথা আলাদা করা হয়। দেহের ৬টি টুকরো করে একটি প্ল্যাস্টিক ব্যাগে ঢুকিয়ে দূরে ঝোপঝাড়ের মধ্যে ফেলে দিয়ে আসে। তার আগে বাথরুমের মধ্যেই নাকি কিছুটা মাংস আর রক্ত খেয়ে নিয়েছিল বলে জেরায় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে। এমনকী টুকরোগুলো অন্যত্র পাচার করার রাস্তায় স্কুল পড়লে সেখানেও একটি অংশ ছুড়ে ফেলে দিয়ে যায়। স্কুলের উপরে রাগ মেটাতেই এমন কাজ সে করেছিল বলে পুলিশকে জানায়।
সে যে এমন করতে পারে তা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না প্রতিবেশীরা। ঘটনার দিনও তার মধ্যে কোনও রকম অস্বাভাবিকতা বা ভয় নজরে পড়েনি কারও। এমনকী তার বাবা পুলিশকে জানান, ওই দিন সে তাঁর জন্য রান্নাও করেছিল। তার ব্যবহার অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক ছিল। পাড়ায় দিপুর সঙ্গে তার ভাল বন্ধুত্ব হওয়ার কারণে প্রথম থেকেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল পুলিশ। কিন্তু এই বয়সের এমন ছেলে যে এই কাজ করতে পারে তা পুলিশও ভাবেনি। পরে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার দিন সকালে দিপুর সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা যায়। তার পরই সন্দেহ হওয়ায় তাকে চেপে ধরলে খুনের কথা স্বীকার করে নেয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দিপুর উপরে তার কোনও রকম রাগ ছিল না। মানসিক সমস্যা থেকেই সে এমন কাজ করেছে। বাড়িতে সে নাকি সুযোগ পেলেই মুরগির কাঁচা মাংস খেত। এমনকী নিজের আঙুলও খেত। তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সার্জিক্যাল স্ট্রাইক-ই কি সব অসুখ সারানোর জাদুবড়ি?