কাশ্মীরে গুলিযুদ্ধ, নিহত ১৮

গত কয়েক দিনে বাহিনীর উপরে একাধিক অতর্কিত হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্মীর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে খুন করেছে জঙ্গিরা। ফলে বেশ কিছু দিন ধরেই পাল্টা অভিযানের ছক কষছিল সেনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শোপিয়ান শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৫
Share:

রক্তপাত: শোপিয়ানের সংঘর্ষে আহতকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্রীনগরের হাসপাতালে। রবিবার।

কাশ্মীরে বড় ধরনের জঙ্গি দমন অভিযানে নামল সেনা। আজ তিনটি সংঘর্ষে নিহত হয়েছে ১৩ জন জঙ্গি। প্রাণ হারিয়েছেন তিন সেনাও। বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দুই স্থানীয় বাসিন্দাও। ভারতীয় বাহিনীর হাতে ‘নিরীহ কাশ্মীরি’দের মৃত্যুর কড়া সমালোচনা করেছে পাকিস্তান।

Advertisement

গত কয়েক দিনে বাহিনীর উপরে একাধিক অতর্কিত হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কর্মীর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে খুন করেছে জঙ্গিরা। ফলে বেশ কিছু দিন ধরেই পাল্টা অভিযানের ছক কষছিল সেনা। গত বছরে তরুণ সেনা অফিসার উমর ফইয়াজকে শোপিয়ানে বিয়েবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করেছিল জঙ্গিরা। এ দিনের অভিযানে তাঁর হত্যাকারীরাও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা।

গত কাল রাতে গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শোপিয়ানের দ্রাগড, কাছদুরা ও অনন্তনাগের দিয়ালগামে অভিযানে নামে যৌথ বাহিনী। দ্রাগড গ্রামে এক আইপিএস অফিসারের বাড়িতে লুকিয়ে ছিল হিজবুল মুজাহিদিন কম্যান্ডার জুবের তুরে ও তার সঙ্গীরা। জুবের হরিয়ানা ক্যাডারের ওই অফিসারের সম্পর্কিত ভাই বলে জানিয়েছে পুলিশ। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলার পাশাপাশি বাড়ির ১৪ জন বাসিন্দাকে বাইরে পাঠাতে বলে সেনা। কিছু ক্ষণ পরে বাসিন্দাদের বাইরে পাঠাতে রাজি হয় জঙ্গিরা। তার পরে অভিযানে নামে বাহিনী। শেষ পর্যন্ত সাত জন জঙ্গি নিহত হয়।

Advertisement

লেলিহান: গুলির লড়াই চলাকালীন আগুন ধরে যায় একটি বাড়িতে। রবিবার শোপিয়ানে।

কাছদুরাতে জঙ্গিরা জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের এক কনস্টেবলের বাড়িতে লুকিয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। সেখানেও তারা আত্মসমর্পণে রাজি না হওয়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়। পাঁচ জন হিজবুল জঙ্গির পাশাপাশি তিন সেনাও নিহত হন। সেনা জানিয়েছে, তাঁদের নাম হেতরাম, নীলেশ সিংহ ও অরবিন্দ্র কুমার।

দিয়ালগামে অবশ্য স্থানীয় এক লস্কর জঙ্গির পরিবারের সাহায্যে তাকে আত্মসমর্পণে রাজি করাতে পেরেছে বাহিনী। সংঘর্ষে নিহত হয়েছে দ্বিতীয় জন।

নিহত জঙ্গিদের মধ্যে জুবের তুরে ছাড়াও রইস ঠোকর নামে এক জঙ্গি কম্যান্ডার রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা। তিন বারই সংঘর্ষের সময়ে বাহিনীকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করে স্থানীয়দের একাংশ। বাহিনী-জনতা সংঘর্ষে দু’জন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা অন্তত ৭০। কাশ্মীরে সাম্প্রতিক অশান্তির সময়ে এত বড় জঙ্গি দমন অভিযান আর হয়নি বলে জানিয়েছে সেনা।

সংঘর্ষের সময়ে শ্রীনগর-বানিহাল রেল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। গোটা উপত্যকায় বন্ধ রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবাও।

ভারতীয় বাহিনীর হাতে ১১ জন ‘নিরীহ’ কাশ্মীরির মৃত্যুর কড়া সমালোচনা করেছে পাক বিদেশ মন্ত্রক। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, কাশ্মীরে এখনও ক্রমাগত দমনপীড়ন চালাচ্ছে ভারত।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন